1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রোবায়োটিক্স ব্যবহারে সচেতনতা

২৬ নভেম্বর ২০১৯

বাঙালি মানেই কোনো-না-কোনো পেটের অসুখে ভোগে – এমন একটা ধারণা চালু আছে৷ পেটের চিকিৎসার জন্য প্রোবায়োটিক্সের ব্যবহার বাড়ছে৷ তবে কিছু গবেষণা অনুযায়ী, এর বেলাগাম প্রয়োগ উলটে মানুষের ক্ষতি করতে পারে৷

https://p.dw.com/p/3TjU5
ছবি: picture-alliance/dpa

প্রজননের মাধ্যমে ল্যাবে ল্যাকটো ও বিফিডো প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি করা হয়েছে৷ গত কয়েক বছরে সেগুলি বিপুল বাণিজ্যিক সাফল্য পেয়েছে৷ ‘প্রোবায়োটিক্স’ সংজ্ঞার ছত্রছায়ায় এগুলি ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম ও আন্ত্রিক প্রদাহের মোকাবিলা করতে বিক্রি করা হচ্ছে৷ এমনকি অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসার পর আন্ত্রিক প্রণালী সাফ করতেও এগুলি কাজে লাগানো হচ্ছে৷

কয়েক ধরনের দইয়ের মধ্যেও এগুলি মিশিয়ে আরো স্বাস্থ্যকর হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে৷ কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে, প্রোবায়োটিক্সের প্রভাব কখনো একেবারে বিপরীত হতে পারে৷ এগুলি পেট ফুলে ওঠা বা পেটের ব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে – এমনকি একাগ্রতায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে৷ ড. স্ভেন গেয়র্গি নতুন এই গবেষণাকে স্বাগত জানাচ্ছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এই গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ, এর ফলে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, নির্বিচারে প্রোবায়োটিক্স খাবার পরিণতি একেবারেই খাটো করে দেখা উচিত নয়৷ অর্থাৎ, এগুলি শুধু স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়, বরং কিছু ক্ষেত্রে এমনকি স্বাস্থ্যের ক্ষতিও করতে পারে৷ একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রোবায়োটিক্স খাওয়ার ফলে মানুষের মধ্যে মানসিক সমস্যা বেড়েছে৷ আমার মতে, এর ফলে এমন সব কৃত্রিম উপাদানের ক্ষেত্রে আরো সতর্ক থাকা উচিত৷’’

কোলন বা মলাশয়ে পৌঁছে প্রোবায়োটিক্স তার প্রভাব খাটাতে পারে বলে দাবি করা হয়৷ সেখানে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া হজম প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে৷ প্রোবায়োটিক্স নাকি সেগুলির সহায়তা করে৷ কিন্তু একটি গবেষণা অনুযায়ী, সেগুলি মোটেই কোলনে বাসা বাঁধে না৷ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবীর কোলনের মধ্যে প্রোবায়োটিক্সের অস্তিত্বেরই প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷

এমন ফলাফল যথেষ্ট উদ্বেগজনক৷ কিন্তু বাস্তবে এর পরিণতি কী হতে পারে? এতকাল শুধু সাবধানতাবসত প্রোবায়োটিক্সের রোগীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা চালানো হতো৷ এখন সেটা সত্যি প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে৷ গত ৮ মাস ধরে ভল্ফগাং গসো কোলনের চিকিৎসার জন্য প্রোবায়োটিক্স গ্রহণ করছেন৷

প্রোবায়োটিক্স আসলে চিকিৎসার একটি অংশমাত্র৷ একই সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনও অত্যন্ত জরুরি৷ ড. গেয়র্গি সমস্যা অনুযায়ী, প্রত্যেক রোগীর জন্য আলাদা উপাদান ব্যবহার করেন৷ তাঁর মতে, ‘‘আমি আমার রোগীদের জন্য প্রেক্ষাপট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রোবায়োটিক্স কাজে লাগিয়ে প্রভাব খতিয়ে দেখি৷ কোন ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক্স দেওয়া হয় আর কখন দেওয়া হয় না, তার নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে৷ কাজে লাগলে, উপকার পেলে সীমিত সময়ের জন্য তা চালিয়ে যাওয়া অবশ্যই যুক্তিযুক্ত৷ আমাদের এখানে সর্বদা ডাক্তার গোটা প্রক্রিয়ার উপর নজর রাখেন৷ উপকার না হলে, অথবা শরীর আরো খারাপ হলে আবার বন্ধ করার পরামর্শ দেওয়া হয়৷’’

চিকিৎসায় কাজ হওয়ায় ভল্ফগাং গসো খুব খুশি৷ নিরাময়ের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে তিনি নিশ্চিত৷ তবে তাঁকে খাদ্যাভ্যাসের আমূল পরিবর্তন করতে হয়েছে৷ আগে তিনি সাধারণ খাবার খেতেন৷ এখন অনেক বেশি শাকসবজি ও সালাদ খেতে হচ্ছে৷ তার মধ্যেও রাডিকো ও চিকোরির মতে তিতা উপাদান বেশি রাখতে হয়৷ বেরির মতো কম শর্করা রয়েছে, শুধু এমন ফলমূলই খান তিনি৷ ভল্ফগাং বলেন, ‘‘বেশ কয়েক বছর আগেও একবার প্রোবায়োটিক্স ছাড়াই খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের চেষ্টা করেছিলাম৷ তবে এখনকার মতো উপকার হয়নি৷ আমার মতে, প্রোবায়োটিক্স চিকিৎসার সঙ্গে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের সঠিক মেলবন্ধন৷’’

এক সপ্তাহ পর তিনি ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে ও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রোবায়োটিক্স ছেড়ে দেবার প্রক্রিয়া শুরু করবেন৷

আংগেলিকা ভ্যোর্টম্যুলার/এসবি