1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রক্তদান, জীবনদান

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি১৬ জুন ২০১৩

রক্তদানের প্রতি মানুষের সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর ১৪ই জুন পালিত হয় বিশ্ব রক্তদান দিবস হিসেবে৷ রক্তদানে ভয়ের কিছু নেই৷ এক মহৎ কাজ হিসেবে রক্তদান মানুষের প্রতি, সমাজের প্রতি এক সহমর্মিতার প্রকাশ৷ তাই রক্তদান মানে জীবনদান৷

https://p.dw.com/p/18qVv
ছবি: DW Hindi-Metali Listeners Club

রক্তপ্রবাহ প্রতিনিয়ত মানবদেহে জোগায় পুষ্টি উপাদান, অক্সিজেন, প্রোটিন৷ অপসারিত করে দূষিত পদার্থ৷ মানবদেহে থাকে গড়ে পাঁচ লিটার বা এক গ্যালনের বেশি রক্ত৷ এর অর্ধেক হলো প্লাজমা, যাতে থাকে প্রোটিন, যা রক্তকে জমাট বাঁধতে সাহায্য করে৷ থাকে গ্লুকোজ ও অন্যান্য দ্রবীভূত পুষ্টি উপাদান৷ তরল রক্তে অসংখ্য সেল ও প্রোটিন থাকে বলে জলের চেয়ে রক্ত ঘন হয়৷

দুমাস অন্তর রক্ত দেয়া যায়৷ রক্ত দিতে সময় লাগে মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিট৷ রক্ত নেবার আগে দাতার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়৷ দেখা হয় দেহের তাপমাত্রা, রক্তচাপ, নাড়ির গতি এবং হিমোগ্লোবিন৷ একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ১০ ইউনিট রক্ত দিতে পারে৷ রক্ত নিতে জীবাণুমুক্ত সিরিঞ্জ ব্যবহার করা হয়৷ একবার ব্যবহারের পর তা ফেলে দেয়া হয়৷

রক্তের সেলের মধ্যে অর্ধেকটা হলো রেড ব্লাড সেল, যা অক্সিজেন সরবরাহ করে টিস্যুতে৷ হোয়াইট ব্লাড সেল রক্তের সংক্রমণ রোধ করে৷ রক্ত সংগ্রহের পর তা পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক৷ রক্ত পরীক্ষা করে দেখা হয় তাতে কোনো রকম ভাইরাস আছে কিনা৷ যেমন এইচআইভি বা হেপাটাইটিস-বি, সি, ম্যালেরিয়া, সিফিলিসের মত সংক্রামক রোগের ভাইরাস আছে কিনা৷ যদি থাকে তাহলে সেই রক্ত বাতিল করা হয়৷

Bahrain Blutspende Unruhen Manama
রক্তদান মানে জীবনদানছবি: AP

সংক্রমণমুক্ত রক্ত বিভিন্নভাগে ভাগ করা হয়৷ যেমন, লোহিত কণিকা, শ্বেত কণিকা এবং ব্লাডলেটস অনুসারে ভাগ করে বিভিন্ন রোগীকে তা দেয়া হয়৷ এক ইউনিট রক্ত দিলে তিনজনের জীবন বাঁচানো যায়৷ রক্তদাতার রক্তে কোনো সংক্রমণ থাকলে তাও ধরা পড়ে এবং সেইমতো চিকিৎসার পরামর্শ দেয়া হয়৷

ভারতে রক্তদাতাদের ৯০ শতাংশ পুরুষ এবং মাত্র ৬ থেকে ১০ শতাংশ মহিলা৷ ভারতের মতো দেশে মহিলাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকে৷ তাঁরা রক্তাল্পতায় ভোগে বেশি৷ তাই সুস্থ রেড ব্লাড সেল যথেষ্ট পরিমাণে নেই৷ হিমোগ্লোবিন কম থাকার কারণ প্রোটিন ও আয়রণের অভাব৷ ঋতুকালীন সময়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়াও একটা কারণ৷ রক্তাল্পতা এটা শুধু নিম্নবিত্তদের মধ্যেই যে দেখা যায়, তা নয়, মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তদের মধ্যেও দেখা যায়৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, কোনো দেশের রক্তের চাহিদা থাকে সেই দেশের মোট জনসংখ্যার এক শতাংশ৷ অনেক দেশে চাহিদা অনুযায়ী সুস্থ রক্তের জোগান কম৷ এটা একটা বড় সমস্যা বটে৷ ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ২০১২ সালের হিসেব অনুযায়ী ভারতে বেসরকারি ব্লাড ব্যাংকের সংখ্যা ১,৫৬৪ এবং সরকারি ব্লাড ব্যাংকের সংখ্যা ৯৮১৷ এছাড়া লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্লাড ব্যাংকের সংখ্যা হবে আড়াই হাজারের মতো৷

প্রতি দু'সেকেন্ডে কারো না কারোর রক্ত দরকার হয়৷ বছরে চার কোটি ইউনিট রক্ত দরকার হয়৷ পাওয়া যায় মাত্র ৪০ লাখ ইউনিট৷ সবথেকে বেশি দরকার হয় ‘ও' টাইপ রক্ত৷ রক্ত বেশি লাগে গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত ব্যক্তি কিংবা কেমোথেরাপিকালে ক্যান্সার রোগীর৷ বছরে লাখেরও বেশি নতুন ক্যানসার রোগ ধরা পড়ে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য