1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্ব মন্দা দূর হওয়া নিয়ে নতুন করে সংশয়

১৮ আগস্ট ২০০৯

বিশ্ব অর্থ বাজারে যে মন্দা চলছে তা থেকে বের হয়ে আসছে একের পর এক দেশ৷ সর্বশেষ জাপান এই মন্দা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে৷ তবে তেলের মুল্যহ্রাস এবং শেয়ার বাজারগুলোতে সূচক পড়ে যাওয়ায় মন্দা দূর হওয়ার ব্যাপারে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/JDBd
ছবি: picture-alliance/dpa

গত বছরের শুরু থেকে গোটা বিশ্বের অর্থ বাজারে যে মন্দার শুরু বলতে গেলে তা থেকে রক্ষা পায়নি ছোট বড় কোন দেশই৷ বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ শিল্পোন্নত দেশগুলো এর শিকার হয়েছে সবচেয়ে বেশি৷ সাধারণত তিন মাস অন্তর দেশগুলোর অর্থনীতির অবস্থা মুল্যায়ন করা হয়ে থাকে৷ তা থেকে দেখা গেছে যে, এ বছরের শুরুর তিন মাসেও জি সেভেনভুক্ত দেশগুলোর অর্থনীতি ক্রমেই নিম্নমুখী৷ এইসব দেশে ভোক্তাদের চাহিদা কমে যাওয়ায় অর্থনীতিবিদরা আশংকা করছিলেন যে বিশ্ব অর্থ বাজারের এই মন্দা আরো বেশ কয়েকদিন বজায় থাকবে৷ তবে এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসের হিসাবে দেখা গেছে যে, বেশ কয়েকটি দেশ ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে৷ তার মধ্যে ইউরোপের জার্মানি এবং ফ্রান্স, তারপর শোনা গেল হংকং এবং সর্বশেষ জাপানের নাম৷ ফ্রান্স এবং জার্মানি উভয় দেশের জিডিপি বা অভ্যন্তরীণ সামগ্রিক উৎপাদনের পরিমাণ এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে বেড়েছে ০.৩ শতাংশ৷ একই সময়ে জাপানের বেড়েছে ০.৯ শতাংশ এবং হংকংয়ের বেড়েছে সবচেয়ে বেশি ৩.৩ শতাংশ৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এখনও ঋণাত্মক রয়ে গেছে৷ একই অবস্থা জি সেভেনের অন্যান্য দেশগুলোরও৷

এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতি জাপান আনুষ্ঠানিকভাবে আর্থিক মন্দার মধ্যে পড়ে গত বছর৷ ক্রমেই নামছিলো দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সূচক৷ তবে অনেকটা নাটকীয়ভাবেই এই বছরের দ্বিতীয় তিন মাসের মেয়াদে দেশটি ঘুরে দাঁড়িয়েছে৷ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মন্দা থেকে উত্তরণের জন্য জাপান সরকার যে ২৬০ বিলিয়ন ডলারের পুনরুদ্ধার কর্মসূচি চালু করেছে তার ফল এটি৷ তবে বিশেষজ্ঞদের মনে এই পুনরুদ্ধার কর্মসূচি দিয়ে কতদিন মন্দাবস্থাকে ঠেকিয়ে রাখা যাবে তা নিয়ে আশংকা রয়েছে৷

BdT - Wirtschaft in Japan
এশিয়াতে সর্ব প্রথম মন্দা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে জাপানিরাছবি: AP

আশংকা অমূলক নয়

বিশেষজ্ঞদের এই আশংকা যে একেবারে অমূলক নয় তা দেখা গেছে গতকাল সোমবারই৷ তেলের দাম কমে গেছে, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শেয়ার বাজারগুলোতেও সূচক নেমে গেছে হঠাৎ করেই৷ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার এশিয়া, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারগুলোতে মোট সূচকের পরিমাণ কমেছে দুই শতাংশ কিংবা তার চেয়েও বেশি৷ এই অবস্থা জুলাই মাসের পর আর দেখা যায়নি৷ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিট এর সূচক কমেছে দুই শতাংশ৷ জাপানের অর্থনীতির উর্ধ্বগতি সত্বেও এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যান্য শেয়ার বাজারগুলোর সূচক কমেছে ৩.৭ শতাংশ যা গত জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন৷ অপরদিকে তেলের দাম গতকাল ৭৬ সেন্ট কমে বিক্রি হয়েছে ৬৬. ৭৫ ডলারে৷ এক পর্যায়ে তেলের দাম মাত্র ৬৫ ডলারে নেমে যায় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি৷

মন্দা কাটছে না এখনই

কয়েকটি দেশে অর্থ বাজারের মন্দাবস্থা কাটিয়ে উঠলেও তাই সামগ্রিকভাবে মন্দা কাটতে আরো সময় লাগবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ জার্মানির ডয়চে ব্যাংক এর জ্বালানি অর্থনীতিবিদ এ্যাডাম সিমেন্সকি বলেছেন, মনে করা হচ্ছে যে অর্থবাজারের এই মন্দা থেকে উদ্ধার পেতে আরো সময় লাগবে৷ কারণ যথেষ্ট পরিমাণ চাহিদা নেই, বিনিয়োগও নেই৷ অর্থ বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন অর্থনীতিতে এখনও ভোক্তাদের আস্থা ফিরে আসেনি, তাই অর্থবাজারের এই মন্দা দূর হতেও সময় লাগছে৷ কারণ বিশ্ব অর্থনীতির মূল চাবিকাঠি যে মার্কিন অর্থনীতির হাতেই৷

প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই