ভোট এলেই গুরুত্ব পান ছৌ-মুখোশ শিল্পীরা
পুরুলিয়ার ছৌ নাচের সঙ্গে, তার মুখোশের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক দীর্ঘ ঐতিহ্য। শারীরিক কসরত, লোককথা, বাজনা, জমকালো মুখোশ অনবদ্যভাবে মিশে যায় এই নাচে।
চড়িদা গ্রাম
পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডিতে অযোধ্যা পাহাড়ের কাছে একটি গ্রাম হলো চড়িদা। তাকে বলা হয় মুখোশ গ্রাম। ছৌ নাচের মুখোশ তৈরি হয় এখানে। শ-খানেক পরিবারের বাস। তাদের অনেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম মুখোশ তৈরি করে যাচ্ছেন।
ছৌ নাচের মুখোশ
চড়িদার আসল খ্যাতি ছৌ নাচের মুখোশ তৈরির জন্য। রঙিন, জমকালো মুখোশ। এই মুখোশ ছাড়া ছৌ নাচ হয় না। এই মুখোশ ও জমকালো পোশাক পরে ছৌ শিল্পীরা কখনো বিভিন্ন দেবতার ভূমিকায়, কখনো বা লোককথার কোনো নায়কের ভূমিকায় নাচেন।
ঘর সাজানোর মুখোশও
এখন সেখানে শুধু ছৌ নাচের মুখোশই নয়, ঘর সাজানোর মুখোশও তৈরি হয়। নানা ধরনের মুখোশ শিল্পীরা তৈরি করেন অনায়াস দক্ষতায়।
মুখোশ তৈরি
প্রথমে ছাঁচের উপর মাটি দেয়া হয়। তা শুকিয়ে নিয়ে ছাঁচ থেকে আলাদা করে অনেকগুলি স্তরে কাগজ লাগানো হয়। তারপর তা পালিশ করে, রঙ লাগানো হয়। তারপর হয় অলঙ্করণ। শেষে তা চকচকে করা হয়। চোখে ফুটো করা হয়, যাতে যিনি নাচবেন, তিনি দেখতে পান।
ছৌ শিল্পীরা
ছৌ নাচ আসলে আদিবাসীদের যুদ্ধের নাচ, উৎসবের নাচ। এই নাচের উৎপত্তি পুরুলিয়ায়। পরে ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায় তা বিস্তার লাভ করে। তবে সেখানে নাচের ধরণ কিছুটা আলাদা।
গরিব শিল্পীরা
পুরুলিয়া জেলা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম গরিব জেলা। আর আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত ছৌ শিল্পীরাও খুব গরিব। অনেক লড়াই করে তারা বাঁচিয়ে রেখেছেন তাদের এই ঐতিহ্য। মূলত বৈশাখ ও জৈষ্ঠ্য পুরুলিয়া সহ বাংলার গ্রামে ছৌ নাচ হয়। এই ছৌ নাচের আসর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং বিদেশেও বসে।
ভোট এলে
পশ্চিমবঙ্গে ভোট এলে রাজনৈতিক দলের নজরে পড়ে ছৌ নাচ ও মুখোশ শিল্পীরা। তাদের জন্য অনেক প্রতিশ্রুতি দেয় রাজনৈতিক দলগুলি। তৃণমূলের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছৌ নাচের শিল্পীদের মাসিক বৃত্তির ব্যবস্থা করেছে।
সেই ট্র্যাডিশন
আবার ভোট এসেছে। আবার ছৌ শিল্পীদের উপর নজর পড়েছে রাজনৈতিক দলের। শুরু প্রতিশ্রুতির বন্যাও।