বেঁচে থাকার তাগিদে নানা পেশায় নিযুক্ত মানুষরা
এখনো পশ্চিমবঙ্গে বিচিত্র সব পেশার সঙ্গে যুক্ত আছেন প্রচুর মানুষ। দুই বেলা রুটি-রুজির তাগিদে। ডিডাব্লিউ-এর ক্যামেরা খুঁজলো তেমনই কিছু মানুষকে।
ম্যানহোলের অন্দরে
ম্যানহোল মানে মানুষের ঢোকার জন্য গর্ত। মাটির নীচের টেলিফোন, ইলেকট্রিক, জলের লাইন, ইত্যাদির মেরামতির জন্য একটি প্রবেশদ্বার রাখতেই এই ম্যানহোলের প্রচলন করা হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গে এখনো মাটির নীচের নর্দমায় আটকে যাওয়া জঞ্জাল বের করার জন্য পাঁকে নামতে হয় মানুষকে। তারপর তুলতে হয় সেই পাঁক।
মাছের মাথা যখন জীবিকা
মাছের বাজারে এমন দৃশ্য প্রায়ই চোখে পড়ে, একজন এসে বড় বড় মাছের মাথা থেকে কী একটা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছে। এটাও এক বিচিত্র পেশা। মাছের পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে হরমোন সংগ্রহের পেশা। এই হরমোন দিয়ে ইঞ্জেকশান তৈরি করে তা মাছেদের দেয়া হয় দ্রুত বৃদ্ধির জন্য।
ভিক্ষুকের গাড়িচালক
ভিক্ষুকের গাড়িটি যিনি টেনে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি ভিক্ষুক নন। তিনি এই ভিক্ষুকের চালক। ভিক্ষাজীবির গাড়ি টেনে তিনি নিজের জীবিকা নির্বাহ করেন।
পয়সা কুড়ানিরা
পুণ্যলাভের আশায় গঙ্গার বুকে পয়সা ছুঁড়ে দেন অনেকে। সেই পয়সাই এই মানুষগুলোর বেঁচে থাকার রসদ। লোহার তৈরি এই কাঁটার লাঠি দিয়ে পয়সা খুঁজে ফেরেন এরা।
প্রতিমার কাঠামো তুলে
প্রতিমা বিসর্জনের দিনগুলোয় এদের ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে। প্রতিমা জলে পড়ার সঙ্গেসঙ্গেই প্রতিমাকে পাড়ে এনে তোলেন এরা। প্রতিমার কাঠামোর পুনর্ব্যবহার বা রিসাইকেল করার জন্য। এই কাঠামোগুলো শুকিয়ে মৃৎশিল্পীদের কাছে বিক্রি করেন তারা। নিজেদের জীবিকার তাগিদে এই কাজ করলেও পরোক্ষে এরা নদীর দূষণ রোধে কিছুটা হলেও সাহায্য করেন।
জুতোর পাহারাদার
ধর্মস্থানে জুতো হারানোর ঘটনা নতুন কিছু নয়। অনেক জায়গাতেই তাই পয়সার বিনিময়ে জুতো পাহারা দেওয়া হয়। হাল আমলের ওয়াজ মাহফিল বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এমন পেশাদার পাদুকা-পাহারাদার দেখা যায়।
বহুরূপী
দীর্ঘদিন ধরে মানুষের মনোরঞ্জন করে আসছেন বহুরূপীরা। একসময় সামাজিক বার্তা দেওয়ার কাজেও তাদের ব্যবহার করা হতো। এখন সারাবছর জুড়ে বিভিন্ন ধর্মীয় মেলায় ঘুরে বেড়ান তারা। মানুষ খুশি হয়ে কিছু দেওয়ার ওপর নির্ভর করে এদের রোজগার।
সারাদিন জঞ্জাল ঘেঁটে
বড় কঠিন, নির্মম কাজ। আবর্জনা থেকে কাগজ, প্লাস্টিকের বোতল বা অন্য সামগ্রী কুড়িয়ে নেয়া। তারপর তা পুরনো জিনিসের দোকানে বেচে দেয়া। সারাদিন জঞ্জাল ঘেঁটে পেট চালাতে হয় এদের।
কানের ময়লার খোঁজে
নিজের কান অনেকেই নিজে পরিষ্কার করতে পারেন না, কান পরিষ্কার করতে ভয়ও পান অনেকে। এই মানুষগুলোর জীবিকা অন্যের কান পরিষ্কার করে দেওয়া।
রণপা চড়ে
এককালে দ্রুত যাতায়াতের জন্য এটা ঘোড়ায় চড়ায় বিকল্প হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। ডাকহরকরার পেশাতেও রণপার ব্যবহার ছিল। অতীতে বাংলায় ডাকাতি, গুপ্তচরের কাজ, দৌত্য ইত্যাদির জন্য রণপা ব্যবহার হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রণপার উপযোগিতা বদলেছে। আজকাল সার্কাস, বিজ্ঞাপন অথবা সামাজিক বার্তা প্রচারের জন্য রণপা ব্যবহার হয়।