বিশ্ব ইজতেমা শুরু
লাখো মুসলমানের উপস্থিতিতে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমা৷ শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিশ্ব সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়৷ ছবিঘরে তারই কিছু দৃশ্য...
দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্মেলন
বিশ্ব ইজতেমা হলো ভারতীয় উপমহাদেশে সুন্নী মুসলমানদের সবচেয়ে বড় সংঘ তাবলিগ জামাতের বার্ষিক আন্তর্জাতিক সমাবেশ৷ কয়েক লাখ লোকের জমায়েতের কারণে বিশ্ব ইজতেমাকে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্মেলন বলা হয়৷
প্রথম ইজতেমা
১৯৪১ সালে দিল্লির নিজামউদ্দীন মসজিদের কাছে নূহ মাদ্রাসায় তাবলিগ জামাতের প্রথম ইজতেমা হয়৷ প্রায় ২৫ হাজার মানুষ সেখানে অংশ নেন৷ বাংলাদেশে প্রথম ইজতেমা হয় ১৯৪৬ সালে কাকরাইল মসজিদে৷
তুরাগের তীরে
১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের হাজী ক্যাম্পে ও ১৯৫৮ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইজতেমার আয়োজন হয়৷ প্রতি বছর লোক বাড়তে থাকায় ১৯৬৬ সাল থেকে টঙ্গীর তুরাগ তীরে বর্তমান ইজতেমা মাঠে শুরু হয় এই বার্ষিক সম্মিলন৷ পরে সরকারিভাবে তুরাগ তীরের ১৬০ একর জমি স্থায়ীভাবে ইজতেমার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়৷
৫০ খিত্তা
এবারের বিশ্ব ইজতেমায় রাজধানী ঢাকাসহ ৬৪ জেলার মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন৷ মুসল্লিদের জন্য ইজতেমা ময়দানকে জেলাওয়ারী ৫০টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে৷ একেক খিত্তা বা তাঁবু এলাকায় জেলা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে৷ সে অনুযায়ী মুসুল্লিরা অবস্থান করবেন৷
বিভক্তি
প্রতিবছর জানুয়ারি মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন হলেও তাবলিগ জামাতের নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে এবার তা পিছিয়ে যায়৷ নেতৃত্ব তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াছের নাতি দিল্লির মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভির হাতে থাকবে, না দেওবন্দ মাদ্রাসার মাওলানা জুবায়েরের ছেলে জুহাইরুল হাসানের অনুসারীরা এ সংঘের নেতৃত্ব দেবেন– তা নিয়ে এই বিভক্তি৷
২দিন আখেরি মোনাজাত
বিভক্তির কারণে এবার দুইদিন হবে আখেরি মোনাজাত৷ শনিবার মাওলানা জোবায়ের পন্থিদের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে৷ রবিবার থেকে মাওলানা সা’দ পন্থিদের পরিচালনায় ইজতেমা ফের শুরু হবে৷ সোমবার মাওলানা সাদ পন্থিদের আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে ইজতেমা৷
নিরাপত্তা
পুরো ইজতেমা ময়দান নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে৷ এ জন্য ৯ হাজার পুলিশ, দুই শতাধিক ব়্যাব, ৩ শতাধিক আনসার, ২৮০ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন৷ ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের চলাচলের জন্য ১৭টি প্রবেশ পথে আর্চওয়ে বসানো হয়েছে৷ রয়েছে ১৫টি ওয়াচ টাওয়ার৷ তুরাগে নৌ-টহল ছাড়াও ডুবুরীদল মোতায়েন রয়েছে৷
চিকিৎসা সেবা
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, হামদর্দ, ইবনে সিনা, ইসলামিক মিশন, যমুনা ব্যাংক ফাউন্ডেশন, জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, হাফেজি হুজুর সেবা সংস্থা, বঙ্গবন্ধু ইউনানি-আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পসহ বেশ কিছু সংগঠন ইজতেমা ময়দানে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে৷
যাতায়াত
ইজতেমায় মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য ১৩৮টি বিশেষ ট্রেন, ৪০০টি বিআরটিসি বাস ও পর্যাপ্ত লঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ আখেরি মোনাজাতের দিন ১১ জোড়া বিশেষ ট্রেনসহ ইজতেমায় ১২০টি ট্রেন টঙ্গিতে যাত্রাবিরতি করবে৷ এছাড়া সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তুরাগে ৭টি ভাসমান ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে৷
এফএ/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)