1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জনসনের বিরুদ্ধে বিরোধী ঐক্য

২৮ আগস্ট ২০১৯

চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে ব্রিটেনের বিরোধী দলগুলি ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিচ্ছে৷ অন্যদিকে ব্রেক্সিট পার্টির নেতা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছেন৷ বরিস জনসন সংসদ মুলতুবি রাখার চেষ্টা করছেন৷

https://p.dw.com/p/3Ob21
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kapeller

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গত সপ্তাহে ইইউ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পরেও নতুন করে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে দরকষাকষি করতে বদ্ধপরিকর৷ এমনকি চুক্তিহীন ব্রেক্সিট হলে তিনি ইইউ-র কাছে বকেয়া অর্থ পুরোপুরি না মেটানোর হুমকি দিচ্ছেন৷ আয়ারল্যান্ড সীমান্তে ব্যাকস্টপ ব্যবস্থার গ্রহণযোগ্য কোনো বিকল্পও তিনি এখনো তুলে ধরেন নি৷ মঙ্গলবার তিনি টেলিফোনে ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লোদ ইয়ুংকারের সঙ্গে ব্রেক্সিট নিয়ে আলোচনা করেন এবং যথারীতি ব্যাকস্টপ ব্যবস্থা বাতিল করার দাবি জানান৷ প্রধানমন্ত্রীর ব্রেক্সিট সংক্রান্ত উপদেষ্টা ডেভিড ফ্রস্ট বুধবার ব্রাসেলসে ইইউ কমিশনের সঙ্গে ব্যাকস্টপ বিষয়ে আলোচনা করবেন৷

এমন কড়া অবস্থানের ফলে শুধু ইউরোপের নেতারাই বিরক্ত হচ্ছেন না, দেশের মধ্যেও বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে৷ মঙ্গলবার বিরোধী লেবার দলের নেতা জেরেমি কর্বিন পাঁচটি বিরোধী দলের নেতার সঙ্গে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়ানোর বিষয়ে ঐকমত্য অর্জনের প্রচেষ্টা শুরু করেছেন৷ আগামী সপ্তাহে সংসদের অধিবেশন শুরু হবার পর তাঁরা একযোগে এমন এক আইন অনুমোদন করাতে চান, যার আওতায় প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ব্রেক্সিটের মেয়াদ বাড়াতে বাধ্য হবেন৷ সে ক্ষেত্রে ৩১শে অক্টোবরের মধ্যেই ইইউ-র সঙ্গে সমঝোতার প্রয়োজন থাকবে না৷ তার পর এক অনাস্থা ভোটে জনসনের পরাজয় ঘটলে জাতীয় ঐক্য সরকার, আগাম সাধারণ নির্বাচন, ব্রেক্সিটের প্রশ্নে দ্বিতীয় গণভোট ইত্যাদি নানা বিকল্প উঠে আসতে আসতে পারে৷ মোটকথা পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটেন নতুন করে ভাবনাচিন্তা করার সুযোগ পাবে৷ অবশ্যই এই বিলম্বের জন্য ইইউ-র সম্মতির প্রয়োজন হবে৷

সংসদ যাতে তাঁর ব্রেক্সিট নীতির পথে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে তিনি ৩১শে অক্টোবর পর্যন্ত সংসদের ক্ষমতা যতটা সম্ভব সীমিত রাখতে চান৷ সেই লক্ষ্যে তিনি সংসদের অধিবেশনের দিন কমিয়ে আনার চেষ্টা করছেন৷ আগামী ১৪ই অক্টোবর রানির ভাষণের দিন স্থির করার উদ্যোগ নিচ্ছেন জনসন৷ রীতি অনুযায়ী এই দিনেই আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদের অধিবেশনের সূচনা হয়৷ এমনটা করলে আগামী সপ্তাহে সংসদের অধিবেশন শুরু হলেও সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে প্রায় এক মাসের বিরতি অনিবার্য হয়ে পড়বে৷ ১৪ই অক্টোবরের পরেও সংসদ সদস্যদের হাতে বেশি সময় থাকবে না৷

বলা বাহুল্য, বিরোধী পক্ষ এমন ‘কৌশল’ সম্পর্কে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে৷ জেরেমি কর্বিন বলেন, এমন পদক্ষেপ সংবিধানের জন্য হুমকি৷

এমন প্রচেষ্টার আশঙ্কায় বিরোধী দলগুলি ইতোমধ্যেই আইন বদল করে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে সংসদের বাড়তি অধিবেশনের ব্যবস্থা করেছিল৷ চলতি বছরেই সংসদ সদস্যরা টেরেসা মে-র সরকারের হাত থেকে যেভাবে ব্রেক্সিটের নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নিয়েছিলেন, বরিস জনসনের ক্ষেত্রেও সেই উদ্যোগ নিতে চান বিরোধীরা৷ কিন্তু জনসন সংসদের অধিবেশনের সময় কমিয়ে আনতে পারলে তাঁদের প্রচেষ্টা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে৷ 

কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরাও হাত গুটিয়ে বসে নেই৷ ব্রেক্সিট পার্টির প্রধান নাইজেল ফারাজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের উদ্দেশ্যে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ তাঁর মতে, ব্রিটেনের স্বার্থে ইইউ-র সঙ্গে কোনো বিচ্ছেদ চুক্তিই গ্রহণযোগ্য নয়৷ সরকার তাঁর প্রস্তাব মানলে তিনি আগামী সাধারণ নির্বাচনে টোরি পার্টির সঙ্গে আসন নিয়ে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছেন৷ জনসন তাঁর ডাকে সাড়া না দিলে তিনি প্রতিটি আসনে টোরি দলের বিরুদ্ধে প্রার্থী খাড়া করার হুমকি দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, সে ক্ষেত্রে টোরি দল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে৷

এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)