1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজনামিবিয়া

ভাবমূর্তি খারাপ হলেও হায়না যথেষ্ট উপকারী

১০ মার্চ ২০২২

বন্যপ্রাণী হিসেবে হায়নার ভাবমূর্তি মোটেই ইতিবাচ্ক নয়৷ জঙ্গলে বড় শিকারি প্রাণীদের উচ্ছিষ্ট খাদ্য খেয়েই দলবদ্ধ এই প্রাণী জীবনধারণ করে৷ অথচ ইকোসিস্টেমের ভারসাম্য বজায় রাখতে হায়নার অবদান ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/48G6p
Global 3000
ছবি: DW

নামিবিয়ায় বাদামী হায়নার সবচেয়ে বড় গোষ্ঠী রয়েছে৷ স্থানীয় মানুষকে শামিল করেই এই বিরল প্রাণীর বংশবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে৷ দেশের উত্তর পশ্চিমে স্কেলিটন কোস্ট বাদামী হায়নার বাসস্থান৷ মরুভূমির চরম পরিবেশ ও শীতল বেনগেলা স্রোতের সঙ্গেও এই প্রাণী নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে৷

জীববিজ্ঞানী এমসি ভারওয়ে সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে বাদামী হায়না পর্যবেক্ষণ করছেন৷ এক পর্যটন সংস্থার বৈজ্ঞানিক সমন্বয়ক হিসেবে তিনি কর্মরত রয়েছেন, যেটি আঞ্চলিক স্তরে প্রকৃতি সংরক্ষণ প্রকল্পে সহায়তা করে৷ তিনি মনে করেন, ‘‘হায়না ইকো সিস্টেমের গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ অথচ এই প্রাণীর ভাবমূর্তি সব সময়ে শুধু নেতিবাচক৷ বেশিরভাগ মানুষই হায়নাকে খারাপ চোখে দেখেন৷''

চাষিদের মনেও হায়নার উপদ্রব সম্পর্কে ক্ষোভ রয়েছে৷ হায়না তাদের ছাগল বা অন্যান্য গৃহপালিত পশু মারলেও তাদের হাত-পা বাঁধা, কিছুই করার জো নেই৷ তা সত্ত্বেও হায়না মারার ইচ্ছা হয়৷

গবাদি পশু পালনকারী হিসেবে ফিনেয়াস কাসাওনা কিন্তু বলেন, ‘‘এটা এখন এক অভয়ারণ্য৷ বন্য প্রাণীর সঙ্গেই আমাদের থাকতে হয়৷ ভেড়া ও ছাগলের মতোই এই প্রাণীদের কারণেও আমাদের উপার্জন হয়৷ সে কারণে আমি আর হায়না মারি না৷''

হায়না কিন্তু উপকারও করে

এমন নেতিবাচক ভাবমূর্তি সত্ত্বেও হায়নার অবদান কম নয়৷ বৈজ্ঞানিক সমন্বয়ক হিসেবে এমসি ভারওয়ে এর ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘‘হায়নার প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে৷ স্ক্যাভেঞ্জার বা নোংরা খাদক হিসেবে মরুভূমিতে টিকে থাকা মোটেই সহজ নয়৷ তাছাড়া হায়না অত্যন্ত সামাজিক প্রাণী৷ অথচ এখানে বিচ্ছিন্ন কিছু প্রাণী দেখা যাচ্ছে৷ কিন্তু বাসায় বিশেষ করে শাবকের জন্ম হলে হায়না একজোট হয়ে যায়৷ শাবকের সঙ্গে অনেক সময় কাটায়, খেলে৷''

উপকূল থেকে কিছুটা দূরে ভারওয়ে হায়নার গোষ্ঠী গঠনের এক প্রণালী আবিষ্কার করেছেন৷ সেখানে বাদামী হায়না নিজেদের মধ্যে খেলা করে ও শিকার করা মাংস ভাগ করে নেয়৷ মরুভূমির মধ্য দিয়ে মাংস টেনে নিয়ে গিয়ে শাবকদের খাওয়ায়৷

স্ক্যাভেঞ্জার হিসেবে এই প্রাণী অনেক রোগ ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করে৷ ফলে গবাদি পশু ও পশু পালনকারীদের উপকার হয়৷ অথচ নেতিবাচক ভাবমূর্তির কারণে নির্মমভাবে হায়না শিকার করা হয়৷ এমসি ভারওয়ে জানান, ‘‘মানুষ সিংহ ও চিতা মারার জন্য বিষ ছড়িয়ে দেয়৷ ফলে হায়নাও মরে যায়৷ এখানকার মানুষ হায়না খুব ভয় পায়৷ বোঝে না, এই প্রাণী কেন এত গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান৷ তারা পাথড় ছুড়ে মারে অথবা গাড়ি নিয়ে পেছনে তাড়া করে৷''

সাত বছরের খরার ফলে গোটা অঞ্চলের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে৷ ফলে খোরাকের সন্ধানে হায়নাকে আরও দূরে যেতে হয় এবং চাষিদের সঙ্গে সংঘাত সৃষ্টি হয়৷ গবাদি পশু হারানোর ফলে  চাষিদের রোষ আরও বেড়ে যাচ্ছে৷ ইমানুয়েল গুরিরাব তাঁদেরই অন্যতম৷

কুনেনে অঞ্চলে লেউকপ খামারে দুটি সিংহ গুরিরাবের ৬৬টি ছাগল ও দশটি ভেড়া মেরে ফেলেছে৷

স্টেফান ম্যোল/এসবি