1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিপদসীমার অনেক উপরে দিল্লির বায়ুদূষণ

৩১ অক্টোবর ২০২২

দিল্লির বায়ুদূষণের মাত্রা গড়ে ৪০০ একিউআই-য়ের আশপাশে। স্বাভাবিকের চেয়ে যা বহুগুণ বেশি। গলা এবং ফুসফুসের রোগ বাড়ছে।

https://p.dw.com/p/4IsCZ
বায়ু দূষণ
ছবি: Hindustan Times/imago images

দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে দূষণের মাত্রা কমার কোনো সম্ভাবনা নেই বরং তা আরো বাড়তে পারে। হাওয়ার গতিবেগ এবং অভিমুখের উপর দূষণের মাত্রা নির্ভর করে। দিল্লির ভিতর হাওয়া যেভাবে বইছে, তাতে দিল্লির ধূলিকণা বাইরে বের হতে পারছে না। আবহাওয়া আচমকাই অনেক শুকনো হয়ে যাওয়ার জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ধূলিকণা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে। সে কারণেই দূষণের মাত্রা একধাক্কায় এতটা বেড়ে গেছে। তার উপর দীপাবলির দূষণ আবহাওয়ার আরো ক্ষতি করেছে।

দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই রোববার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দিল্লি এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে সমস্ত বাড়ি তৈরি এবং বাড়ি ভাঙার কাজ বন্ধ থাকবে। নিয়ম মানা হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য ৫৮৬টি দল তৈরি করা হয়েছে। যারা গোটা দিল্লিতে ছড়িয়ে পড়বে। কোথাও বাড়ি তৈরির বা ভাঙার কাজ দেখলেই তারা পুলিশকে জানাবে এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরিবেশবিদরা জানাচ্ছেন, এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ৫০ এর মধ্যে থাকলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক নয়। ৫০ থেকে ১০০ মোটামুটি। ১০০ থেকে ২০০ একিউআই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। ২০০ থেকে ৩০০ খারাপ। ৩০০ থেকে ৪০০ অত্যন্ত খারাপ। ৪০০ থেকে ৫০০ একিউআই শ্বাস নেওয়ার যোগ্য নয়।

দিল্লির গড় বায়ু দূষণের মাত্রা এখন ৪০০ একিউআই-য়ের ধারেকাছে। একটি হিসেব দিলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। সোমবার সকালে দিল্লির পাঞ্জাবি বাগের একিউআই ছিল ৩৭৫। শাদিপুরের দূষণের মাত্রা ৪০৬। ওয়াজিরপুরের ৪০৪। এনএসআইটি দ্বারকা ৩৯৯। অশোক বিহার ৪০০। বিমানবন্দর ৩৫৫। রোহিনী ৩৯৮। নেহরু নগর ৩৯৭।

পরিবেশবিদ দীপায়ন দে-র বক্তব্য, ''দূষণের মাত্রা টানা বেশ কিছুদিন এমন থাকলে বাড়ি থেকে বার হওয়াই বিপজ্জনক। এর ফলে দ্রুত ফুসফুসের রোগ হতে পারে। গলার সমস্যা হবেই।'' দীপায়নের বক্তব্য, প্রতিবছরই দূষণের মাত্রা বাড়লে সরকার পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু স্থায়ী কোনো সমাধানের পথে হাঁটে না। বছরের এই সময়ের জন্য আগে থেকেই কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করে রাখলে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি কিছুটা হলেও এড়ানো সম্ভব। দীপায়নের বক্তব্য, দিল্লির ভৌগোলিক অবস্থানও এই দূষণের জন্য খানিকটা দায়ী। তবে সচেতন থাকলে দূষণের মাত্রা অনেকটাই কমানো সম্ভব।

শুধু দিল্লি নয়, পার্শ্বর্তী পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারেও বায়ুদূষণের মাত্রা আশঙ্কাজনক। উত্তরপ্রদেশের কোথাও কোথাও দূষণের মাত্রা ৫০০ পর্যন্ত ছুঁয়েছে।

দিল্লি-নয়ডা সীমানায় থাকেন চিকিৎসক বিষ্ণু দে। ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, ''গত এক মাসে ফুসফুস এবং গলার সমস্যা নিয়ে রোগী আসার পরিমাণ ১০ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।'' বিষ্ণুর বক্তব্য, সাময়িক স্বস্তির জন্য কিছু ওষুধ দিলেও রোগ সারানোর ওষুধ দেওয়া যাচ্ছে না। দূষণের মাত্রা না কমলে ওষুধেও কাজ হবে না। এই পরিস্থিতিতে যতটা সম্ভব বাড়ির ভিতর থাকলেই ভালো।