বেইজিং সফরে পুটিন আরো সহযোগিতার আশা
১৬ মে ২০২৪ইউক্রেনের উপর হামলার কারণে পশ্চিমা বিশ্ব কার্যত একঘরে করে রাখলেও রাশিয়ার কিছু বন্ধু এখনো রয়েছে৷ বিশেষ করে রাজনৈতিক সমর্থন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চীনের উপর সে দেশের নির্ভরতা বেড়েই চলেছে৷ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন বৃহস্পতিবার দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে চীনে গিয়ে সেই সম্পর্ক আরো জোরালো করার অঙ্গীকার করেছেন৷ চীনের প্রেসি়ডেন্ট শি জিনপিং তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন৷ উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনের উপর হামলার ঠিক আগে রাশিয়া ও চীন ‘সীমাহীন’ সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছিল৷ এ যাত্রায় পুটিনের প্রতিনিধিদলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, সদ্য নিযুক্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলুসভ এবং রুশ নিরাপত্তা পরিষদের সচিব সের্গেই শোইগু-ও রয়েছেন৷
চীন সফরের ঠিক আগে সে দেশের শিনহুয়া সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুটিন চীনের প্রেসিডেন্টের ভুয়সী প্রশংসা করেন৷ জাতীয় স্বার্থ ও গভীর পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে শি যেভাবে রাশিয়ার সঙ্গে ‘কৌশলগত' সহযোগিতা গড়ে তুলেছেন, তার প্রশংসা করে পুটিন বলেন, সে কারণেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবার কার্যভার গ্রহণের পর তিনি প্রথম বিদেশ সফরের গন্তব্য হিসেবে চীনকেই বেছে নিয়েছেন৷ তিনি শিল্প, উচ্চ পর্যায়ের শিল্প, মহাকাশ, পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, এআই, পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির উৎস ও অন্যান্য উদ্ভাবনি ক্ষেত্রে আরো নিবিড় দ্বিপাক্ষিত সহযোগিতার উদ্যোগ নিতে চান৷ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে পুটিনের সফরের সময় বড় উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে৷
ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের ক্ষেত্রেও চীনের উদ্যোগ সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছেন পুটিন৷ তাঁর মতে, বর্তমান এই সংকট সম্পর্কে শি জিনপিং-এর প্রকৃত ধারণা রয়েছে৷ তবে যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার উপর পশ্চিমা জগতের কড়া নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও চীন সে দেশকে সরাসরি অস্ত্র পাঠায় নি৷ গত মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বেইজিং সফরে গিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে চীনকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন৷ চীন ও রাশিয়া প্রকাশ্যে অ্যামেরিকার ‘আধিপত্য' নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও বেইজিং চীনের কোম্পানিগুলির উপর পশ্চিমা জগতের নিষেধাজ্ঞা এড়াতে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সীমারেখা মেনে চলার চেষ্টা করছে৷ নিষেধাজ্ঞার ভয়ে চীনের ব্যাংকগুলিও রাশিয়ার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে শুরু করেছে৷ গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে রাশিয়ায় চীনের রপ্তানিও কমে গেছে৷ গত ডিসেম্বর মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতার দায়ে তৃতীয় দেশের ব্যাংকগুলির উপরেও নিষেধাজ্ঞা চাপানোর নির্বাহী আদেশ দেওয়ার পর চীনসহ কিছু দেশ অস্বস্তিতে পড়েছে৷ চীনের কিছু কোম্পানি ইতোমধ্যেই সমস্যার মুখে পড়েছে৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)
দেখুন মে মাসের ছবিঘর...