বিশ্বের সেরা শহরের তালিকায় জার্মানির ৫ শহর
১৪ আগস্ট ২০১৮মঙ্গবার প্রকাশিত ইআইইউর এই তালিকায় সবচেয়ে বাসযোগ্য ৩০ শহরের মধ্যে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট, হামবুর্গ, বার্লিন, মিউনিখ ও ড্যুসেলডর্ফ রয়েছে৷
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ সাময়িকী ‘দ্য ইকোনমিস্ট'-এর সহযোগী সংস্থা ইআইইউর এই বার্ষিক সমীক্ষায় স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা এবং অবকাঠামোসহ ৩০টি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে প্রতিটি শহরের বাসযোগ্যতা নিরূপণের চেষ্টা করা হয়েছে৷
জার্মানির শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থান দ্বাদশ স্থানে আছে ফ্রাঙ্কফুর্ট৷ এই শহরের স্কোর ১০০ এর মধ্যে ৯৬৷ জার্মানির পাঁচ শহরের কোনোটির স্কোরই ৯৩-এর নীচে নামেনি৷ সর্বনিম্ন ৯৩ পেয়েছে ডুসেলডর্ফের৷ পাঁচটি শহরই ইউরোপের সবচেয়ে ভালো অবস্থানে থাকা ১৫টি শহরের মধ্যে রয়েছে৷
বিশ্বের ১৪০টি শহরে ‘জীবনযাপেনর চ্যালেঞ্জ' নিয়ে করা এই সমীক্ষায় ৯৯ দশমিক ১ স্কোর নিয়ে সবার উপরে স্থান হয়েছে ভিয়েনার৷
গত সাত বছর ধরে এই তালিকার শীর্ষ স্থানে ছিল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন৷ প্রথমবারের মতো সে জায়গা দখল করলো অস্ট্রিয়ার রাজধানী৷
বাসযোগ্যতার বিচারে করা এই তালিকার শীর্ষ ১০টি শহরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শহর অস্ট্রেলিয়া ও ক্যানাডার৷ মেলবোর্ন ছাড়াও সিডনি ও অ্যাডিলেড এবং ক্যানাডার টরন্টো, ভ্যানকুভার ও ক্যালগেরি শহর রয়েছে এখানে৷ জাপানেরও একাধিক শহর টোকিও ও ওসাকা রয়েছে শীর্ষ দশে৷
শীর্ষ দশে ইউরোপীয় শহরের বাইরে শুধু কোপেনহেগেন আছে নবম স্থানে৷
হামবুর্গের অবনমন
২০১৫ সালের পর এবারই প্রথম শীর্ষ দশ শহরের তালিকা থেকে ছিটকে গেছে জার্মানির হামবুর্গ৷ বাসযোগ্যতার স্কোর আগের মতো ৯৫ হওয়া সত্ত্বেও শহরটির অবস্থান হয়েছে ১৮তম৷
স্কোরের সামান্য হেরফেরে নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড অষ্টম থেকে দ্বাদশ, পার্থ সপ্তম থেকে চতুর্দশ এবং হেলসিঙ্কি নবম থেকে ষোড়শ স্থানে নেমে গেছে৷
সমীক্ষায় পাঁচটি বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে- স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্য সেবা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা ও অবকাঠামো৷
সন্ত্রাসের হুমকি
সন্ত্রাসবাদের হুমকির ক্ষেত্রে ইউরোপের শহরগুলোর মধ্যে ম্যানচেস্টার (৩৫তম), প্যারিস (১৯তম) ও কোপেনহেগেনের (নবম) অবস্থা সবচেয়ে খারাপ হয়েছে৷ তালিকায় ষোড়শ, ত্রয়োদশ ও দ্বাদশ অবস্থান হয়েছে এই শহরগুলোর৷
সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ম্যানচেস্টার ও প্যারিসের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রশংসাও এসেছে সমীক্ষায়৷ তবে স্থিতিশীলতার সূচকে পশ্চিম ইউরোপের শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নীচের দিকে আছে শহর দুটি৷
এক বিবৃতিতে সমীক্ষার সম্পাদক রোক্সানা স্লাভচেভা বলেন, ‘‘জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটলেও ইউরোপের শহরগুলোতে অস্থিরতার মাত্রা স্থিতিশীল দেখা গেছে৷ তবে অভিবাসন সংকট, ব্রেক্সিট বা কাটালুনিয়া স্বাধীনতার গণভোটে সামাজিক দ্বন্দ্ব বেড়েছে৷''
গত বছর ইউরোপের বেশ কয়েকটি শহরে নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি হওয়ায় এ অঞ্চলের কোনো শহরের বাসযোগ্যতার সূচকে বড় অবনমন ঘটেনি বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন তিনি৷
সবচেয়ে খারাপের দিকে দ্বিতীয় ঢাকা
বাসযোগ্য শহরের এই তালিকায় দুই ধাপ অবনমন ঘটেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার৷
একশ'র মধ্যে ৩৮ স্কোর নিয়ে তালিকায় ১৩৯তম স্থান হয়েছে ঢাকার৷ বাসযোগ্যতার বিবেচনায় এই সূচকে ঢাকার চেয়ে ‘বাজে অবস্থা' কেবল যুদ্ধবিধস্ত সিরিয়ার শহর দামেস্কের৷
বাসযোগ্যতা নিরূপণে মূল যে পাঁচটি সূচক বিবেচনা করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা ও অবকাঠামোর দিক দিয়ে ঢাকার অবস্থা সবচেয়ে করুণ৷
স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশের স্কোর ২৯ দশমিক ২, যা দামেস্কের সমান৷ আর অবকাঠামোতে ঢাকার অর্জন ২৬ দশমিক ৮, যেখানে দামেস্ক পেয়েছে ৩২ দশমিক ১ নম্বর৷
বাসযোগ্যতার বিচারে সবচেয়ে খারাপ ১০টি শহরের তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা ছাড়া পাকিস্তানের করাচি আছে চতুর্থ অবস্থানে৷ বাকিগুলোর অধিকাংশই আফ্রিকার শহর৷
ডেভিস ভ্যানওপড্রপ/এএইচ