1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বড় দুই দলে যোগ দেবেন নুর, তবে...

১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর ভবিষ্যতে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হবেন বলে প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/3PmGe
Nurul Huq Nur
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan

এখন আওয়ামী লীগ, বিএনপির কোনোটিকেই ‘পছন্দ' নয় জানিয়ে তিনি বলছেন, দল দুটির কার্যক্রমে পরিবর্তন হলে এর যে কোনো একটিতে যোগ দিতে পারেন তিনি৷ আর ভবিষ্যতে কোনো রাজনীতিক দল গঠন করবেন কি না, তা পরিস্থিতি বলে দেবে৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বুধবার ডয়চে ভেলের সঙ্গে ফেসবুক লাইভে অংশ নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে নিজের অভিমত দেন নুর৷ ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় আসা বেশ কিছু প্রশ্নেরও জবাব দেন তিনি৷

ভবিষ্যতে জাতীয় রাজনৈতিক দল গঠন করবেন কি না, একজন পাঠকের এই প্রশ্নে নুর বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দল গঠন করার সক্ষমতা এখনো তৈরি হয়নি, পরিবেশ পরিস্থিতি বলে দেবে৷ তবে জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে অবশ্যই যুক্ত হব সেটুকু বলতে পারি৷ ''এরপর আরেকজন জানতে চান, জাতীয় রাজনীতিতে যোগ দিলে পছন্দের কোনো দল আছে কি না?

জবাবে নুর বলেন, ‘‘বিদ্যমান রাজনীতিতে যে দুটো দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি তারা মুদ্রার এপিঠওপিঠ৷'' এই দল দুটি ক্ষমতায় থাকাকালে তাদের ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পসগুলোতে সন্ত্রাসী দখল দারিত্ব কায়েম করে রেখেছিল বলে মনে করেন তিনি৷

নুর বলেন, ‘‘... দুটি বড় দল তো তারাই, তাদের  (আওয়ামী লীগ, বিএনপি) প্রতি আমার এই মুর্হুতে রাজনীতি করার আগ্রহ নেই৷ তবে পরিবেশ পরিস্থিতিতে যদি দেখি তাদের কার্যক্রম পরবির্তত হচ্ছে তাহলে হয়ত তাদের কোনো দলে যেতেও পারি৷''

মৌলিক সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ ডাকসু

শিক্ষার্থীদের মৌলিক সমস্যা সমাধানে ডাকসু এখনো ভূমিকা রাখতে পারেনি স্বীকার করে এজন্য কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে সংখ্যাগিরষ্ঠ ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন নুর৷

তিনি বলেন, ‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় গণতন্ত্র চার্চার উর্বর ভূমি, সেখানে যে ভিন্ন মতের মানুষের উপর দমনপীড়ন, নির্যাতন চলে, যখন যে দল সরকারে থাকে তাদের ছাত্র সংগঠনের বাইরে অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে কাজকর্ম করতে পারে না৷  

‘‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের দিয়ে জোর করে মিছিল-মিটিং করানো হয়৷ সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভেবেছিল ডাকসু নির্বাচনের পরে নেতরা এ নিয়ে কাজ করবেন৷ সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোর করে মিছিল মিটিংয় করতে হবে না, হলে হলে শিক্ষার্থীদের যে গণরুমে থাকতে হয় এবং গেস্টরুমের নামে যে মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়, এটা বন্ধ হবে৷ আসলে এই মৌলিক কাজগুলো আমরা এখন পর্যন্ত কিছুই করতে পারিনি৷'' 

নুরের ভাষ্য, ‘‘ডাকসুতে ২৫ জনের মধ্যে ২৩ জন ছাত্রলীগের প্যানেলের৷ তাদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে নানা ধরনের সমস্যার সম্মূখীন হতে হচ্ছে৷ কারণ তাদের কাছ থেকে ওই ধরনের সহযোগিতাটা আমরা পাচ্ছি না, কারণ আমরা সংখ্যায় কম, তারপরেও কিন্তু আমরা থেমে নেই৷ আমরা আমাদের জায়গা থেকে যতটুকু করা যায় সেই কাজগুলো করে যাচ্ছি৷

