1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপ আফগানিস্তান, আরো সাহায্য চায় তালেবান

২৫ জুন ২০২২

আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে শনিবার অত্যাবশ্যকীয় চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছানো শুরু হয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে তালেবান সরকার আন্তর্জাতিক মহলে আরো সাহায্য চেয়ে আবেদন জানিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/4DEuy
আফগানিস্তানের গায়ান জেলা ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত৷
আফগানিস্তানের গায়ান জেলা ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত৷ছবি: AFP/Getty Images

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ১৫০ জন হয়েছে৷  তবে মাটির তৈরি ঘরে চাপা পড়ে আরো অনেকের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা রয়ছে৷ ভূমিকম্প বিধ্বস্ত অঞ্চলে বেঁচে থাকাদের অবস্থাও ভালো নয়৷ পাকটিকা প্রদেশে এএফপির প্রতিনিধিকে একুশ বছরের জাইতুল্লা ধুরজিওয়াল বলেন, ‘‘কম্বল, তাঁবু–ন্যূনতম আশ্রয়টুকুও নেই৷ সুপেয় পানির সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে৷ একবিন্দুও খাবার নেই৷''

কাবুল থেকে ১৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে শুক্রবারের আফটারশক বা ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পনে আরো পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স৷ এর ফলে আহতদের সাহায্য করার প্রক্রিয়ায় আরো বাধা তৈরি হয়েছে৷

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত প্রদেশ পাকটিকা৷ সেখানকার এক হাসপাতালের ম্যানেজার আবরার বলেন, ‘‘যে সব ব্যক্তিরা গুরুতর আহত এবং যাদের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন, তাদের কাবুলে পাঠানো হয়েছে৷ কারণ আমরা এখানে এই কাজ করতে পারছি না৷''

স্থানীয়দের বর্ণনায় আফগানিস্তানের ভূমিকম্প

পাকটিকা প্রদেশে তালেবান সরকারের মুখপাত্র মোহাম্মদ আমিন হোজিফা বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত মানবিক সংস্থাকে জনগণকে সাহায্য করার আহ্বান জানাই৷''

ভূমিকম্প থেকে বেঁচে গিয়েছেন পাকটিকা প্রদেশের গায়ান জেলার বাসিন্দা দাওলত খান৷ তিনি বলেন, ‘‘পরিবারের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছে এবং বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে৷ ভূমিকম্পের ফলে অনেক সমস্যা হচ্ছে৷ আমাদের সব ধরনের সমর্থন প্রয়োজন৷ আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলি এবং আমাদের আফগানদের যারা সাহায্য করতে পারেন তাদের সবার কাছে অনুরোধ করছি সাহায্য করতে এগিয়ে আসুন৷''

শনিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে প্রায় ৭৫ লাখ ডলার মূল্যের মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে তারা৷ এছাড়াও ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য তাঁবু, তোয়ালে, বিছানাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ পাঠাচ্ছে তারা৷ পাশে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানও৷ পাকিস্তানের একটি পণ্যবাহী বিমানে প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় তাঁবু, খাবার ও চিকিৎসা সরবরাহ পাঠানো হয়েছে, জানিয়েছে খোস্ত বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ৷

সংবাদসংস্থা এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাবুলে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মনসুর আহমেদ খান জানিয়েছেন, ‘‘শনিবার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে৷ তালেবান কর্মকর্তাদের কাছে সেগুলি হস্তান্তর করা হয়েছে৷ এই কঠিন সময়ে আমাদের আফগান ভাইদের সাহায্য করা আমাদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে৷''

পাকিস্তান থেকে ১৯ সদস্যের একটি স্বাস্থ্যকর্মীর দল আফগানিস্তানে বিপর্যস্ত মানুষদের সাহায্য করছে৷ কর্মকর্তারা শনিবার জানিয়েছেন, পাকিস্তান তাদের উত্তর সীমান্ত খুলে দিয়েছে যাতে গুরুতর আহত আফগান নাগরিকদের হাসপাতালে এনে চিকিৎসা করা যায়৷ তবে কতজন আফগান সেখানে এসেছেন তা স্পষ্ট নয়৷

একটি আফগান সামরিক হেলিকপ্টারে গায়ান এলাকায় খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করা হচ্ছে৷ মারাত্মক গরমের মধ্যে অসংখ্য পুরুষ ও শিশুদের খাবার এবং পানির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে৷ আফগানিস্তানে প্রায় এক হাজার পরিবারকে খাবার, তাঁবুসহ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের কথা জানিয়েছে রেড ক্রিসেন্ট৷

আফগানিস্তান: ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন অনেকে

যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল আফগানিস্তানের খোস্ত শহর থেকে ৪৪ কিলোমিটার দূরে৷ মাটির নীচে ৫১ কিলোমিটার গভীরে কম্পন হয়৷ রিখটার স্কেলে তার মাত্রা ছিল ছয় দশমিক এক৷

হেলিকপ্টার নিয়ে গিয়ে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে কম্পনবিধ্বস্ত এলাকায়, তবে এখনো সর্বত্র পৌঁছানো সম্ভব হয়নি৷ ২০০২ সালের পর এটাই আফগানিস্তানে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প৷ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বিপুল৷

আরকেসি/এফএস (এপি, রয়টার্স)