বাংলাদেশের কয়েকটি ডিজিটাল জালিয়াতির ঘটনা
তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে৷ ছবিঘরে এমন কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ থাকছে৷
রিজার্ভ চুরি
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ডিজিটাল জালিয়াতির শিকার বাংলাদেশ ব্যাংক৷ ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে হ্যাকাররা ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেয়৷ আরো দুই কোটি বা ২০ মিলিয়ন ডলার সরানোর কাজও প্রায় শেষ করে ফেলেছিল তারা৷ তবে যে প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা সরানোর চেষ্টা করা হয়, সেই প্রতিষ্ঠানের নামের বানানে ভুল করায় ওই ট্রান্সফারটি আটকে যায়৷
ভর্তি পরীক্ষা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা শুরুর পর ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র বাইরে পাঠানো এবং একইভাবে উত্তর সংগ্রহ করার মাধ্যমে জালিয়াতির কিছু উদাহরণ গত কয়েকবছরে দেখা গেছে৷ এভাবে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে তাদের বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ৷ এছাড়া ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে এসএসসি, এইচএসসি, মেডিকেল, ব্যাংকসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনাও ঘটেছে৷
এটিএম থেকে টাকা উত্তোলন
২০১৯ সালে ডাচ বাংলা ব্যাংকের একটি এটিএম মেশিনের সিস্টেম হ্যাক করে টাকা তুলে নেয়া হয়েছিল৷ এর আগে গ্রাহকের কার্ডের তথ্য চুরি করে ক্লোন কার্ড বানিয়ে এটিএম বুথ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটলেও মূল সার্ভারকে অন্ধকারে রেখে কোনো নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট থেকে না নিয়ে বুথ থেকে টাকা বের করার ঘটনা বাংলাদেশে ঐটাই প্রথম ছিল৷
সার্ভার হ্যাক করে পণ্য খালাস
কাস্টমস কর্মকর্তাদের সরকারি আইডি ও পাসওয়ার্ড চুরি করে তিন বছর ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সার্ভারে ৩,৭৭৭ বার ঢুকে একটি জালিয়াতি চক্র চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ‘শত শত কোটি টাকার পণ্য’ খালাস করে নেয় বলে ২০১৯ সালে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের তদন্তে ধরা পড়েছিল৷
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি
চীনাবাদাম ও জলপাইয়ের কথা বলে আমদানি করা শিশুখাদ্য গুঁড়োদুধ খালাসের ছাড়পত্রের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করেছিল ঢাকার সিয়াম এন্টারপ্রাইজ ও তাদের সিএন্ডএফ প্রতিনিধি চট্টগ্রামের খান এন্টারপ্রাইজ৷ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি গতবছর নভেম্বরে এই তথ্য দিয়েছিল৷
‘স্বপ্ন’এর সিস্টেম হ্যাক
চলতি বছরের জুন-জুলাই মাসে সুপার শপ ‘স্বপ্ন’এর সিস্টেম হ্যাক করে ডিজিটাল ভাউচার তৈরির মাধ্যমে ১৮ লাখ টাকার মালামাল হাতিয়ে নেয় একটি চক্র৷ পরে সেগুলো ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে ২৫ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি করা হয়৷ এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল৷
জালিয়াতিতে জড়িত তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ
নাম নাজমুস সাকেব নাঈম৷ গতবছর আগস্টে তাকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানায়, ‘‘তিনি বিভিন্ন ব্যাংকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে সিস্টেম আপডেটের কাজ করেন৷ বিশ্বের ৮-৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি বক্তা সাকেব৷ বাংলাদেশেও নামকরা কিছু প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে আছেন৷’’ পাপুয়া নিউগিনি প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াহেদের ভিসা কার্ড জালিয়াতি করে সাড়ে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তিনি গ্রেপ্তার হন৷