ভ্যাট প্রত্যাহার: শিক্ষার্থীদের আন্দোলন রূপ নিল বিজয় উল্লাসে
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫সোমবার দুপুরের পর মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসাইন ভুঁইঞা সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘‘অর্থমন্ত্রী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর – মূসক) নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করেছেন৷ প্রধানমন্ত্রী ভ্যাট প্রত্যাহারে অর্থমন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন৷''
এদিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা শাহেদুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘‘চলতি অর্থবছরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওপর আরোপিত সাড়ে সাত শতাংশ মূসক প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷''
এরপর আধা ঘণ্টা পর এনবিআর-এর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন৷ ওদিকে ‘নো ভ্যাট অন এডুকেশন' আন্দোলনের পঞ্চম দিন, মানে সোমবার সকাল থেকেই রামপুরা-বাড্ডা, গুলশান, উত্তরা, কাকলিতে ও ধানমন্ডিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা৷ তবে দুপুরের পর ভ্যাট প্রত্যাহার হচ্ছে এই খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান করেই উল্লাস প্রকাশ করে৷ বিকেলে ভ্যাট প্রত্যাহারের চূড়ান্ত ঘেষণা আসলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়, শুরু করে বিজয় উল্লাস৷
ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণায় ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস-এর আন্দেলনরত ছাত্রদের একজন নাজমুল হাসান শান্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা আনন্দিত৷ আমাদের আন্দোলন সফল হয়েছে৷ তিনি আরো বলেন, ‘‘এই চিন্তা ঠিক নয় যে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু বিত্তবানদের সন্তানরাই লেখাপড়া করে৷ এখানে অনেক মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরাও লেখা পড়া করে৷''
‘নো ভ্যাট অন এডুকেশন' আন্দোলরে নেতা ফারহান হাবীব ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ভ্যাট প্রত্যাহারের মাধ্যমে সরকার বেসরকারি পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষার পথ সুগম করলো৷ এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই৷''
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মালিক সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই সরকার যে শিক্ষাদরদী তা ভ্যাট প্রত্যাহারের মাধ্যমে আবারো প্রমাণ করলো৷''
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ৮৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে চার লাখের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে৷ চলতি বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি-র ওপর শতকরা সাড়ে সাত ভাগ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছিল৷