1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভাল্লুক বাঁচাও প্রকল্প

৭ ডিসেম্বর ২০১৬

ভাল্লুকের গল ব্লাডার থেকে নেওয়া বাইল চীনা ভেষজ শাস্ত্রে একটি ওষুধ৷ ভাল্লুকগুলোকে অতি ছোট খাঁচায় রেখে কয়েকদিন অন্তর তাদের পিত্তাশয়ে সিরিঞ্জ ঢুকিয়ে পাচক রস বার করা হয়৷ লাওসে এই অমানুষিক প্রথার অন্ত ঘটানোর চেষ্টা চলেছে৷

https://p.dw.com/p/2TsKj
Vietnam Wildtierschutz NGO Animals Asia
ভিয়েতনামে খাঁচায় বন্দি ভাল্লুকছবি: DW/A. Wick

ভাল্লুকের গল ব্লাডার থেকে তৈরি ওষুধ

স্ট্রবেরি মার্মালেড পেলে আর কুং-ফু-কে থামানো যায় না! কুং-ফু হলো এই ভাল্লুক-বাঁচাও-কেন্দ্রের সবচেয়ে কচি বাসিন্দা৷ বয়স মাত্র চার মাস৷ বেআইনিভাবে যারা পশুপাখি বেচে-কেনে, তাদের কাছ থেকে এই খোকা ভাল্লুকটিকে যখন বাজেয়াপ্ত করা হয়, তখন তার অবস্থা ছিল খুবই নাজুক৷ ফাতং ইয়াং তাকে খাইয়ে-দাইয়ে আবার সুস্থ করে তুলেছেন৷

‘ফ্রি দ্য বেয়ার্স’ বা ‘ভাল্লুকদের-মুক্ত-করো’ সংগঠনের পশুপ্রেমীরা এ-বছর কুং-ফু ছাড়া আরো তিনটি বাচ্চা ভাল্লুককে উদ্ধার করেছেন৷ ভাল্লুকদের দেখাশোনা করেন ফাতং ইয়াং৷ তিনি বলেন, ‘‘সাধারণত বাচ্চা ভাল্লুকরা তাদের জীবনের প্রথম তিন বছর মায়ের সঙ্গে কাটায়৷ কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মায়েদের মেরে ফেলে বাচ্চা ভাল্লুকগুলোকে অতি খারাপ অবস্থায় রাখা হয়৷ কুং-ফু-র ভাই বন্দিদশাতেই মারা গেছে, সম্ভবত না খেতে পেয়ে৷ ভাল্লুকদের জন্যে একটা মারাত্মক অভিজ্ঞতা৷’’

একটি প্রাপ্তবয়স্ক এশিয়াটিক ব্ল্যাক বেয়ার প্রায় দু'মিটার লম্বা হয়, ওজন হয় ১৫০ কিলো৷

অমানুষিক

ভাল্লুক সুরক্ষা কেন্দ্রটি লাওসের উত্তরে, একটি সুবিখ্যাত জলপ্রপাতের কাছে৷ যে সব টুরিস্ট জলপ্রপাত দেখতে আসেন, তারা একবার ভাল্লুকদের এনক্লোজারটাও ঘুরে আসেন৷ লিউক নিকলসন টুরিস্টদের বোঝান, ভাল্লুকদের পিত্তাশয় থেকে নেওয়া পাচক রস কীভাবে চীনের প্রথাগত ভেষজ শাস্ত্রে ওষধি বলে গণ্য হয় আর বিপুল দামে বিক্রি হয়৷

‘ফ্রি দ্য বেয়ার্স' সংগঠনের লিউক নিসলসন জানালেন, ‘‘ভাল্লুকের গল ব্লাডার থেকে বাইল নেওয়ার খামারগুলোয় ভাল্লুকদের অতি ছোট খাঁচায় রাখা হয়; ভাল্লুকরা নিজেরা যতো বড়, প্রায় সেইরকম ছোট৷ এভাবে তারা বিশ বছর অবধি বাঁচে ও নিয়মিতভাবে সিরিঞ্জ দিয়ে তাদের পিত্তাশয় থেকে পাচক রস বার করে নেওয়া হয়৷ কল্পনা করুন, প্রতি কয়েকদিন অন্তর তাদের এই অত্যাচার সহ্য করতে হয়, অথচ তাদের খেতে দেওয়া হয় অতি সামান্য৷’’

‘উর্সুস থিবেটানুস'

পরিবেশ সচেতনতা ছাড়া প্রাণিবৈচিত্র্যের জন্য সংগ্রাম করা সম্ভব নয়৷ সেজন্য স্কুলের ছেলেমেয়েদের নিয়মিতভাবে ভাল্লুক সুরক্ষা কেন্দ্রে আনা হয়৷ ‘উর্সুস থিবেটানুস’ বা এশিয়ান ব্ল্যাক বেয়ার যে তাদের দেশেও আছে, লাওসের জঙ্গলে ঘোরাফেরা করছে, ছেলেমেয়েদের অনেকেই সেকথা জানে না৷ ফাতং ইয়াং বলেন, ‘‘বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে আমাদের আরো অনেক বেশি প্রচার করা প্রয়োজন, কেননা সেখানে বন্যজন্তু শিকার প্রায় দৈনন্দিন ব্যাপার৷ শিশুদের বুঝতে হবে যে, ভাল্লুকরা বিশেষভাবে বিপন্ন, তারা শীঘ্রই গোটা লাওস থেকে উধাও হয়ে যেতে পারে৷’’

ভাল্লুকপ্রেমীদের কাজ চলে বিদেশি দাতাদের বদান্যতায়৷ ভাল্লুকদের এই মুক্তাঙ্গণে আপাতত ৩৮টি ভাল্লুক রয়েছে, যদিও এনক্লোজারটি পরিকল্পনা করা হয়েছিল দশটি ভাল্লুকের জন্য৷ অপরদিকে ভাল্লুকদের বনেজঙ্গলে ছেড়ে দেওয়াটা মানুষের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে, কেননা এই ভাল্লুকরা আর মানুষকে ভয় করে না৷

লুয়াং প্রাবাং থেকে গাড়িতে প্রায় এক ঘণ্টা দূরে ‘ফ্রি দ্য বেয়ার্স’ সংগঠন ভাল্লুকদের জন্য আরো বড় একটি এনক্লোজারের পরিকল্পনা করছে৷ এই আবাস হবে ২৬ হেক্টার চাষের জমি নিয়ে৷ প্রকল্পের খরচ হবে বিরাট, কিন্তু এখানে মোট দেড়শ' ভাল্লুক থাকতে পারবে৷ তার প্রয়োজনও পড়বে, কেননা লাওস সরকার অবশেষে ভাল্লুকদের গল ব্লাডার থেকে বাইল বার করার নারকীয় খামারগুলি বন্ধ করে দেবার কথা ভাবছেন৷

প্রতিবেদন: মিশায়েল আল্টেনহেনে/এসি

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান