ভারতে গত সন্ধ্যার ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১১গত সন্ধ্যায় ভারতের উত্তর থেকে পূর্ব এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল কেঁপে ওঠে৷ ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল রিখটার স্কেলে ৬.৮৷ প্রথম কম্পনের পর পরই আরো দুটি কম্পন অনুভূত হয় আফটার শক হিসেবে৷ ভূমিকম্পের উৎস সিকিম-নেপাল সীমান্তের কাছে গ্যাংটক থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে মাটির ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার গভীরে৷ লোকজন আতঙ্কে রাস্তায় বেরিয়ে আসে৷ মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৫০-এ৷এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে৷ আহত শতাধিক৷ সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হিমালয় রাজ্য সিকিম ও উত্তরবঙ্গ৷
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সঙ্গে সঙ্গে সক্রিয় হয়ে ওঠে৷ উদ্ধার কাজে দিল্লি থেকে পাঠানো হয় বিমানবাহিনীর পাঁচটি বিমানে ৫০০শোর উদ্ধারকারী দলকে৷ ছুটে যায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল, আধা সামরিক বাহিনী আইটিবিটি এবং সীমান্ত সড়ক সংস্থা৷ কিন্তু ভূমিকম্পের পর বৃষ্টি ও ভূমিধসে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়৷ কোলকাতা থেকে যায় চিকিৎসক দল৷
সিকিমে প্রায় এক লাখ বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে৷ সিকিম কার্যত দেশের অবশিষ্ট অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন৷ সিকিম ও উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট৷ ভূকম্পনের ফলে ফারাক্কা, কহেলগাঁও, রঙ্গিত, চুখাতিস্তা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি বন্ধ হয়ে যায়৷ জল সরবরাহ, মোবাইল পরিষেবা ও অন্যান্য যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত৷ সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন কুমার চামলিঙ্গ প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলেছেন৷ কন্ট্রোল রুম ও হেল্পলাইন খোলা হয়েছে৷
বৃষ্টি ও ভূমিধসের মত পরিস্থিতিতে উদ্ধার কাজ চালানোর জন্য জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের বিশেষ কোন প্রশিক্ষণ বা টেকনিক আছে কিনা জানতে চাইলে দিল্লির জাতীয় বিপর্যয় কর্তৃপক্ষের কর্তাব্যক্তি ড. চন্দন ঘোষ ডয়চে ভেলেকে বলেন, উদ্ধারকারী দল দুর্ঘটনা স্থলে পৌঁছে গেলে তাঁদের কাছে যেসব উপকরণ থাকে যেমন, ইনফ্রা-রেড মেশিন, কাটার বা ভাঙার জন্য যন্ত্রপাতির সাহায্যে তারা জানতে পারে কেউ চাপা পড়ে আছে কিনা বা বেঁচে আছে কিনা৷ সেই অবস্থা থেকে উদ্ধার করার কাজে তারা সিদ্ধহস্ত৷
এই এলাকা ভূমিকম্প প্রবণ কেন ? তার উত্তরে ড. ঘোষ বলেন, হিমালয় অঞ্চলের কাশ্মীর থেকে অরুণাচল পর্যন্ত ২৪০০ কিলোমিটার এলাকা ভূমিকম্প প্রবণ৷ কারণ এখানে ইন্ডিয়ান প্লেট গেছে তিব্বতীয় প্লেটের নীচে দিয়ে৷ফলে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে একটা মুভমেন্ট সমানে হয়ে চলেছে৷ ভূমিকম্পের পূর্বাভাষ দিতে বহু দেশ বহু অর্থ ব্যয় করছে কিন্তু এখনো তা সম্ভব হয়নি৷ ভারতেও এবিষয়ে গবেষণা চলেছে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক