1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বেশি বয়সেও ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন সম্ভব

২২ জুন ২০২১

কথায় বলে, ‘স্বভাব যায় না ম'লে'৷ সত্যি কি আমরা নিজেদের ব্যক্তিত্বে পরিবর্তন আনতে পারি? বিজ্ঞানীরা বিষয়টি নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মানুষের ব্যক্তিত্ব ও তাতে পরিবর্তনের সম্ভাবনা সম্পর্কে কিছু ইঙ্গিত দিচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/3vJFV
Friends or couple of teens talking at sunset model released Symbolfoto PUBLICATIONxINxGERxSUIxAUT
ছবি: Imago Images/Panthermedia/A. Guillem

কথায় বলে, চাইলে আমরা নিজেদের পরিবর্তন করতে পারি৷ তবে কোনো মানুষ তার সারা জীবনের ব্যক্তিত্ব বদলাতে চাইলে তাকে সবার আগে বেশ কিছু প্রতিরোধ কাটিয়ে তুলতে হবে৷

আমাদের বৈশিষ্ট্যগুলি শুধু আংশিকভাবে জিনের মধ্যে স্থির করা থাকে৷ সারা জীবন ধরে নতুন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সেগুলি বদলে যায়৷ এমনকি বেশি বয়সেও নিউরোপ্লাস্টিসিটি বা মস্তিষ্কের শেখার ক্ষমতা অটুট থাকার কথা৷ তবে আমাদের চিন্তাভাবনা, অনুভূতি ও অভ্যাসের স্থায়ী বিন্যাস, অর্থাৎ আমাদের ব্যক্তিত্ব অত সহজে বদলানো সম্ভব নয়৷

আসলে জন্মের আগের এবং শিশু বয়সের প্রভাব আমাদের ব্যক্তিত্ব নির্ধারণ করে৷ মস্তিষ্কের লিম্বিক সিস্টেমের নীচের ও মাঝের স্তরে সেই তথ্য জমা থাকে৷ সেই এলাকা সচেতন ইচ্ছাশক্তির নাগালের বাইরে৷ মস্তিষ্ক গবেষক গেয়ারহার্ড রোট বলেন, ‘‘মস্তিষ্কের এই সেন্টারগুলি অবচেতন স্তরে গুরুত্বপূর্ণ এক কাজ করে৷ আমাদের উপলব্ধি, অভিজ্ঞতা, চিন্তা, অনুভূতি বিশ্লেষণ করে সে সবের মূল্যায়ন করে৷ যা ভালো তা আবার করার নির্দেশ দেয়৷ অন্যদিকে খারাপ ও বেদনাদায়ক কাজগুলি থেকে দূরে থাকতে বলে৷''

বেদনাদায়ক অনুভূতি এড়িয়ে চলার প্রবণতার কারণে আমরা আমাদের অভ্যাসের প্রতি অনুগত থাকি৷ এমন স্থায়ী অভ্যাসগুলি তাই প্রায়ই জাঁকিয়ে বসে৷ এমনকি সেগুলি বদলাতে চাইলেও সহজে তা করতে পারি না৷ কষ্টের মাত্রা যথেষ্ট বেশি হলে তখনই স্থায়ী পরিবর্তন সম্ভব হতে পারে৷

ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যগুলির কারণে বার বার ব্যর্থ হলে এবং ঘুরে দাঁড়ানোর আর কোনো উপায় না থাকলে মস্তিষ্ক নতুন করে ‘রিসেট' করতে প্রস্তুত হতে পারে৷ গেয়ারহার্ড রোট মনে করেন, ‘‘পরিবর্তন মেনে নেবার মাধ্যমে কমপক্ষে কষ্ট দূর করতে পারলে বা কষ্ট কমে গেলে সেই লাভের আশাও এ ক্ষেত্রে সহায়ক হয়৷ লাভক্ষতি ছাড়া ধৈর্য্যও তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷''

এর অর্থ হলো, ইচ্ছার সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতির ফারাক টের পেলেও যাবতীয় ব্যর্থতার তোয়াক্কা না করে, সবকিছু সহ্য করে নিজস্ব মনোভাব ধরে রাখা৷ এ ক্ষেত্রে আরেকটি জরুরি প্রশ্ন হলো, আমরা কি সত্যি নিজস্ব বিশ্বাসের কারণে পরিবর্তন চাই, নাকি অন্যদের খাতিরে সেটা করতে চাই?

আর একটি শর্ত হলো, ব্যক্তিত্বের ভাণ্ডারের মধ্যে কিছু অব্যবহৃত অংশ থাকতে হবে৷ অপরাধে জড়িয়ে পড়া কিশোরদের সঙ্গে কাজ করে প্রোফেসর রোটের সেই অভিজ্ঞতা হয়েছে৷ শিশু বয়সে নির্যাতন ও অবহেলার শিকার হওয়া সত্ত্বেও কয়েকজনের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে৷ মস্তিষ্ক গবেষক রোট বলেন, ‘‘এই সব কিশোরদের জীবনে চাচা, চাচি বা শিক্ষকের মতো এমন কোনো ব্যক্তি ছিল, যার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ সময়েও তাদের আশা-ভরসা দিয়েছে৷ তারাই সে কথা বলেছে৷ ফলে কষ্ট কিছুটা লাঘব হয়েছে বলে আমাদের মনে হয়৷''

এমন ইতিবাচক অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে নতুন কিছু গড়ে তোলা যায়৷ আমাদের মধ্যে আরও আস্থা, খোলামেলা মনোভাব ও সহমর্মিতা জাগিয়ে তোলার কোনো দাওয়াই আছে কি? কারণ সেগুলিই তো প্রকৃত পরিবর্তনের ভিত্তি৷ গেয়ারহার্ড রোট বলেন, ‘‘মানুষ নেতৃত্বের যত উঁচু পর্যায়ে পৌঁছে যায়, ক্ষমতাবানদের পরিবর্তনের ইচ্ছা ততই কমে যায় বলে আমি মনে করি৷ নীচু বা মাঝারি পর্যায়ে যথেষ্ট খোলা মনে এমন প্রস্তাব শোনা হয়৷ আরও উপরে উঠলে ব্যবধান বেড়ে যায়৷ কারণ পরিবর্তন ঘটলে ক্ষমতার মাত্রারও পরিবর্তন ঘটে৷''

অভ্যাস ত্যাগ করতে গেলে ঝুঁকি ও কখনো কখনো বেদনাও মেনে নিতে হয়৷ সে বিষয়ে সচেতন থাকলে জীবনে সফলভাবে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা বেড়ে যায়৷

অলিভার ভিটকভস্কি/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য