‘বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক টিনএজার’ আইরিস অ্যাপফল
মার্কিন স্টাইল আইকন, ফ্যাশন ও ইনটেরিয়র ডিজাইনার আইরিস অ্যাপফল রোববার ১০০ বছরে পা দিয়েছেন৷ তাকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক টিনএজার’ বলা হয়৷ কারণ জানতে ছবিঘরটি দেখে নিন৷
ঝনঝন শব্দ
আইরিস অ্যাপফল হেঁটে যাওয়ার সময় তার গলায়, হাতে থাকা অলংকারের ঝনঝন শব্দ শোনা যায়৷ কারণ তিনি মনে করেন, গলায় একটা নেকলেস যথেষ্ট নয়৷ কমপক্ষে পাঁচটি না পরলে কি আর হয়! হাতের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই৷ একটা ব্রেসলেট যেন কিছুই হয় না৷ এক হাতে পাঁচ-দশটার মতো ব্রেসলেট থাকা চাই৷ এই হলেন আইরিস অ্যাপফল৷ সঙ্গে চোখে থাকে গোল, বড় ফ্রেমের চশমা৷
চোখে পড়ার মতো মেকআপ
১৯২১ সালের ২৯ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেন আইরিস৷ তিনি সবসময় মানুষের নজর কাড়ার মতো ঝকমকে পোশাক পরেন৷ সঙ্গে মেকআপও করেন রঙচঙা৷ যেমন চুলের রং হবে উজ্জ্বল ধূসর, লিপস্টিক হবে গাঢ় লাল, গোলাপি কিংবা কমলা রংয়ের৷
মায়ের পরামর্শ
১৯২৯ থেকে ১৯৩৩ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী চলা ‘গ্রেট ডিপ্রেশনের’ সময় বেড়ে উঠেছেন আইরিস৷ সেই সময় তার মা একটি সাধারণ কালো পোশাক কেনার পরামর্শ দিয়েছিলেন৷ কারণ সেক্ষেত্রে আইরিসের সবসময় পরার মতো কিছু একটা থাকবে৷ আইরিসের মা মনে করতেন সৌন্দর্যটা আসলে নির্ভর করে অ্যাক্সেসরির উপর৷ তরুণী আইরিস মায়ের সেই পরামর্শ জীবনে ভোলেননি৷ তাইতো এক এক করে তিনি যু্ক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ব্যক্তিগত অলংকারের সংগ্রহ গড়ে তুলেছেন৷
আইরিসের দর্শন
‘‘আমার কোনো নিয়ম নেই, কারণ সেটা থাকলে আমি অবশ্যই তা ভেঙে ফেলতাম, সুতরাং এটা (নিয়ম অনুসরণ করা) সময়ের অপচয়,’’ এই হলো আইরিসের দর্শন৷ এটাই শুরু থেকে তার সাফল্যের দর্শন৷ ইনস্টাগ্রামে আইরিসের অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ১৭ লাখ৷
স্বামীর সঙ্গে বিশ্ব ঘোরা
স্বামী কার্ল অ্যাপফলের সঙ্গে আইরিস৷ ২০১৫ সালে ১০১ তম জন্মদিন পালনের আগে মারা যান কার্ল৷ তার আগে ৬৮ বছরের দাম্পত্য জীবনে সারা বিশ্ব ঘুরে ফ্যাশনের আইডিয়া ও অ্যাক্সেসরি সংগ্রহ করেছেন আইরিস৷ বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ছাড়াও পুরনো জিনিসপত্রের দোকান ও ফ্লি মার্কেট থেকে জিনিসপত্র কেনেন আইরিস৷
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কাজ
আইরিসের ফ্যাশনের নাম হোয়াইট হাউস পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে৷ তাইতো নয় মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি৷ তাদের সঙ্গে কাজের বিস্তারিত আইরিস কখনও প্রকাশ না করলেও সাবেক ফার্স্ট লেডি জ্যাকি কেনেডি যে একটি জটিল ক্লায়েন্ট ছিলেন তার আভাস দিয়েছেন৷
প্রদর্শনী
নিউইয়র্কে আইরিসের অ্যাপার্টমেন্টের কয়েকটি ঘর জুড়ে শুধু পোশাক আর অলংকার আছে৷ ২০০৫ সালে নিউইয়র্কের ‘কসটিউম ইন্সটিটিউট অফ দ্য মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্টের’ কিউরেটর সেখান থেকে প্রায় ৩০০ পোশাক আর কয়েকশ অ্যাক্সেসরি নিয়ে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলেন৷ এই প্রদর্শনী তাকে পপ তারকার মতো খ্যাতি এনে দিয়েছিল৷ আইরিস অ্যাপফলের সাজ নিয়ে বেশ কিছু ইমোজিও আছে৷
বয়স্কদের জন্য অলংকার ডিজাইন
ডিজাইনাররা বয়স্কদের জন্য ডিজাইনের কথা ভাবেনা বলে আইরিস কিছুটা বিরক্ত৷ তাই তিনি তাদের জন্য অলংকার ডিজাইন করেছেন৷ সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন প্রযুক্তি, যেন সেটা যিনি অলংকার পরেছেন তার স্বাস্থ্যের খবর রাখতে পারে, আর জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে পারে৷
এখনও কাজ করে যাচ্ছেন
বয়স ১০০ হলেও অবসরের চিন্তা করছেন না আইরিস৷ এখনও তিনি ইনটেরিয়র ডিজাইনার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন৷ মার্কিন রিটেল চেন ‘লোজ’এর ঘরে ব্যবহৃত জিনিসপত্রের ডিজাইনের কাজ করছেন তিনি৷ পাশাপাশি নিজের চশমার ডিজাইনতো রয়েছেই৷ এবং অবশ্যই তার ফ্রেম বড় হওয়া চাই৷ কারণ তিনি বলেন, ‘‘মোর ইজ মোর অ্যান্ড লেস ইজ বোরিং৷’’