1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সারকুলার মাইগ্রেশন’

২১ মে ২০১২

উপযুক্ত, সক্ষম এবং কর্মঠ ব্যক্তিদের কাজ পেতে কখনোই সমস্যা হয় না৷ তবে পারিশ্রমিক যদি ভাল না হয়, তবে এদের অনেকেই পাড়ি জমায় বিদেশে৷ দরিদ্র দেশগুলোকে সাহায্য করতে বিশেষজ্ঞরা এই প্রক্রিয়ার নাম দিয়েছেন ‘সারকুলার মাইগ্রেশন’৷

https://p.dw.com/p/14zAq
ছবি: DW

উন্নয়নশীল দেশ থেকে প্রতি বছর হাজারো তরুণ বিদেশের উদ্দেশ্যে পড়ি জমায়৷ এটি সেই দেশগুলোর জন্য বেশ বড় একটি সমস্যা কারণ এই তরুণরা শিক্ষিত, কর্মঠ এবং পরিশ্রম করতে সক্ষম৷ যে সময় দেশ তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছে, ঠিক সেই সময়েই তারা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে৷ কাজ করছে অন্য আরেকটি দেশে৷

বিশ্ব ব্যাংকের জরিপ অনুযায়ী, প্রতি বছর আফ্রিকা থেকে প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষিত ছেলে-মেয়ে অন্য দেশে পাড়ি জমায়৷ সাধারণত ইউরোপ বা অ্যামেরিকায়৷ ক্যানাডার গবেষকরা জানিয়েছেন, শুধু মাত্র সাহারা অঞ্চলই প্রতি বছর প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার খরচ করে তাদের দেশের তরুণ-তরুণীদের শিক্ষার পেছনে৷ বিশেষ করে চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে৷ কিন্তু দেখা গেছে, পড়াশোনা শেষ করে এরা প্রায় সকলেই দেশ ছেড়ে চলে গেছে অন্য আরেকটি দেশে৷

তবে হিসাব-নিকাশের শেষ এখানেই নয়৷ যে বা যারা বিদেশে আসছে, তারা বিদেশে কাজ করছে এবং নিজের দেশকে আর্থিকভাবে সাহায্য করছে৷ বাবা-মা বা বন্ধু-বান্ধবকে তারা অর্থ দিয়ে সাহায্য করছে৷ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে তাই এই দেশগুলো এগিয়ে রয়েছে অনেক বেশি৷ এই দেশগুলো বিদেশে থেকে যত অর্থ সরকারিভাবে সাহায্য পায়, তার দ্বিগুণ পাচ্ছে এসব তরুণ-তরুণীর পাঠানো আর্থিক সাহায্যের মাধ্যমে৷

Studenten an der Rheinisch Westfälischen Technischen Hochschule Aachen FLASH Galerie
ইদানিং বাইরে থেকে অনেক শিক্ষার্থী জার্মানিতে আসছেনছবি: DW/Ashok Kumar

সারকুলার মাইগ্রেশন – কী এবং কেন?

অনেকেই আছেন যারা বিদেশে আসেন, পড়াশোনা করেন, কয়েক বছর কাজ করে কর্ম অভিজ্ঞতা অর্জন করেন, আর তারপর ফিরে যান নিজ দেশে৷ অনেকেই বিশাল অঙ্কের টাকা জমিয়ে পুরোটাই নিয়ে যান নিজ দেশে৷ সেখানে নতুন করে শুরু করেন ব্যবসা বা তৈরি করেন নিজস্ব প্রতিষ্ঠান৷ এটাকেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন সারকুলার মাইগ্রেশন৷ আধুনিক যুগের ‘ব্রেন ড্রেন' এখানেই এসে ঘুরে দাঁড়িয়েছে অন্যভাবে, অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে৷