‘‘গণরুম, গেস্টরুম বন্ধ করাসহ শিক্ষার্থীরা যে মৌলিক দাবিগুলো করেছিল সেটা করতে পারিনি৷ তারা (ছাত্রলীগ) কখনোই এই কাজে সহযোগিতা করবে না, তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে এ কাজে হাত দেবে না৷ সাধারণ শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসলে এটা করতে পারব৷ প্রশাসনকে তাগাদা দিয়েছি, এখন শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম বা যা কিছু করার তা করব৷''

ডাকসুর সভাপতি ও উপাচার্যের সঙ্গে মতবিরোধ থাকলেও তার সঙ্গে বসতে হবে জানিয়ে নুর বলেন, কাজ করতে গিয়ে প্রশাসনের কাছ থেকে সহযোগিতা পাই না, এজন্যই মতবিরোধ৷ জালিয়াতি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর যারা ডাকসুতে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেব৷ চিঠি দিয়ে ৩৪ জনের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছি, উপাচার্য বলেছেন ব্যবস্থা নেব৷''

‘রাব্বানীকে সরাতে প্রয়োজনে আদালতে যাব'

চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া গোলাম রব্বানীকে ঢাকসুর জিএস এর পদ থেকে সরাতে প্রয়োজনে আদালতের শরণাপন্ন হবেন ভিপি নুর৷

একজন পাঠকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে, নৈতিক স্খলনের জন্য তাকে সংগঠন থেকে পদচ্যুত করা হয়েছে৷ ছাত্রলীগ যেখানে এ ধরনের অপরাধকে প্রশ্রয় দেয়নি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রশ্রয় দেয়ার প্রশ্নই উঠে না৷ এটা নৈতিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমর্থন করতে পারে না৷ আর যদি করেও থাকে এটি খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে৷ সে জায়গা থেকে আমরা তার পদত্যাগ চেয়েছি৷ ঢাকসুর অন্যদের সঙ্গে কথা বলে (রব্বানীকে সরাতে) আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেব, উপাচার্যকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি৷'' 

রাব্বানীকে ডাকসু থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানোর পর ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা নুরকে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন৷

এ প্রসঙ্গে নুর বলেন, ‘‘দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেবেন বলে তিনি উগ্র আচরণ করেছেন, উগ্র মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন৷ আমি কেন চুপ থাকব? অন্যায়-অনিয়ম দেখলে সেখানে ডাকসু থেকে চুপ থাকার প্রশ্নই উঠে না৷''

রাব্বানীকে ডাকসু থেকে সরে না গেলে আদালতে যাবেন কি না, এমন প্রশ্নে নুর বলেন, ‘‘পরিবেশ পরিস্থিতি...আশা করি, আমি শুনেছি যে তিনি পদত্যাগ করবেন৷  আর যদি পদত্যাগ না করেন তবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রয়োজনে আদালত পর্যন্ত যাব৷ তবে আমার মনে হয় সেটা করতে হবে না৷ কারণ ডাকসুর এক্সিকিউিটভ মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে৷ উপাচার্যের একক ক্ষমতা দেয়া আছে, তিনি চাইলে এমন অভিযোগে বা যে কেউ দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে ব্যবস্থা নিতে পারবেন৷ উপাচার্য নৈতিক জায়গা থেকে পিছুপা হবেন না বলে আমি মনে করি৷''

রব্বানী ডাকসু থেকে পদত্যাগ না করলে একজন চাঁদাবাজের সঙ্গে কাজ করা লজ্জার হবে কি না, একজন পাঠকের সেই প্রশ্নে নুর বলেন, ‘‘নৈতিকভাবে তার সঙ্গে কাজ করা আমার সম্ভব নয়, সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি, ডাকসুর অন্যদের জানিয়েছি, এখন আমাদের একটা ব্যবস্থা তো নিতেই হবে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের জিএস হবে একজন চাঁদাবাজ, দুর্নীতিগ্রস্ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ফান্ড থেকেও তিনি চাঁদাবাজি করবেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করবেন এটা কখনোই মেনে নেয়া যায় না৷''

শোভন ও রব্বানীকে সরিয়ে দেওয়ার পর যাদের হাতে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব এসেছে তারা ডাকসুকে সহযোগিতা করবেন বলেও আশা করছেন নুর৷

মার্যাদান ব্যক্তি হওয়ার ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শোভান সিনেট থেকে পদত্যাগ করছেন মত দিয়ে নুর বলেন, ‘‘এটা ভালো উদ্যোগ, আশা করি গোলাম রব্বানীও তাকে (শোভন) অনুসরণ করবেন৷''

এসআই/কেমএম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য