1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাবার কোলে শিশু হত্যা, তিন জন গ্রেপ্তার

১৫ এপ্রিল ২০২২

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় চার বছর বয়সি শিশু তাসফিয়া হত্যার মামলায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

https://p.dw.com/p/49zrk
প্রতীকী ছবিছবি: picture-alliance/dpa/O. Killig

তাসফিয়া আক্তার জান্নাতের খালু হুমায়ুন কবির বৃহস্পতিবার দুপুরে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরো ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়৷ এ পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

বেগমগঞ্জ উপজেলার পূর্ব হাজীপুর গ্রামে বুধবার একদল যুবকের হামলায় তাসফিয়া আক্তার জান্নাত নিহত হয়; আহত হন তার সৌদি আরব প্রবাসী বাবা আবু জাহের।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মামলার এজাহারে পার্শ্ববর্তী দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের রিমন, মহিন, রহিম, আকবর, সুজনসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্য থেকে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের মৃত নূর নবীর ছেলে এমাম হোসেন স্বপন, লতিফপুরের সামছুদ্দিনের ছেলে জসিম উদ্দিন বাবর ও দেলওয়ার হোসেনের ছেলে দাউদ হোসেন রবিন।

ওসি মীর জাহিদুল হক রনি আরো জানান, তিনজনকে বুধবার রাতে প্রথমে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করলেও পরে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

জন্মের বছর পর বাবাকে প্রথম দেখে তাসফিয়া

তাসফিয়ার স্বজনরা ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তার জন্মের সময় বাবা আবু জাহের সৌদি আরব ছিলেন। এর মধ্যে তিনি আর দেশে আসেননি। তাই বাবাকে পেয়ে আনন্দে উদ্বেলিত ছিলে চার বছরের এই শিশু। সব সময় বাবার সঙ্গেই কাটছিল তার সময়।

বুধবার বিকাল ৩টায় বাবার সঙ্গে বাড়ির পাশের মামুনের দোকানে চকলেট কিনতে গিয়েছিল তাসফিয়া। প্রত্যক্ষদর্শী দোকানি মামুনের ভাষ্য, পার্শ্ববর্তী দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের রিমন, মহিন, রহিম, আকবর, সুজনসহ ১৫-২০ জনের একটি দল তার দোকানে আসে। তারা আবু জাহের ও তার মেয়েকে লক্ষ্য করে প্রথমে এক রাউন্ড গুলি করে। ওই গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে মেয়েটিকে [তাসফিয়া] ইট দিয়ে আঘাত করা হয়৷

‘‘এক পর্যায়ে তারা দোকান থেকে বের হয়ে বাড়িতে যাওয়ার সময় পিছন থেকে এক বন্দুকধারী ফের দুই রাউন্ড গুলি করে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আবু জাহের ও মেয়ে তাসফিয়া লুটিয়ে পড়ে।’’

মাটি কাটা নিয়ে বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। তবে তাসফিয়ার বাবা এই মাটি কেনা-বেচায় যুক্ত নন।

স্থানীয়রা জানান, জমির মাটি কাটা নিয়ে আবু জাহেরের বাড়ির এক ব্যক্তির সঙ্গে আরেকজনের বিরোধ রয়েছে। এই ঘটনায় সালিশ-বিচারও হয়েছে। ওই সালিশে তাসফিয়ার বাবা আবু জাহের উপস্থিত ছিলেন। সে কারণে হামলাকারীরা আবু জাহেরের উপর ক্ষুব্ধ ছিল।

হামলাকারীরা গুলি করার সময় সেই ঘটনার উল্লেখ করেছিল বলে স্থানীয়দের ভাষ্য।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গুলিতে তাসফিয়ার মাথাসহ পুরো শরীর ঝাঁজরা হয়ে যায়। ঢাকায় নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। গুলিতে আবু জাহেরের চোখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ক্ষতবিক্ষত হয়।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খীসা বলেন, এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকি আসামিদের ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত তাসফিয়ার মরদেহ বাড়িতে নেওয়া হলে স্বজন ও এলাকাবাসী প্রায় এক ঘণ্টা চৌমুহনী-ফেনী সড়কের সোরেগো পুল অবরোধ এবং হত্যা ও সন্ত্রাসী হামলার বিচার দাবি করে।

ওসি জাহেদুল হক রনি জানান, এ সময় সড়কে দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হয়। পরে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দোষীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য