1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে এবার জাতিগত সমীক্ষার উদ্যোগ 

রাজীব চক্রবর্তী নতুন দিল্লি
২৯ জানুয়ারি ২০২০

আগামী বছর ভারতে জনগণনা বা আদমশুমারি শুরু হবে৷ তার আগে জাতি ও সম্প্রদায় ভিত্তিক জনগণনা করতে চায় সরকার৷ যা নিয়ে আবারও রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে ৷

https://p.dw.com/p/3Wycv
India Diabetes Kampagne dagegen nahe Neu Delhi
ছবি: Getty Images/AFP/P. Singh

ভারত জুড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (‌সিএএ)‌, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (‌এনআরসি)‌ এবং জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (‌এনপিআর) নিয়ে তুমুল বিবাদের মধ্যে আদমশুমারি নিয়েও বিতর্ক দানা বেধেছে৷ দেশে জাতি ও সম্প্রদায় ভিত্তিক পরিসংখ্যান সংগ্রহ করতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার৷ এর আগে ২০১১ সালে মনমোহন সিংয়ের সরকার গোটা দেশে ‘‌আর্থ-‌সামাজিক এবং জাতিগত জনগণনা'‌ করেছে৷ কিন্তু, সেই পরিসংখ্যান প্রকাশ হয়নি৷

একই ধরনের শুমারি আবার করার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ আর এই উদ্দেশ্য সফল করতে সংসদের আসন্ন বাজেট অধিবেশনে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর ‌চাপ‌ সৃষ্টি করতে তৈরি হচ্ছে তাদের কয়েকটি ‘‌বন্ধু'‌ দল৷ শাসক দল বিজেপিও পাশে চাইছে তাদের শরিক ও সহযোগী দলগুলিকে৷ সরকারি ভাবে অবশ্য কেউ কোনও মন্তব্য করেনি৷

আপাতত ঠিক হয়েছে, সংসদে বিজেপি সাংসদরা এই দাবি তুলবেন৷ সমর্থন জানাবেন বিজেডি-‌সহ আরও কয়েকটি দলের সাংসদরা৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার দাবি, জাতি ও সম্প্রদায় ভিত্তিক জনগণনার পরিসংখ্যান জনগণের স্বার্থেই কাজে লাগানো হবে৷ সরকারি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে তা ব্যবহার করতে চায় সরকার৷ তবে, পূর্বের মতো পরিসংখ্যান গোপন রাখা হবে নাকি প্রকাশ করা হবে, তা সরকারের বিবেচ্য৷

এদিকে, বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োগ বিধি তৈরির কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে৷ বিধিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা মানুষরা নাগরিকত্বের আবেদন জানাতে পারবেন৷ জেলাস্তরে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকের দপ্তরে এই আবেদন করতে হবে৷ তবে, আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে ধর্মীয় প্রমাণপত্রের প্রতিলিপি৷

অ‌মুসলিম ছয়‌টি (‌হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, খ্রীষ্টান এবং পারসি)‌ ধর্মাবলম্বীদের নাগরিকত্বের আবেদন নেওয়া হবে৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সূত্রের খবর, শীঘ্রই এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে নাগরিকত্বের আবেদনপত্র গ্রহণ করা হতে পারে৷

সুজিত রায়

ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিশ্লেষক সুজিত রায় বলেছেন, ‘‌‘‌জাতি ও সম্প্রদায়ের গণনা আগেও হয়েছে৷ সরকার তা জনসমক্ষে প্রকাশ করেনি৷ এবার ২০২১ সালের জনগণনার সঙ্গে জাতিগত সমীক্ষা অত্যন্ত জরুরি৷ তপশিলি জাতি ও উপজাতির জন্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু রয়েছে৷ কিন্তু, আমরা জানি না তাদের সংখ্যা কত৷ এই হিসেব সবার জানা উচিত৷ সংরক্ষণ দেওয়া হোক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে৷'‌'‌

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একদিকে জাতি ও সম্প্রদায় ভিত্তিক জনগণনার প্রস্তুতি, অন্যদিকে নাগরিকত্বে ধর্মের প্রমাণপত্র, এই দুই নিয়ে আবারও উত্তাল হতে চলেছে দেশের রাজনীতি৷ তবে, পক্ষে ও বিপক্ষে উভয় যুক্তিই সামনে আসছে৷ কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘‌‘‌জনগণনার এবং জাতিগত সমীক্ষা মোটেই এক বিষয় নয়৷ মোদী সরকার সবকিছুতেই জাতিগত বিভাজনে বিশ্বাসী৷ তাই গোপনে এমন সমীক্ষা করার কথা বলা হচ্ছে৷'‌'

‌অন্যদিকে, এর মধ্যেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহার করার দাবি সম্বলিত প্রস্তাব পাশ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, পাঞ্জাব, রাজস্থান বিধানসভায়৷ এছাড়াও তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও বিধানসভায় সিএএ বাতিলের প্রস্তাব পাশ করতে চলেছেন৷ এমন পরিস্থিতিতে নাগরিকত্বের আবেদনে ধর্মীয় প্রমাণ পেশের উল্লেখ করা হলে দেশের রাজনীতিতে তা নতুন মোড় আনতে পারে৷ পাশাপাশি জনগণনার মাধ্যমে জাতি ও সম্প্রদায় ভিত্তিক পরিসংখ্যান সংগ্রহ করে তা প্রকাশ করা হলে তার বিরোধিতা হতে পারে৷

সংসদে বাজেট অধিবেশন শুরু হবে ৩১ জানুয়ারি৷ প্রথম পর্যায়ে চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত৷ পয়লা ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ৷‌‌ সম্প্রতি ওড়িশার বিজু জনতা দলের সাংসদীয় কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এনপিআর ফর্ম থেকে ১৩ (‌২)‌ অনুচ্ছেদটি বাতিল করার দাবি জানাবেন তাঁরা৷ সংসদে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা হবে ২০২১-‌এর জাতি ভিত্তিক জনগণনা প্রস্তুত করার জন্য৷ দলের সাংসদ পিনাকী মিশ্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‌‘‌এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে৷ প্রাথমিকভাবে তারা রাজি হয়েছে৷'‌'‌

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য