বাংলাদেশে করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ শুরু
দেশব্যাপী করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হয়েছে। ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান শুরুর পর থেকে ডোজের টিকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়েছেন ৫৫ লাখ ৬৮ হাজার ৭০৩ জন। দ্বিতীয় ডোজের পাশাপাশি প্রথম ডোজও চলছে। ছবিঘরে বিস্তারিত...
প্রথম ডোজ অব্যাহত আছে
প্রথম ডোজের টিকা প্রয়োগ ৬ এপ্রিল শেষ হলেও যারা নিবন্ধন করেছেন কিন্তু টিকা দিতে পারেননি, তারা টিকা দিতে পারবেন। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “ ৮ এপ্রিল শুরু হওয়া দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগের পাশাপাশি প্রথম ডোজের টিকা নেওয়ার কার্যক্রমও চালু থাকবে৷” বাংলাদেশে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ‘কোভিশিল্ড’ দেওয়া হচ্ছে৷
অধিকাংশই এসেছেন দ্বিতীয় ডোজ নিতে
শহীদ সোহরাওয়ার্দি হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটসহ আরো বেশ কয়েকটি টিকাকেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, আগতদের অধিকাংশই দ্বিতীয় ডোজের জন্য এসেছেন। একজন কর্মকর্তা জানান, এখন যারা দ্বিতীয় ডোজের জন্য এসেছেন, তারা সবাই ফেব্রুয়ারির ৭,৮,৯ তারিখে প্রথম ডোজ টিকা দিয়েছেন।
প্রথম ডোজের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সামান্য
জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের সাবেক চিকিৎসক মো. আবুল কাশেম স্ত্রীসহ এসেছেন দ্বিতীয় ডোজ নিতে। প্রথম ডোজের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সামান্য জ্বর এবং হাতব্যথা ছাড়া তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল না আমার৷”
মার্চে আসেনি
জানুয়ারি থেকে পরবর্তী ৬ মাসে ৫০ লাখ করে মোট ৩ কোটি ডোজ টিকার চালান আসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত চালান এসেছে ৫০ লাখ। শেষ ২০ লাখ ডোজের চালান এসেছে ফেব্রুয়ারির ২২ তারিখে। মার্চে কোনো চালান আসেনি। এদিকে করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণে ভারতে উৎপাদিত টিকা আমদানি বন্ধ করেছে দেশটির সরকার।
অসন্তোষ
দ্বিতীয় ডোজের প্রথম দিনে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ফটোকপির জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন টিকাগ্রহীতারা। একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফটোকপির কথা আগে আমাদের জানানো হলে আমরা সেটি নিয়েই টিকাকেন্দ্রে আসতাম। এতদিন পরে এসেও এমন অব্যবস্থাপনা মানা যায় না।
শিক্ষকদের টিকাদান
গত বছরের মার্চের ১৭ তারিখ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। সরকার ঘোষণা করেছে, ঈদের পর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। শিক্ষকরা সে ক্ষেত্রে যেন নিরাপদে থাকেন, তাই তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
ভ্যাকসিন পাসপোর্ট
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে আসা আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ভ্যাকসিন পাসপোর্ট দেওয়ার ব্যাপারে প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি নিয়েছি। যেহেতু বিদেশে যেতে কোভিডমুক্তি বা ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট লাগে, সুতরাং আমরা এটি চালু করতে পারলে টিকাগ্রহীতারা উপকৃত হবেন।’’
পৃথক টিকা বুথ
জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা গেল সেখানে বয়স্ক, মুক্তিযোদ্ধা এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য আলাদা কক্ষে টিকা প্রয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই উদ্যেগের প্রশংসা করেছেন টিকা নিতে আসা ব্যক্তিরা।
পর্যাপ্ত মজুদ আছে?
করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজের পর্যাপ্ততা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, “যারা প্রথম ডোজ দিয়েছেন, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার মতো টিকা আমাদের নেই।’’ এদিকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, “ ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া নিয়ে কোনো সংশয় নেই।’’
টিকা নিয়েও পজিটিভ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হাশিম রেজা করোনা টিকার প্রথম ডোজ ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখে নেওয়ার পর মার্চের ২৪ তারিখেই করোনা পজিটিভ হন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার পরিচিত বেশ কয়েকজন চিকিৎসক ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও করোনা পজিটিভ হয়েছেন। তবে টিকা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই, কারণ, টিকা নেওয়ার ফলে সংক্রমণ পরবর্তী জটিলতা অনেকাংশে কমে যায়।’’