ব্রাজিল-জার্মানি ম্যাচ, জার্মানিতে ব্রাজিল
২০১৪ বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে জার্মানির মুখোমুখি স্বাগতিক ব্রাজিল৷ ছবিঘরে থাকছে দু’দলের ম্যাচ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য আর জার্মান ফুটবলে সাড়া জাগানো কয়েকজন ব্রাজিলিয়ানের কথা৷
ব্রাজিল অনেক এগিয়ে
এবারের সেমিফাইনালটি হবে ব্রাজিল-জার্মানির ২২তম ম্যাচ৷ আগের ২১ বারে সেলেসাওরা জিতেছে ১২ বার, আর জার্মানি জয় পেয়েছে মোট চারটি ম্যাচে৷ বাকি পাঁচটা ম্যাচ শেষ হয়েছে অমীমাংশিতভাবে৷
জার্মানিকে হতাশায় ডোবানো সেই ম্যাচ
দু’দলের সর্বশেষ দেখা হয়েছিল ২০০২ বিশ্বকাপ ফাইনালে৷ সেই ম্যাচে জার্মানিকে ২-০ গোলে হারিয়ে পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে ব্রাজিল৷ ব্রাজিলের হয়ে গোল দুটো করেছিলেন রোনাল্ডো৷ জার্মানদের কাছে সেই ম্যাচ একেবারেই স্মরণযোগ্য হয়নি৷ ম্যাচের পরই আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায় নিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন জার্মান ফুটবলার৷
হলুদ-জ্বর
ইতিমধ্যে একটি করে হলুদ কার্ড পাওয়ায় জার্মানির ফিলিপ লাম, শোয়াইনস্টাইগার, খেদিরা আর হ্যোভেডেস ব্রাজিলের বিপক্ষে হয়তো খেলতে নামতেন দুরু দুরু বক্ষে৷ আগের নিয়ম অনুযায়ী, আগের একটি হলুদ কার্ডের সঙ্গে সেমিফাইনালে আরেকটি যোগ হলে ফাইনাল থেকে বাদ পড়তেন তাঁরা৷ এখন অবশ্য আগের হলুদ কার্ড সেমিফাইনালের হিসেবে আসবে না৷ সুতরাং ব্রাজিলকে হারাতে পারলে আরেকটি করে হলুদ কার্ড পেলেও ফাইনালে খেলতে পারবেন তাঁরা৷
‘গ্রেট’ এলবার
জিওভানে এলবার৷ জার্মানিতে খেলা অন্যতম সেরা ব্রাজিলিয়ান৷ বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে খেলেছেন ৬ বছর৷ ওই সময়ে ১৩০টিরও বেশি গোল করে বায়ার্নকে লিগ শিরোপা জিতিয়েছেন চারবার৷ বাভারিয়ায় দারুণ জনপ্রিয় এলবার৷ তবে ব্রাজিলে খুব একটা কদর পাননি৷ ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন মাত্র ১৫টি ম্যাচ৷ কিন্তু জার্মানিতে এখনো তাঁর ভীষণ কদর৷ এই বিশ্বকাপে এলবার ফুটবল বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছেন জার্মান চ্যানেল এআরডি-র হয়ে৷
গোলমেলে ব্রেনো
ব্রেনো জার্মান লিগ বুন্ডেসলিগায় খেলতে এসেছিলেন ২৪ বছর বয়সে৷ ছিলেন বায়ার্ন মিউনিখ দলে৷ ২০১১ সালে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে৷ তিন বছরের কারাদণ্ড হলেও ২০১৩ সালে মুক্তি পান৷ এমন দুঃসময়েও তাঁর পাশে থেকেছে বায়ার্ন৷ নিজেদের অনুর্ধ-২৩ দলের কোচের দায়িত্ব ব্রেনোকেই দিয়েছে তারা৷ ব্রাজিলের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে ১৪টি ম্যাচ খেলা ব্রেনো উচ্ছৃঙ্খলতার কারণেই বেশি দূর এগোতে পারেননি৷
ডর্টমুন্ডের প্রিয় সন্তান
লিওনার্দো ডে ডস সান্টোস৷ ডেডে নামেই বেশি পরিচিত ব্রাজিলিয়ান এই ফুটবলার৷ জার্মানিতে খেলেছেন বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে৷ দু’বার বুন্ডেসলিগা জিতিয়েছেন ক্লাবটিকে৷ গত বছর তুরস্কের এক ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে৷ ফলে জার্মানিতে খেলার পাঠ বোধহয় চুকেছে৷ তুর্কি ক্লাবেই সম্ভবত ক্যারিয়ার শেষ করতে চলেছেন ডেডে৷ বয়স ৩৬৷ ব্রাজিলের হয়ে একটি ম্যাচ খেলা এই ফুটবলারের ফুটবলকে অনেক দেয়ার থাকলেও বয়সটা অনুকুলে নেই৷
বাভারিয়ার ব্রাজিলিয়ান
ছবির এই তিন ব্রাজিলিয়ানের সঙ্গে জুড়ে আছে বায়ার্ন মিউনিখের নাম৷ দান্তে (ডান দিকে) সেমিফাইনালে খেলতে পারেন দুটি হলুদ কার্ডের কারণে বাদ পড়া অধিনায়ক থিয়াগো সিলভার জায়গায়৷ মিডফিল্ডার লুইস গুস্তাভো (বাঁ দিকে) তো ব্রাজিল দলের প্রায় নিয়মিত সদস্য৷ সম্প্রতি বায়ার্ন ছেড়ে ভল্ফসবুর্গে যোগ দিয়েছেন তিনি৷ ছবির তৃতীয় জন রাফিনইয়া (মাঝে) ২০১১ সাল থেকে খেলছেন বায়ার্নে, তবে বিশ্বকাপের ব্রাজিল দলে সুযোগ পাননি৷
নেইমার নেই, নেই রয়েস
চোটের কারণে নেইমার বিশ্বকাপে আর খেলতে পারবেন না বলে বিশ্বজুড়েই চলছে হাহাকার৷ জার্মান দলের অপহিরার্য ফুটবলার মার্কো রয়েসও কিন্তু চোটের কারণে বিশ্বকাপে খেলতে পারছেন না৷ বিশ্বকাপের আগে আর্মেনিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে চোট পান রয়েস৷ সেখানেই শেষ তাঁর ২০১৪ বিশ্বকাপ স্বপ্ন৷
স্কোলারি বনাম ল্যোভ
দু’দলের দুই তারকা কোচ৷ ব্রাজিলে লুই ফেলিপে স্কোলারি আর জার্মান দলে ইয়াওখিম ল্যোভ৷ দলের সাফল্যে দুজনেরই রণকৌশল বড় ভূমিকা রেখে আসছে৷ সেমিফাইনালেও বড় ভূমিকা রাখবেন দুজন৷ ব্রাজিল-জার্মানি ম্যাচে দুই কোচের কৌশলের লড়াইটাও নিঃসন্দেহে বড় আকর্ষণ৷
রেকর্ডের সামনে ক্লোজে
সেমিফাইনালে যদি সুযোগ পান আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি গোলও করতে পারেন তাহলেই বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডটা নিজের করে নেবেন মিরোস্লাভ ক্লোজে৷ ব্রাজিলের সাবেক গ্রেট রোনাল্ডো আর ক্লোজে দু’জনেই ১৩টি করে গোল করেছেন বিশ্বকাপে৷ তাই রেকর্ডটি এখনো তাঁদের যৌথ মালিকানায়৷ আর একটি গোল পেলেই রোনাল্ডোকে ছাড়িয়ে যাবেন ক্লোজে৷