1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভ্রমর ও ফুলের মধ্যে কী কথা হয়!

১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

ফুলের কুঁড়ির উপর ভ্রমর, মৌমাছির মতো পোকামাকড় যে পরাগায়ন প্রক্রিয়া চালায়, সেটা নতুন বিষয় নয়৷ এবার বিজ্ঞানীরা ফুল ও ভ্রমরের মধ্যে ‘কথোপকথন’-এর রহস্য কিছুটা হলেও ভেদ করেছেন৷

https://p.dw.com/p/3iQWR
ছবি: picture alliance/dpa/C. Gateau

ভ্রমর ও ফুলের মধ্যে নানা আদানপ্রদান চলে৷ আক্ষরিক অর্থেই পোকামাকড় ও ফুলের মধ্যে বিশেষ এক ধরনের আকর্ষণ কাজ করে৷ ভ্রমর কোনো ফুলের উপর নামলে পরাগ সঙ্গে সঙ্গে খাড়া হয়ে ওঠে এবং সূক্ষ্ম রোমগুলি জোরালোভাবে চেপে ধরে৷

ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোফেসর ডানিয়েল রোব্যার্ট ফুল ও পরাগবহনকারীদের মধ্যে এই ‘জাদুময় সংযোগ’ পরীক্ষা করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বেশ কিছুক্ষণ ধরে ফুলগাছগুলির দিকে তাকিয়ে থাকলে বোঝা যায় যে ভ্রমর মোটেই যে কোনো ফুলের উপর নামে না৷ বরং যে ফুলে সবে অন্য পোকা বসেছিল, সেটি এড়িয়ে চলে৷ অনেক সময় ধরে যে সব ফুলে কোনো অতিথি আসে নি, ভ্রমর সেগুলির খোঁজ করে৷ সে সব ফুল নেকটার বা মিষ্টি রসের আধার ভরার যথেষ্ট সময় পেয়েছে৷ আমার মনে হয়, ভ্রমর সেটা টের পায়৷’’

কোটি কোটি বছর ধরে পোকামাকড় ও ফুলের মধ্যে পরস্পরের জন্য লাভজনক এক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে৷ মৌমাছি ও ভ্রমর জাতীয় পোকা নেকটার ও পরাগ পায়৷ তার বদলে পোকাগুলি পরাগায়নের দায়িত্ব পালন করে৷ প্রোফেসর রোব্যার্ট বিষয়টির উপর আলোকপাত করে বলেন, ‘‘পরাগবহনকারীদের নিরাশ করার সাধ্য ফুলের নেই৷ সেটাই বাস্তব ঘটনা৷ তাহলে সেগুলি আর ফিরে আসবে না৷ অনেক শক্তি ক্ষয় করে ভ্রমরকে ফুলের উপর ওঠানামা করতে হয়, নেকটার খুঁজতে হয়৷ আপাতদৃষ্টিতে ফুল মুখের উপর বলে দিতে পারে না, ‘দেখো তোমার জন্য আমার কোনো নেকটার নেই!' ফুল এমনকি দ্রুত নিজের রং, গন্ধ অথবা আকার পরিবর্তন করে কোনো সংকেত দিতে পারে না৷ অতি বেগুনি রশ্মির প্রতিফলনও বদলাতে পারে না৷ আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, যে ফুল একটি মাত্র সূচক দ্রুত বদলাতে পারে, আর সেটা হলো নিজস্ব ইলেক্ট্রো-স্ট্যাটিক সম্ভাবনা৷’’

তাহলে কি ফুল বৈদ্যুতিক সংকেতের মাধ্যমে পোকাদের জানাতে পারে যে কুঁড়িতে নেকটার আছে কিনা? সেই সন্দেহ মেটাতে প্রোফেসর রোব্যার্ট সবার আগে ফুলের দিকে নজর দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ফুলের যে নেগেটিভ চার্জ রয়েছে, আমরা তা পরিমাপ করতে পেরেছি৷ ইলেকট্রনে পরিপূর্ণ মাটিতে গাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ আশেপাশের পরিবেশের তুলনায় ভূপৃষ্ঠেরও নেগেটিভ চার্জ রয়েছে৷ সেই ঋণাত্মক চার্জ মাটি থেকে ফুলে স্থানান্তরিত হয়৷ অর্থাৎ ফুলের চার্জ নেগেটিভ৷ অন্যদিকে ভ্রমর ওড়ার সময় ইলেকট্রন ‘ছড়িয়ে বেড়ায়’৷ বাতাসের সঙ্গে ঘর্ষণের কারণে এমনটা ঘটে৷ অর্থাৎ ভ্রমরের পজিটিভ চার্জ রয়েছে৷

ভ্রমর যে ইলেক্ট্রো স্ট্যাটিক ক্ষেত্র টের পায়, প্রোফেসর রবার্ট গবেষণাগারে তা প্রমাণ করতে পেরেছেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভ্রমরের কলোনিকে সেই পরীক্ষায় শামিল করা হয়েছিল৷

গবেষকরা অতি ক্ষুদ্র নেগেটিভ চার্জ তৈরি করে নেকটার-ভরা ফুলের নকল করেছিলেন৷ ভ্রমর এত সূক্ষ্ম তারতম্য সত্ত্বেও প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে৷

নিউরো বায়োলজিস্টরা এমনকি ফুল ও ভ্রমরের মধ্যে ‘কথোপকথন’ শ্রবণযোগ্য করে তুলতে পারেন৷

ইয়ুলিয়া শোয়েন/এসবি