1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ভালো খবর’ দিতে অসাধারণ তথ্যভাণ্ডার

১১ নভেম্বর ২০১৯

পৃথিবীর ভবিষ্যৎ অন্ধকার – নানা কারণেই অনেক মানুষের আজ এমন ধারণা হয়েছে৷ সংবাদমাধ্যম সেই বিশ্বাসকে আরও জোরালো করে তোলে৷ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এর বিপরীতটাই তুলে ধরার চেষ্টা করছেন৷

https://p.dw.com/p/3Sod9
গবেষকদের মতে, বিশ্বজুড়ে হতাশার পেছনে সংবাদমাধ্যম ও তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতাই দায়ীছবি: Getty Images/AFP/A. Shazly

অক্সফোর্ডের প্রসঙ্গ এলেই অতীত যুগে যেন ডুব দিতে হয়৷ ব্রিটেনের এই বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির অন্যতম৷ আলব্যার্ট আইনস্টাইন ও স্টিফেন হকিং-এর মতো অনেক বিখ্যাত মানুষ সেখানে পড়াশোনা অথবা গবেষণা করেছেন, শিক্ষকতাও করেছেন৷

নতুন জ্ঞান সৃষ্টি, ভিন্ন ধারায় ভাবনাচিন্তা, প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করাই অক্সফোর্ডের ঐতিহ্য৷ হানা রিচি-ও সেই ধারা বজায় রেখেছেন৷ মাত্র ২৫ বছরেই তিনি পরিবেশবিজ্ঞানে ডক্টরেট করেছেন৷ তিনি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে জগতের বিশ্লেষণ করেন৷ হানা বলেন, ‘‘জগত যেমন, পৃথিবীকে সেভাবে তুলে ধরাই আমাদের কাজের লক্ষ্য৷ আমার মতে, মানুষের কল্যাণে যে সব বিকাশ হয়েছে, কাকতালীয়ভাবে তার বেশিরভাগই ইতিবাচক৷’’

ইতিবাচক ভবিষ্যতের চিত্র

অক্সফোর্ডের মার্টিন স্কুলে হানা রিচি-র দপ্তরে এই ‘ইতিবাচক’ শব্দটি সর্বত্র টের পাওয়া যায়৷ আট বছর ধরে হানা ও তাঁর সহকর্মীরা জগতের কল্যাণের লক্ষ্যে গবেষণা করে চলেছেন৷ তাঁরা দীর্ঘমেয়াদী ইতিবাচক প্রবণতা সবার জন্য সহজ করে তুলে ধরতে চান৷ যেমন বিশ্বজুড়ে মানুষের গড় আয়ু অথবা শিশুমৃত্যুর হার কতটা বদলেছে? ‘আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা’ নামের এক তথ্যভাণ্ডারে সেই সব বিষয় স্থান পেয়েছে৷ হানা রিচি মনে করেন, ‘‘আমার মতে, গবেষকদের কাছে মানুষের অনেক প্রশ্নের জবাব রয়েছে৷ তাঁরা প্রতিদিন এই সব বিষয় চর্চা করেন৷ সেই তথ্যও রয়েছে৷ কিন্তু সে সব কঠিন অ্যাকাডেমিক পেপারের মধ্যে আবদ্ধ রয়েছে৷ এমন জটিল তথ্যভাণ্ডারের নাগাল পাওয়া কঠিন৷ আমরা অ্যাকাডেমিক গবেষণা বা প্রকাশনা এবং জাতিসংঘ বা বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক তথ্য সবার জন্য সহজ করে তোলার চেষ্টা করি৷’’

সুইডেনের চিকিৎসক ও অধ্যাপক হান্স রোসলিং মনে করতেন, পৃথিবী আসলে উন্নতির জায়গা এবং মানুষ সব সময়ে ভালো কিছু সৃষ্টি করে চলেছে৷ সুযোগ পেলেই তিনি বলতেন, ‘‘দেখো, পৃথিবীটা আরও ভালো হয়ে উঠছে৷’’ রোসলিং এক ভাষণে বলেন, ‘‘আপনাদের কাছে আমার বিনীত পরামর্শ, সবকিছুর পাশাপাশি চারিদিকের তথ্য-উপাত্তের দিকে নজর দিন৷ নিঃসন্দেহে আমাদের সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জ রয়েছে৷ তবে ভালো খবর হলো, ভবিষ্যৎ মোটেই তেমন অন্ধকার নয়৷ আপনাদের মধ্যে অনেকে ভাবতে না পারলেও মানবজাতির অবস্থা অনেক ভালো৷’’

সত্যি হাতে গোনা কিছু মানুষ ছাড়া কেউই পৃথিবীতে ইতিবাচক কিছু দেখেন না৷ ১৭টি দেশে চালানো জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মনে করেন, জগতে মূলত নেতিবাচক পরিবর্তন ঘটে চলেছে৷ হান্স রোসলিং ও অক্সফোর্ডের গবেষকদের মতে, বিশ্বজুড়ে এই হতাশার পেছনে সংবাদ মাধ্যম ও তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতাই দায়ী৷ তাদের কাছে ‘ওনলি ব্যাড নিউজ আর গুড নিউজ’৷ সন্ত্রাস, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্ঘটনা – মিডিয়া সব সময়ে প্রলয়ের এক খণ্ডচিত্র তুলে ধরার ব্রত নিয়েছে৷ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হানা রিচি বলেন, ‘‘মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমরা জানতে চাই এই মুহূর্তে কী ঘটছে৷ এমনকি দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি রাখার চেষ্টা করলেও আমি নিজেও এই তাড়নায় ভুগি৷ কোথায় কী ঘটছে জানতে চেয়ে আমিও বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলির প্রতি আকর্ষণ অনুভব করি৷ তাই মনে হয় না, এই সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান সম্ভব৷ তবে উভয় দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে দেখতে পারি, সেগুলির মধ্যে কেমন সামঞ্জস্য হচ্ছে৷’’

হান্স রোসলিং এই মনোভাবকে ‘মানবজাতির উন্নতির নীরব বিস্ময়’ হিসেবে বর্ণনা করতেন৷ বর্তমানে অক্সফোর্ডে সেই বিষয়েই গবেষণা চলছে৷ যত বেশি সম্ভব মানুষের মধ্যে এমন ভাবনা জাগিয়ে তোলার আশা করেন তাঁরা৷ ইতিবাচক ও সুন্দর বিষয়গুলি যেন মনের জানালা থেকে সরে না যায়৷

কিলিয়ান শ্যুৎসে/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য