1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বহুমুখী সংকটের মুখে ভূমিকম্প বি‌ধ্বস্ত হাইতি

১৮ জানুয়ারি ২০১০

বিশ্ব নেতৃবৃন্দ সফর শুরু করেছেন ভূমিকম্প বিধ্বস্ত হাইতিতে৷ ত্রাণ এবং অর্থ সহায়তার ঘোষণাও আসছে বিভিন্ন মহল থেকে৷ কিন্তু পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মৌলিক উপকরণগুলো যথেষ্ট পরিমাণে পৌঁছায়নি দুর্যোগ পীড়িত মানুষের কাছে৷

https://p.dw.com/p/LYNv
ভূমিকম্পে নিহত জাতিসংঘ মিশনের প্রধান হেইডি অ্যানাবিছবি: AP

পোর্তো প্রঁসে বান কি-মুন

হাইতির জনগণ এবং সরকারের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে হাইতি সফর করছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন৷ রবিবার তিনি ক্যারিবীয় দেশটির ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন৷ মঙ্গলবারের ভূমিকম্পে ভেঙে পড়া হাইতিতে জাতিসংঘ মিশনের সদর দপ্তরের ধ্বংসাবশেষ ঘুরে দেখেন বান কি-মুন৷ ঐ ভবন ধসে মিশন প্রধান হেইডি অ্যানাবি, উপ-প্রধান লুই ডা কস্টা এবং জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ প্রধানসহ বেশকিছু জাতিসংঘ কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন৷ হাইতি পৌঁছে বান কি-মুন বলেন, ''কয়েক দশকের মধ্যে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট৷ এখানে ক্ষয়ক্ষতি, ধ্বংসযজ্ঞ এবং প্রাণহানির পরিমাণ খুবই বেশি৷'' বান কি-মুন পোর্তো প্রঁসে জাতিসংঘ কর্মীদের সাথে কথা বলেন৷ এদিকে, হাইতির জন্য জাতিসংঘের বিশেষ দূত হিসেবে আজ সোমবার পোর্তো প্রঁস সফরে যাচ্ছেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রপতি বিল ক্লিন্টন৷

হুমকির মুখে নিরাপত্তা পরিস্থিতি

ভূমিকম্পের পাঁচদিন পরও যথেষ্ট পানি, খাবার এবং চিকিৎসা সহায়তা না পেয়ে উন্মত্ত হয়ে পড়েছে হাইতির মানুষ৷ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির আশঙ্কা রাজধানী পোর্তো প্রঁসে৷ দেশটির রাষ্ট্রপতি রেনে প্রেভাল বলেন, ''পোর্তো প্রঁসে আমাদের মাত্র দুই হাজার পুলিশ সদস্য রয়েছে৷ তারাও ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির শিকার৷ ওদিকে, কারাগার থেকে পালিয়ে গেছে প্রায় তিন হাজার দুষ্কৃতিকারী৷ এই চিত্র থেকে আপনারা বুঝতে পারবেন, পরিস্থিতি কতটা খারাপ৷'' তবে প্রেভাল জানান, হাইতি এবং জাতিসংঘ বাহিনীকে সহযোগিতা করতে আমেরিকা থেকে সাড়ে তিন হাজার সৈন্য পাঠানো হচ্ছে হাইতিতে৷ অবশ্য আমেরিকার পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখনও কোন মন্তব্য আসেনি৷

১০ কোটি ইউরোরও বেশি অর্থ সহায়তা দেবে ইইউ

Haiti nach dem Erdbeben Flash-Galerie
হাইতির ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য লুটপাটের দৃশ্যছবি: AP

দুর্যোগ পীড়িত হাইতি পুনর্গঠনে ১০ কোটি ইউরোরও বেশি অর্থ সহায়তা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ সোমবার ব্রাসেলসে ইইউ'ভুক্ত দেশসমূহের উন্নয়ন মন্ত্রীদের সভা‌য় এমন সিদ্ধান্তের সম্ভাবনার কথা জানালেন সংস্থাটির এক কূটনীতিক৷ তবে সেটা ২০ কোটি ইউরো পর্যন্তও হতে পারে বলে মনে করছেন ঐ কূটনীতিক৷ এই অর্থ হাইতিতে মধ্যম এবং দীর্ঘমেয়াদি পুনর্গঠন কাজের জন্য দেওয়া হবে৷ এছাড়া হাইতির আইন-শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়নে বিশেষ অভিযান পাঠাবে ইইউ বলে জানিয়েছেন ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাক্সিমে ভেয়ারহাগেন৷ তিনি বলেন, ''সেখানে নিরাপত্তা যথেষ্ট না থাকলে, ক্ষতির শিকার হাইতির মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা বন্ধ হয়ে যাবে৷ তাই আমি জোর দিচ্ছি যে, ইইউ যেন সেখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহযোগিতার উদ্যোগ নেয়৷''

প্রয়োজনীয় জ্বালানি পাঠাচ্ছে ভেনেজুয়েলা

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত হাইতির জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহের ঘোষণা দিল ভেনেজুয়েলা৷ দেশটির রাষ্ট্রপতি উগো চাভেস বলেন, ''হাইতির জনগণের জন্য যত জ্বালানি প্রয়োজন ভেনেজুয়েলা তা সরবরাহ করবে৷ হাইতিতে কিউবা যে জলবিদ্যুৎ কারখানা স্থাপন করেছে সেটি চালানোর জন্য এবং সেখানকার হাসপাতালগুলোর জন্য এসব জ্বালানি দান করছে ভেনেজুয়েলার জনগণ৷'' সোমবার সকালেই সোয়া দুই লাখ ব্যারেল ডিজেল এবং গ্যাসোলিন নিয়ে প্রথম তেল ট্যাংকার হাইতির উদ্দেশ্যে রওয়ানা করছে বলে জানান চাভেস৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়