বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ১৩৮টি সংস্থা
২৫ নভেম্বর ২০০৮বিশেষ করে যেসব দেশে গণতন্ত্র এখনো দৃঢ়মূল হয়নি এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি, সেই সব উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশেই আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়টি স্বীকৃত রীতি হয়ে উঠেছে৷
পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি নির্বাচনে কারচুপি ও জবরদস্তির প্রবণতাকে নিরুত্সাহিত করে বলেই মনে করা হয়৷ বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ প্রথম শুরু হয় ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে৷ সীমিত পর্যায়ে অল্প সংখ্যক দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ভ্রাম্যমাণ পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করেন সে সময়ে৷ সংগঠিত পর্যবেক্ষণ শুরু হয় ১৯৯০ সালের উপজেলা নির্বাচনের সময়ে৷ এরপর ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে যথাক্রমে ত্রিশ হাজার ও প্রায় চল্লিশ হাজার দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার তরফে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে৷ ২০০১ সালের নির্বাচনে পর্যবেক্ষকের সংখ্যা ছিল প্রায় পাঁচ লাখ৷
বাংলাদেশের এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ১৩৮টি সংস্থাকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করেছে নির্বাচন কমিশন৷ ৩১৯টি সংস্থা নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদন করেছিল৷ পর্যবেক্ষণ নীতিমালা অনুযায়ী নিবন্ধিত সংস্থা ছাড়া কেউ এবার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারবে না৷ আর পর্যবেক্ষণ নীতিমালা মেনে এসব সংস্থাকে বাছাই করা হয়েছে৷
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা জানান, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়টিকে এবার খুব গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে৷ আসন্ন নির্বাচনে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোকেই নিবন্ধন দিতে কমিশন বদ্ধপরিকর৷ চূড়ান্তভাবে বাছাইয়ের পর নিবন্ধিত সংস্থাগুলো আগামী এক বছর কমিশনের সব নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারবে৷
জানা গেছে, বিভিন্ন দাতা সংস্থা বাংলাদেশের স্থানীয় বিভিন্ন নিবন্ধিত এনজিওর মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে৷এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার বিদেশি প্রতিনিধিরা সরাসরিও নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আসবেন৷ ইতিমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের ঘোষণা দিয়েছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, বাংলাদেশের সেনা সমর্থিত সরকার আগামী মাসে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছে৷ বাংলাদেশে গত দুই বছর ধরে জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে যা ইইউ'র স্বাভাবিক নিয়মনীতির সঙ্গে খাপ খায় না৷৷
বাংলাদেশে ইউরোপীয় কমিশনের প্রতিনিধি দলের প্রধান স্টিফেন ফ্রয়েন জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার না করলেও এর অনেক নিয়মকানুন শিথিল করেছে, আর তাই আসন্ন নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইইউ৷