বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দারা যেমন আছেন
ঢাকার মোহাম্মদপুর, মিরপুরসহ দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পে আটকে পড়া পাকিস্তানি বা বিহারি লোকজন বাস করেন৷ নানা কারণে তাঁরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন৷ ছবিঘরে থাকছে বিস্তারিত৷
বিহারির সংখ্যা
ঢাকার মোহাম্মদপুর, মিরপুরসহ দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পে আটকে পড়া পাকিস্তানিরা এদেশে ‘বিহারি’ নামে পরিচিত৷ বাংলাদেশে উর্দুভাষী এ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা পাঁচ লাখেরও বেশি৷
গলি ঘুপচিতে গাদাগাদি জীবন
সরু গলির দুইপাশে সারি সারি ঘর৷ ৮ ফুট বাই ৮ ফুট আকারের একেকটি ঘরে গাদাগাদি করে বাস করেন ১০-১৫ জন মানুষ৷ মোহাম্মদপুর ও মিরপুরের সবগুলো বিহারি ক্যাম্পের চিত্র প্রায় একই৷
একের ভেতরে সব
বিহারি ক্যাম্পের ঘরগুলোতে নেই আলাদা রান্নাঘর কিংবা শৌচাগার৷ একই কক্ষের ভেতরই চলে রান্না, খাওয়া, ঘুম৷ সেখানেই আবার ঠাসাঠাসি করে রাখতে হয় প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রও৷
শৌচাগার সংকট
বিহারি ক্যাম্পগুলোতে কয়েকটি গলির জন্য আছে সামান্য কয়েকটি শৌচাগার৷ সকালে কিংবা রাতে শৌচাগারের সামনে ভিড় লেগে যায়৷
গণ গোসলখানা
গোসলখানায় একাধিক নারী কিংবা একাধিক পুরুষকে স্নান করতে দেখা যায়৷
ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস
বিহারি ক্যাম্পের যে ঘরগুলোতে হাজার হাজার মানুষের বাস সেগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ৷ খুবই ছোট ছোট ঘরগুলোকে চার-পাঁচতলা পর্যন্ত গড়ে তোলা হয়েছে৷
পেশা
নানান পেশায় যুক্ত বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দারা৷ এদের বড় একটি অংশ কাপড় সেলাই বা হাতের কাজের সঙ্গে যুক্ত৷ এছাড়া অনেকেই কাজ করেন সেলুন, কসাইখানা কিংবা খাবারের দোকানে৷ কেউ কেউ দিনমজুরের কাজ ছাড়াও রিকশা কিংবা অটোরিকশা চালান৷
শিক্ষা
উর্দুভাষী বিহারী জনগোষ্ঠী শিক্ষায়ও বেশ পিছিয়ে৷ পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় অনেকেই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হন৷ মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে কেবল একটি স্কুল রয়েছে যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য৷
বিহারি না বাংলাদেশি
সাধারণভাবে আটকে পড়া পাকিস্তানি বা বিহারি বলে পরিচিত হলেও বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাস করা তরুণ প্রজন্মের বেশিরভাগের জন্মই স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে৷ তাই তারা নিজেদেরকে বাংলাদেশের নাগরিক বলেই মনে করেন৷
ভোটার
২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বেশ কিছু বিহারিকে ভোটাধিকারের সুযোগ দেওয়া হয়৷ মোহাম্মদপুরে প্রায় ৩৫-৪০ হাজার বিহারি ভোটার রয়েছেন৷ আর মিরপুরে বিহারি ভোটারের সংখ্যা ৬০ হাজার৷
সুবিধাবঞ্চিত
মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দারা জানান, তাঁরা যে জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছেন তা দিয়ে কেবলমাত্র ভোটাধিকার প্রয়োগই করা যায়৷ অন্য কোনো নাগরিক সুবিধা তাঁরা পান না৷
নাজুক নাগরিক সেবা
বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দাদের চিকিৎসা, পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মতো নাগরিক সেবার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক৷ জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দারা জানান, দিনের বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ পান না তাঁরা৷
যে উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি
আবাসনের অসুবিধা, নিরাপত্তা ঝুঁকি ও মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে রাজধানী থেকে বিহারি ক্যাম্পগুলো সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেই কাজ এখনও আলোর মুখ দেখেনি৷