জার্মানির ‘ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্স'-এ স্টেফান আঙ্গেনএন্ডট ‘সারকুলার মাইগ্রেশন'-এর বিভিন্ন কৌশলগুলো নিয়ে কাজ করছেন৷ গত কয়েক বছর ধরে তিনি লক্ষ্য করেন যে, খুব কম সংখ্যক বিদেশি ছেলে-মেয়েরা স্থায়ীভাবে ইউরোপ বা অ্যামেরিকায় বসবাসের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে৷ কোন এক সময়ে তারা সবাই ফিরে যাচ্ছে নিজের দেশে৷ এমনকি এরকম অনেকেই আছে, যারা দেশ এবং বিদেশ – দুটি দেশেই থাকছে, কাজ করছে, সমানভাবে দুটি দেশেই সময় কাটাচ্ছে৷ খুব সহজে এবং দ্রুত তারা দুটি দেশের মধ্যে যাতায়াত করতে পারছে৷

আঙ্গেনএন্ডট জানান, ‘‘এর মূল কারণ হল যাতায়াত ব্যবস্থা আর আগের মত নেই৷ ইদানিং খুব সহজে এবং স্বল্প অর্থের বিনিময়ে সহজেই যে কোন জায়গায় যাওয়া সম্ভব হচ্ছে৷ বিশেষ করে বিভিন্ন নেটওয়ার্ক যখন দেখছে যে এই দেশে বা এই দেশ থেকে লোকজনের যাতায়াত বেড়েছে, তখন তারা বিভিন্ন ধরণের সুযোগ দিচ্ছে৷ অনেকেই আছেন যারা প্রতি বছর অন্তত একবার নিজে দেশে যান, অনেকেই যান আবার অন্তত দুবার৷ দুটি দেশের মধ্যে সহজে যোগাযোগ এভাবেই স্থাপিত হচ্ছে৷''

তবে উচ্চশিক্ষিত অভিবাসীদের ক্ষেত্রে জার্মানিসহ আরো কিছু দেশ বেশ কিছু কঠোর নিয়ম-কানুন এখনো মেনে চলছে৷ আঙ্গেনএন্ডট জানান, সারকুলার মাইগ্রেশন'কে চালু রাখতে, ত্বরান্বিত করতে বিদেশের মাটিতে থাকার এবং নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার সময়কে আরো শিথিল করে দিতে হবে৷ অস্থায়ী অভিবাসীদের এভাবেই আমরা সাহায্য করতে পারি৷ যারা একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর নিজ দেশে ফিরে যেতে চায় তাদের উৎসাহিত করতে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেয়া যেতে পারে৷ তাদের পরামর্শ দেয়া যেতে পারে৷ জার্মানিতে বা ইউরোপে যে বিষয় নিয়ে তারা পড়াশোনা করেছে, কীভাবে তারা তা নিজেদের দেশে কাজে লাগতে পারবে সে বিষয়ে তাদের সাহায্য করা যেতে পারে৷ এভাবেই তারা নিজ দেশে নতুন একটি জীবন শুরু করতে পারে৷ অন্যদের শিক্ষিত হতে উৎসাহিত করতে পারে৷

সবাই জিতছে, কেউই হারছে না

‘সারকুলার মাইগ্রেশেন' কীভাবে সাহায্য করে? প্রথমত যে জার্মানিতে আসছে সে শিক্ষিত হয়ে জার্মানিতেই কাজ করছে৷ এর মধ্যে দিয়ে লাভবান হচ্ছে জার্মানি৷ সে অর্থ উপার্জন করছে এবং সেই অর্থ পাঠাচ্ছে নিজ দেশে৷ এর থেকে লাভবান হচ্ছে তার দেশও৷ কয়েক বছর পর সে যদি নিজ দেশে ফিরে যায় তাহলে সে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে অভিজ্ঞতা এবং বিশাল অঙ্কের টাকা৷ জার্মানিতে সে রেখে যাচ্ছে শূন্য একটি স্থান যে স্থানটি পূরণ করতে এগিয়ে আসবে তারই মত আরেকজন৷ এর ফলে এগিয়ে যাচ্ছে দু'টি দেশই৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য