বুদ্ধির চর্চা করে নিষিদ্ধ হয়েছেন যারা
বিশ্ব ইতিহাসের অতীত-বর্তমানে রয়েছে এমন বহু চর্চিত নাম, যারা এক সময় তাদের চিন্তার জন্য, লেখার জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত হন। ছবিঘরে থাকছে এমন কিছু ব্যক্তিত্বের কথা…
সক্রেটিস
পশ্চিমা দর্শনের উদ্ভাবক হিসাবে পরিচিত গ্রিক চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে রাষ্ট্রধর্মের বিরোধিতা করা, তরুণদের ভুল পথে চালিত করা ও নকল ঈশ্বরের উপাসনা করার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড শুনিয়েছিল চতুর্থ শতাব্দীর এথেন্স সরকার। বিচার চলাকালীন নিজের মতের পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরলে শেষ পর্যন্ত আইনি ব্যবস্থার পক্ষে থাকা সক্রেটিস রায় মেনে নিয়ে বিষপান করেন।
গ্যালিলিও
আধুনিক পদার্থবিদ্যা ও জ্যোতির্বিদ্যার পথিকৃৎ ইটালিয়ান চিন্তক গ্যালিলিও গ্যালিলেই প্রচলিত বিশ্বাসকে নস্যাৎ করে দিয়ে বলেন যে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে নয়, বরং পৃথিবী সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণ করে। এই তথ্য, যা সেই সময় ধর্ম অবমাননার সমান অপরাধ হিসাবে গণ্য হতো, উন্মোচন করার ফলে ধর্মবিরোধিতার দায় ওঠে তার বিরুদ্ধে।
জিওর্দানো ব্রুনো
শুধু গ্যালিলিওই নন, আরেক ইটালিয়ান জিওর্দানো ব্রুনো, যিনি ধর্মগুরুও ছিলেন, প্রশ্ন তোলেন কোপারনিকাসের দেখানো হিলিওসেন্ট্রিসিটি বা মহাকাশের কেন্দ্রে সূর্যের অবস্থানের পক্ষে। এই 'অপরাধে' তাকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়।
আলবের্ট আইনস্টাইন
আইনস্টাইনের ইহুদি পরিচিতির কারণে নাৎসি আমলে জার্মানি, অস্ট্রিয়াসহ নাৎসি-শাসিত সব অঞ্চলেই তার লেখা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। শুধু তাই নয়, তার ও তার পরিবারের ওপর নানা ধরনের অত্যাচার করা হলে আইনস্টাইন বাধ্য হন দেশ ও জার্মান নাগরিকত্ব ছাড়তে।১৯৪০ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব গ্রহণের আগে পর্যন্ত তিনি প্রায় আট বছর শরণার্থী হিসাবে ছিলেন।
নাদিন গোরদিমার
সাহিত্যে নোবেলজয়ী এই লেখক তার দেশ সাউথ আফ্রিকায় তৎকালীন বর্ণবাদী অ্যাপারথাইডপন্থি সরকারের সমালোচনা করেন 'বুরগারস ডটার' ও 'জুলাইস পিপল' বইয়ে। একারণে তার দুটি বোই নিষিদ্ধ করা হয়।
সালমান রুশদি
১৯৮৮ সালে প্রকাশ পাওয়া এই ভারতীয়-ব্রিটিশ লেখকের 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস' বইটি বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হয় ইসলামবিদ্বেষী অভিযোগে। ভারতসহ মধ্যপ্রাচ্যের ও মুসলিম বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে এই বইটি নিষিদ্ধ। শুধু তাই নয়, এই বই লেখার কারণে বেশ কয়েকবার প্রাণনাশের হুমকি ও ফতোয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে লেখক সালমান রুশদির।
হুমায়ূন আজাদ
১৯৯২ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশি লেখক হুমায়ূন আজাদের 'নারী' বইটি ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। আইনি লড়াইয়ের পর ২০০০ সালে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় সরকার। এরপর ২০০৪ সালে তার আরেকটি নভেল 'পাক সার জমিন সাদ বাদ' লিখে নতুন করে সমালোচিত হন তিনি। তাকে মেরে ফেলার চেষ্টাও চালানো হয়।