1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিরাটের বিরাট হয়ে ওঠার গল্প

১৮ মে ২০২০

কীভাবে বিরাট কোহলি হওয়া যায়? কেমন হওয়া উচিত ক্রিকেট দর্শন? জবাব দিলেন বিরাট নিজেই। বাংলাদেশের ক্রিকেটার তামিম ইকবালকে।

https://p.dw.com/p/3cQr3
ছবি: AFP/D. Sarkar

বিরাট কোহলি শোনালেন নিজের বড় হয়ে ওঠার কাহিনি বা বলা ভালো এই সময়ের এক যুবকের সফল ক্রিকেটার হয়ে ওঠার রসায়ণ। ক্রিকেট প্রতিভা থাকলে কোন রসায়ণে ভর করে যে কোনও দেশের যুবক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দুনিয়ায় সাফল্যের শিখরে উঠতে পারা যায়, বিরাট সে কথাই বললেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের তরফে তামিম ইকবাল তাঁর ফেসবুক লাইভ চ্যাটে ধরেছিলেন বিরাটকে। তামিম বারবার করে জানতে চেয়েছেন, বিরাটের সাফল্যের পিছনের গল্প। ক্রিকেট মানসিকতা থেকে শুরু করে বিরাটের মন খারাপ--  সব বিষয়েই বিরাট খোলাখুলি জবাব দিয়েছেন। সেই কথোপকথন থেকে বেরিয়ে এসেছে বিরাটের ইস্পাতকঠিন মানসিকতা, পরিবর্তনকে মেনে নেওয়া, অদম্য জেতার ইচ্ছে এবং সর্বোপরি ঠিক মানসিকতা নিয়ে লক্ষ্যভেদের গল্প।

তামিমঠিক সেই প্রশ্নগুলো করেছেন, যা বড় ম্যাচে গিয়ে বারবার তাঁরা মুখোমুখি হন। সেই চাপ, বিপক্ষের বিশাল অঙ্কের রান, নেট প্র্যাকটিস কীভাবে করা উচিত, কীভাবে প্রস্তুতি নেন বিরাট, এমনকী তিনি যখন বড় অঙ্কের রান ধাওয়া করে জিততে চান, তখন কী ভাবেন, কেমন মানসিকতা নিয়ে চলেন? কেন তিনি নিজের স্টান্স বদল করলেন?

বিরাট বললেন, প্রথমবার ভারতের হয়ে সুযোগ পাওয়ার পর তাঁকে কিছুদিন বসে থাকতে হয়েছিলো। তারপর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ভালো খেলে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হয়েও শান্তি পাচ্ছিলেন না। সেঞ্চুরি পাওয়ার পর সেই স্বস্তি এলো। তিনি বুঝতে পারলেন, ক্রিকেটে লম্বা ইনিংস খেলার জন্য তিনি এসেছেন। বিরাটের কথায়, সাফল্যের জন্য সব চেয়ে জরুরি হলো মানসিকতা। মানসিকতা ঠিক থাকলে একজন ক্রিকেটার ম্যাচ জেতাতে পারেন। মনোভাব ঠিক হলে টিমকে জেতানো সম্ভব।

সেই সঙ্গে রয়েছে জয়ের খিদে ও আত্মবিশ্বাস। বিরাট জানিয়েছেন, আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন ভারত রান তাড়া করলে হেরে গেলে নিজে ভাবতাম, আমি থাকলে ঠিক জিতিয়ে দিতাম। এই ইস্পাত কঠিন মানসিকতাই বিরাটকে তৈরি করে দিয়েছে। বড় ক্রিকেটার করে দিয়েছে। একটা উদাহরণ দিয়েছেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচ। ৪০ ওভারে ৩৩০ করতে হবে। তখন ক্রিজের উল্টোদিকে থাকা ক্রিকেটারকে বিরাট বলেছিলেন, আমরা দুইটি টি২০ ম্যাট খেলব। প্রথম কুড়ি ওভারে দুইটি উইকেট পড়ে গেলেও যদি ভদ্রস্থ রান ওঠে তা হলে, পরের ২০ ওভারে ২০০-র বেশি রান তোলা যাবে।

এই আত্মবিশ্বাস বিরাটের এতটাই বেশি যে, ম্যাচের আগে নেটে যদি একটা সেশন ভালো ব্যাটিং প্র্যাকটিস হয়, তা হলে তিনি নেট থেকে বেরিয়ে যান। একটু ফিল্ডিং প্র্যাকটিস করেন। কফি খান। হেঁটে আসেন। চেতেস্বর পূজারা আবার উল্টো মেরুতে। তিনি তিন ঘন্টা ব্যাটিং প্র্যাকটিস করতে চান।

নিজের ব্যাটিং স্টান্স কেন বদলালেন?বিরাটেরজবাব, তিনি মাঠের সর্বত্র শট মারতে চাইতেন। স্ট্যাটিক পজিশনে থেকে তা করা সম্ভব হচ্ছিল না। সেটা শচিন তেন্ডুলকর পারতেন। তাই কোচের পরামর্শে স্টান্স বদল করলেন। সুফল পেলেন। তাই তাঁর পরামর্শ, নতুন কিছু পরীক্ষা করে দেখা থেকে পিছিয়ে আসা উচিত নয়, বিশেষ করে সেটা যদি ভালোর জন্য হয়। আর তিনি যখন ম্যাচ খেলতে নামেন, তখন কোনও নেতিবাচক চিন্তা তাঁর মনে ঠাঁই পায় না।

এই হলো বিরাট কোহলি, যিনি শচিন, সৌরভ, দ্রাবিড়, লক্ষ্মণ পরবর্তীকালে ভারত তথা বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যান। আর এই হলো তাঁর বিরাট হয়ে ওঠার রসায়ণ। যিনি একটা কথা বিশেষভাবে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ফিটনেস এবং ডায়েটে কখনও আপস করা যায় না।

জিএইচ/এসজি(তামিম ইকবালের ফেসবুক শো)