বিষ যেন সোনার হরিণ!
১ ফেব্রুয়ারি ২০২২কিছুর দেখা মিলেছে৷ কিছু হয়তো মিলবে অচিরেই৷
একরকম সাউথ আফ্রিকান লিজার্ড খুঁজতে টিম ল্যুডডেকে এসেছেন লান্ডাউ জাদুঘরে৷ সরিসৃপটির মুখের লালা এখান থেকে সরাসরি সংগ্রহ করেছেন তিনি৷ অন্য অনেক প্রাণীর ক্ষেত্রে পরীক্ষা করতে গিয়ে তাদের মেরে ফেলতে হয়৷ যেমন ওয়াসপ স্পাইডারের গ্রন্থি খুলে এনে পরীক্ষা করতে হয়৷ এ জন্য তাকে জেল ইলেকট্রোফোরেসিস নামের একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়৷ গবেষকরা তখন নানান ধরনের বিষের উপাদানগুলোর মধ্যে পার্থক্য নির্ধারণ করেন৷
ইনস্টিটিউট ফর ইনসেক্ট বায়োটেকনোলজি বিষ গবেষক ড. বিয়র্ন এম. ফন রয়মন্ট বলেন, ‘‘টক্সিন সিকোয়েন্সগুলোর মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে আমরা বিষ সংগ্রহের জন্য সবচেয়ে উপযোগী ওয়াস্প স্পাইডারগুলোকে খুঁজে বের করি৷’’
তুলনা করে ওয়াস্প স্পাইডারের বিষে অনন্য এক প্রোটিন খুঁজে পাওয়া গেছে৷ কিন্তু তা কোন ধরনের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার যেতে পারে?
তা জানতে এবার ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া খুঁজে বের করতে হবে৷ এরপর এই জীবাণুর বিরুদ্ধে এই বিষ ব্যবহার করতে হবে৷ তাহলে বিষের কার্যকারিতা জানা যাবে৷
মাকড়সা প্রায়ই তাদের শিকারকে পঙ্গু করে দেয়৷ তাদের কিছু বিষ স্নায়ু কোষের নির্দিষ্ট আয়ন চ্যানেলে ব্যথার সংক্রমণকে প্রভাবিত করতে পারে৷ যদি টক্সিনগুলির একটিকে ছেঁটে ফেলা যায়, তবে তা ব্যথার সংক্রমণ বন্ধ করতে পারে৷
এই বিষগুলি তাই ব্যথানাশক ওষুধের বিকাশের জন্য খুবই আকর্ষণীয়৷ তবে ওষুধের পথে অন্যান্য বাধা রয়েছে:
আমরা মানুষ যদি পশুর বিষ থেকে প্রোটিন গ্রহণ করি, আমাদের পাকস্থলী সেগুলো ভেঙে ফেলে৷ তাতে এই প্রোটিন ওষুধ হিসেবে তার কার্যকারিতা হারায়৷ তাই প্রথমে তাদের পরীক্ষাগারে ওষুধে পরিণত করতে হবে৷ আর পরিশেষে, বিষ ওষুধে পরিণত হয় কিনা, তা নির্ধারিত হয় এর ডোজের ওপর৷ খুব কম হলে তা অকার্যকর৷ বেশি হলে হয় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া৷
এভাবেই এর ব্যবহার বের করা হয়৷
যেমন এই সরিসৃপের বিষাক্ত লালায় এমন উপাদান আছে যা ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে৷এ পর্যন্ত প্রায় ডজন খানেক অনুমোদিত প্রাণীর বিষ-ভিত্তিক ওষুধের মধ্যে একটি এটি একটি৷
শেষ কথা হল, প্রাণীর বিষ সোনার মত দামি, আর তা এখনো অনেকটাই অনাবিষ্কৃত৷ হয়তো কোন মাকড়সার বিষে এখনো লুকিয়ে আছে বিরাট গুপ্তধন৷
মার্কুস প্লসজিউস্কি/জেডএ