‘ভারত রত্ন’ যে বাঙালিরা
ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘ভারত রত্ন’ পুরস্কার৷ ১৯৫৪ সাল থেকে চলে আসা এই পুরস্কার পেয়েছেন বহু বাঙালি৷ কারা পেলেন এই সম্মান, জানুন ছবিঘরে...
১. বিধান চন্দ্র রায়
১৯৬১ সালে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ও চিকিৎসক ডঃ বিধানচন্দ্র রায়কে ‘ভারত রত্ন’ প্রদান করা হয়৷ পুরস্কারবিজয়ী প্রথম বাঙালি তিনিই৷
২. সত্যজিৎ রায়
১৯৯২ সালে মারা যাবার কিছু মাস আগেই বিখ্যাত চিত্রপরিচালক সত্যজিৎ রায়কে এই পুরস্কার দেওয়া হয়৷ ‘ভারত রত্ন’ ছাড়াও পদ্ম বিভূষণ, দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের মতো এমন অনেক পুরস্কার তাঁকে দিয়েছে ভারত সরকার৷
৩. অরুণা গাঙ্গুলি (পরে, অরুণা আসফ আলি)
১৯৪২ সালে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন চলাকালীন প্রথম স্বাধীন ভারতের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন বরিশালের একটি ব্রাহ্ম পরিবারে জন্মগ্রহণ করা অরুণা গাঙ্গুলি৷ প্রথমদিকে কংগ্রেস ও পরে কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত অরুণা ১৯৯৬ সালে মারা যান৷ এরপর, ১৯৯৭ সালে তাঁকে মরণোত্তর ‘ভারত রত্ন’ প্রদান করা হয়৷ এই পুরস্কার পাওয়া একমাত্র বাঙালি নারী তিনিই৷
৪. অমর্ত্য সেন
১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর ১৯৯৯ সালে অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে ভারত রত্ন দিয়ে পুরস্কৃত করে ভারত সরকার৷ উল্লেখ্য, বিশ্ববরেণ্য এই বঙ্গসন্তানকে একই বছরে সাম্মানিক নাগরিকত্ব দেয় বাংলাদেশ৷
৫. রবি শঙ্কর
১৯৯৯ সালে অমর্ত্য সেনের সাথেই আরেক বাঙালি জেতেন এই পুরস্কার৷ বিশিষ্ট সেতারবাদক ও সুরকার রবি শঙ্করকে এই পুরস্কার দেওয়া হয় বিশ্বে ভারতীয় সংগীতকে ছড়ানোর পেছনে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য৷
৬. প্রণব মুখোপাধ্যায়
‘ভারত রত্ন’জয়ী বাঙালিদের তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও কংগ্রেসের বরিষ্ঠ নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায়৷ ২০১৯ সালে এই পুরস্কার পান তিনি৷ প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সাথেই মরণোত্তর ‘ভারত রত্ন‘ দেওয়া হয় দুই বাংলাতেই সমানভাবে জনপ্রিয় অসমীয়া কন্ঠশিল্পী ড. ভূপেন হাজারিকাকে৷
বাঙালি নন, তবুও...
সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান কি বিদেশি নাগরিককে দেওয়া যায়? মাদার টেরিসা ও নেলসন ম্যান্ডেলাকে ‘ভারত রত্ন’ পুরস্কার দেওয়ার সময় থেকেই এই তর্ক চলে আসছে৷ অবাঙালি হওয়া সত্ত্বেও, বাংলার মানুষের জন্য তাঁর সমাজকল্যাণমূলক কাজের বিস্তৃতি এই তালিকায় তুলে আনে ‘সেইন্ট টেরেসা অফ ক্যালকাটা’কে৷
দাবি উঠলেও বিজয়ী নন যিনি
ভারতে সবচেয়ে বেশিদিন ধরে টানা মুখ্যমন্ত্রীত্বের নজির গড়েছিলেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী)র নেতা জ্যোতি বসু৷ তাঁর দলের ভেতরে ও বাইরে উঠেছিল তাঁকে ‘ভারত রত্ন’ প্রদানের ব্যাপক দাবি৷ কিন্তু তিনি তা পাননি৷ শুধু তাই নয়, জ্যোতি বসুকে এবিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান যে, পুরস্কার পেলেও তা নিশ্চয়ই ফিরিয়ে দিতেন তিনি৷