1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‌বিকোচ্ছে, কিন্তু কী বই?‌

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
১১ অক্টোবর ২০১৯

পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থীদের ভোট কমতে কমতে এখন সাত শতাংশেরও কমে ঠেকেছ৷ কিন্তু পুজোর সময় মার্ক্সবাদী সাহিত্যের স্টলে নাকি দেদার বিক্রি হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/3R8AH
Karl Marx in Chemnitz
ছবি: picture alliance/Arco Images/Schoening

এবার দুর্গাপুজা শেষ হতে না হতেই বাজারে জোর খবর- শহরে, জেলায় বিভিন্ন বড় বারোয়ারি পুজোর মণ্ডপের বাইরে মার্ক্সবাদী সাহিত্যের স্টলে স্টলে বেশ বিক্রিবাটা হয়েছে৷ মার্ক্সবাদী, অর্থাৎ বামপন্থী সাহিত্য, যাকে কেউ কেউ ‘‌প্রগতিশীল সাহিত্য'‌ এর তকমা দিয়ে থাকেন, তার বিক্রি এবার পুজোয় নাকি দেড় কোটি ছাড়িয়েছে৷ এমন আগ্রহ নাকি সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি৷ তাহলে কি ফের বামপন্থায় মনোযোগী হচ্ছে বাঙালিরা, এই প্রশ্নও উঠেছে৷

 প্রথাগত ধর্মাচরণে বিশ্বাসহীন বামপন্থীরা মূলত জনসংযোগের জন্যই বাংলার সবথেকে বড় উৎসবটিতে বইয়ের স্টল দিয়ে থাকেন৷ সিপিআইএম, সিপিআই থেকে শুরু করে এসইউসিআই, সমস্ত বাম দল বইয়ের পশরা সাজিয়ে বসে৷ এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি৷ কিন্তু সেসব বইয়ের স্টলে বাঁধভাঙা ভিড় সেভাবে চোখে পড়েনি৷ কিন্তু চারদিনের উৎসবে টাকার অঙ্কে দেড় কোটি নেহাত কম নয়৷

 বামপন্থী সাহিত্যের অন্যতম বড় প্রকাশনা সংস্থা ন্যাশনাল বুক এজেন্সি এবার পুজোর পর হিসেব দিয়েছে, কলকাতার কোন কোন অঞ্চলে মার্ক্সবাদী সাহিত্যের স্টলে এবার কত লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে৷ বেস্ট সেলার হিসেবে তারা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের লেখা, সদ্য প্রকাশিত ‘স্বর্গের নিচে মহাবিশৃঙ্খলা'‌ বইটির কথা বলছে, যার প্রথম সংস্করণ পুজোর চারদিনে নিঃশেষিত৷ স্বেচ্ছা অন্তরীণ বুদ্ধদেববাবুর আরেকটি জনপ্রিয় বই ‘‌ফিরে দেখা'‌ এর দ্বিতীয় সংস্করণের শেষ কপিটিও এবার নাকি বিক্রি হয়ে গেছে৷ ন্যাশনাল বুক এজেন্সি দাবি করেছে, বিভিন্ন জেলায় বইয়ের স্টল থেকে বিক্রির হিসেব এসে পৌঁছলে টাকার অঙ্কটা নিশ্চিত আরও বাড়বে৷

প্রশান্ত ভট্টাচার্য

কিন্তু কারা কিনছেন এসব বই? বামপন্থীদের ভোট যেখানে প্রতি নির্বাচনে একটু একটু করে কমে যাচ্ছে, সাংগঠনিকভাবে বামেরা যেখানে বস্তুত অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ছে, সেখানে বামপন্থী সাহিত্যে কাদের এত উৎসাহ?‌

বিশিষ্ট বামপন্থী কবি ও প্রাবন্ধিক প্রশান্ত ভট্টাচার্য বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখার পর বলেন, মূলত কম বয়সিরা, যারা এই মুহূর্তে বামপন্থী ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, তাদের আগ্রহ দেখা গেছে মার্ক্সবাদ, লেনিনবাদ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার৷ কিন্তু তারা কি চাহিদা মতো বই পাচ্ছে?‌

প্রশান্তবাবু একটি ঘটনার কথা জানালেন, যেখানে কমিউনিজম নিয়ে জানতে আগ্রহী একজনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ম্যাক্সিম গোর্কির গল্পসংগ্রহ৷

সোজা কথায়, বামপন্থা নিয়ে নবীন আগ্রহের খোরাক জোগানোর সংস্থান নেই বামপন্থীদেরই৷ গল্প-উপন্যাস বিক্রি হচ্ছে, বিক্রি হচ্ছে রুশ সাহিত্যও৷ যদিও এখন সেগুলো কাউকে মার্ক্সবাদে দীক্ষিত করতে পারবে না৷ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বইও বিক্রি হচ্ছে৷ এর মানে এই নয়, যে বামদের ভোট বেড়ে যে সাত থেকে সতেরো হবে!‌