বাংলাদেশ উপকূলে দুর্বল ‘মোরা’
উত্তেজনা আর উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে উপকূল অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’৷ ভোরে উপকূল অতিক্রমের সময় বাতাসে এর গতি ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি ছিল৷ তবে স্থলভাগে এটি দুর্বল হয়ে যায়৷ ২৫ লাখ মানুষ ঝুঁকিতে থাকলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়নি৷
আশ্রয়ের খোঁজে মানুষ
নদীমাতৃক বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে নদী ও সাগরের মাঝে বহু জনপদ রয়েছে, যেগুলো কার্যত মূল ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন৷ নদীতে একটু পানি বাড়লেই ডুবে যায় এ সব এলাকার নিম্নাঞ্চল৷ ঝড়-বন্যায় নিরাপদে থাকার মতো ঘর নেই অধিকাংশ অধিবাসীর৷ তাই ঝড়ের দিনে ছুটতে হয় আশ্রয় কেন্দ্রের খোঁজে৷
গবাদি পশু কোথায় যাবে
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বন্যা-জলোচ্ছ্বাস একটি স্বাভাবিক চিত্র৷ গত কয়েক দশকে এ রকম দূর্যোগে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে৷ তবে এখন দক্ষিণাঞ্চলে প্রচুর আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে উঠেছে৷ অনেক ক্ষেত্রে দক্ষিণের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকেই আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করা হয়৷ সেভাবেই এগুলোকে তৈরি করা হয়েছে৷ তবে গবাদি পশুর আশ্রয়ের জন্য এখনো সুব্যবস্থা নেই৷
উত্তাল সাগর
ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে উত্তাল সাগর৷ এটি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে এটি বাংলাদেশ অতিক্রম করেছে৷ ঘূর্ণিঝড়ের সময় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর এবং পায়রা ও মোংলা বন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর৷
চলেছে তাণ্ডব
কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে৷ গাছপালারও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ অনেক জায়গায় রাস্তায় গাছ পড়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন৷
আসছে মৃত্যুর খবর
ব্যাপক প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হলেও বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন এলাকা থেকে মৃত্যুর খবর আসতে শুরু করেছে৷ কক্সবাজারের চকোরিয়ায় গাছের নীচে পড়ে দুই জনসহ মোট ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে৷
আশ্রয়কেন্দ্রে আপাত স্বস্তি
এই দূর্যোগে হাতিয়াসহ বিভিন্ন দ্বীপের বিচ্ছিন্ন কিছু চরে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে পারেনি বলে ঢাকার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে৷ উদ্বেগ-আশঙ্কায় কেটেছে তাঁদের সময়৷ তাঁদের তুলনায় আপাত স্বস্তিতে রয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারা মানুষেরা৷
স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন
যে রকম আশঙ্কা করা হচ্ছিল, শেষ পর্যন্ত তার চেয়ে দুর্বল হয়ে বাংলাদেশের উপর দিয়ে অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’৷ মূল শঙ্কা কেটে যাওয়ায় গুটিয়ে নেওয়া অনেকেই ফিরছেন ঘরে৷ ঝড়-বৃষ্টি থাকলেও পুরনো ছন্দে ফিরছে মানুষ৷