1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিক্ষোভের আগুন হোয়াইট হাউসের সামনে

১ জুন ২০২০

পুলিশি অত্যাচারে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদে অ্যামেরিকা জুড়ে বিক্ষোভ বাড়ছে। বিক্ষোভের আগুন এবার এসে পড়লো হোয়াইট হাউসের সামনে।

https://p.dw.com/p/3d6EG
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Minchillo

রোববার রাতে হোয়াইট হাউসের পাশের রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।হাজার খানেকের বেশি বিক্ষোভকারী রাস্তার সাইন পোস্ট, প্লাস্টিকের ডিভাইডার, গাছের শুকনো ডাল জড়ো করে তাতে আগুন ধরায়। এক বিক্ষোভকারী আবার তাতে অ্যামেরিকার একটি পতাকা ফেলে দেয়। হোয়াইট হাউসের সামনের গেটেও পাথর ও বোতল ছোঁড়ে বিক্ষোভকারীরা। এরপর হোয়াইট হাউসের বাইরের সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবর, গোয়েন্দা বিভাগের কর্মীরা বিক্ষোভের ফলে চিন্তিত হয়ে সামান্য সময়ের জন্য হলেও প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসের ভিতরে বাঙ্কারে নিয়ে গিয়েছিলেন। জঙ্গি হামলা থেকে বাঁচার জন্য অতীতে এই বাঙ্কার তৈরি করা হয়েছিল।

ট্রাম্পের পরামর্শদাতারা তাঁকে বলেছেন, তিনি যেন অবিলম্বে টিভিতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তবে ট্রাম্প এখনও পর্যন্ত সেই পরামর্শ মানেননি। তিনি টুইট করে বলেছেন, ''ডেমোক্র্যাট মেয়র ও গভর্নররা যেন কড়াভাবে বিক্ষোভের মোকাবিলা করেন।

 তবে রোববার তিনি অন্তরালেই থেকেছেন। হোয়াইট হাউসেও কর্মীদের বলে দেওয়া হয়েছে, বিক্ষোভ চলতে থাকলে তাঁরা যেন না আসেন।

বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয় পুলিশের অত্যাচারে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর থেকে। যত দিন যাচ্ছে, ততই বিক্ষোভ বাডছে। রোববার হোয়াইট হাউসের পাশের একটি পার্কেও বিক্ষোভকারীরা জড়ো হলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়, পেপার স্প্রে করে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গ্রেনেডও ফাটানো হয়। ওয়াশিংটন মনুমেন্টের কাছে বিক্ষোভকারীরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভবনের কাচ ভেঙে দেয়, রাস্তায় গাড়ি উল্টিয়ে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

অ্যামেরিকার বিভিন্ন জায়গায় রাতে কার্ফু জারি করা হয়েছে, গণপরিবহনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিপুল সংখ্যায় ন্য়াশনাল গার্ডের জওয়ানদের রাস্তায় নামানো হয়েছে। তাঁরা রীতিমতো কড়াভাবে বিক্ষোভের মোকাবিলা করছেন। তা সত্ত্বেও বিক্ষোভ থামানো যায়নি। রোববার অ্যামেরিকা জুড়ে কয়েক লাখ বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে পড়েন। প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। তাঁদের প্রতিবাদ ছিল সহিংস। বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। সরকারি ভবনের কাচ ভাঙা হয়।

ফিলাডেলফিয়ায় বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর এবং মলোটভ ককটেল ছোঁড়ে। সান ফ্রান্সিসকোতে মুখোশ পরে কিছু লোক একটি বড় দোকানের দরজা ভেঙে ঢুকে লুঠতরাজ করে।  মিনেপোলিসে আবার এক ট্রাক ড্রাইভার বিক্ষোভকারীদের ওপর ট্রাক চালিয়ে দিয়েছে। ট্রাক চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওয়াশিটন ডিসি-তে ১৭০০ জওয়ানকে নামানো হয়েছে।

ফ্লয়েডকে হত্যার প্রতিবাদে বার্লিনও লন্ডনেও বিক্ষোভ হয়েছে। বার্লিনে কয়েক হাজার মানুষ অ্যামেরিকার দূতাবাসের সামনে প্রতিবাদ দেখান। তাঁদের হাতের পোস্টারে লেখা ছিল, ‘‘আমাদের হত্যা করা বন্ধ করুন।'' জার্মান ফুটবল লিগেও প্রতিবাদ হয়েছে। বুন্দেসলিগার ম্যাচে গোল করার পর মার্কাস থুরাম হাঁটু মুড়ে মাথা নত করে একটু বসেছিলেন। নীরব প্রতিবাদ। আরেকটি ম্যাচে জেডন সাঞ্চো গোল করার পর জার্সি তোলেন। দেখা যায় সেখানে লেখা রয়েছে, ‘‘জাস্টিস ফর জর্জ ফ্লয়েড।'' এর জন্য অবশ্য তাঁকে হলুদ কার্ড দেখতে হয়। পথ শিল্পীরা দেওয়ালে ফ্লয়েডের ছবি এঁকে সুবিচার দাবি করেছেন।

লন্ডনেও বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে পথে নামেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। তাঁরা ট্রাফালগার স্কয়ারে হাঁটু মুড়ে বসে প্রতিবাদ করেন। পার্লামেন্টের পাশ দিয়ে এগিয়ে যান। মার্কিন দূতাবাসে যাওয়ার রাস্তায় পুলিশ তাঁদের পথ আটকায়। 

আর এই বিক্ষোভের খবর করতে গিয়ে অ্যামেরিকায় পুলিশি বাড়াবাড়ির মুখে পড়ছেন সাংবাদিকরা। শুক্রবার সিএনএনের সাংবাদিক ও তাঁর সঙ্গীদের বিক্ষোভের খবর লাইভ দেখানোর সময় গ্রেফতার করা হয়। শনিবার কেনটাকিতে ওয়েভ নিউজের এক সাংবাদিকের দিকে পেপার গান ছোঁড়ে পুলিশ। রয়টার্সের সিকিউরিটি অ্যাডভাইজারের গায়ে রবার বুলেট লেগেছে। গত তিনদিনে অন্তত দুই ডজন সাংবাদিক আক্রান্ত হয়েছেন।

জিএইচ/এসিবি  (এপি, রয়টার্স, এএফপি)