1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘বন্ধুরা শেষ পর্যন্ত বন্ধুই থাকবে'

২৬ নভেম্বর ২০১৮

রবিবার ব্রাসেলসে ব্রেক্সিট চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো৷ ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ব্রিটেনের পার্লামেন্ট এই চুক্তি অনুমোদন না করলে গোটা প্রক্রিয়া অনিশ্চয়তার মধ্যে ডুবে যেতে পারে৷

https://p.dw.com/p/38tmm
EU-Sondergipfel zum Brexit in Brüssel
ছবি: Getty Images/S. Gallup

সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটলো৷ রবিবার সকালে ব্রাসেলসে মাত্র ২৪ মিনিটের মধ্যেইব্রেক্সিট চুক্তি স্বাক্ষর করলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি সদস্যদেশের শীর্ষ নেতারা৷ তাঁরা সবাই একবাক্যে জানিয়ে দিলেন, ইইউ থেকে বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে ব্রিটেন এর থেকে ভালো চুক্তি আশা করতে পারে না৷ অর্থাৎ, ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি ব্রিটেনের সংসদ এই চুক্তি অনুমোদন না করলে নতুন করে দরকষাকষির যে কোনো অবকাশ থাকবে না, পরোক্ষভাবে সে বিষয়ে সতর্ক করে দিলেন তাঁরা৷ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার সাফ জানিয়ে দেন, ‘‘যাঁরা ভাবছেন এই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করলে আরো ভালো চুক্তি পেতে পারেন, তাঁরা হতাশ হবেন৷''

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে চুক্তি স্বাক্ষরের পর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এটাই একমাত্র সম্ভাব্য চুক্তি'৷ দেশের মানুষের প্রতি এক বার্তায় তিনি বলেন, ব্রিটেনের মানুষ অবশ্যই জানেন, যে কোনো আলোচনার ক্ষেত্রে সব কিছু পাওয়া সম্ভব নয়৷ তা সত্ত্বেও ব্রিটেন যথেষ্ট সাফল্যের দাবি করতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি৷ অর্থাৎ, সংসদে চুক্তি অনুমোদনের জন্য এখন থেকেই জনমতের চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন তিনি৷ সম্ভবত ১৩ ও ১৪ই ডিসেম্বর ব্রিটিশ সংসদে এই চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটি হবে৷

ইইউ থেকে ব্রিটেনের বিদায় যে আনন্দ-উৎসবের কারণ হতে পারে না, উপস্থিত নেতারা বিভিন্নভাবে তা স্পষ্ট করে দিলেন৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেন, ঐতিহাসিক এই দিনটি একইসঙ্গে ‘মর্মান্তিক ও দুঃখজনক'৷ ইয়ুংকার বলেন, ‘‘এটা শ্যাম্পেন খোলার সময় নয়৷'' ইউরোপীয় পরিষদের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক এক জনপ্রিয় গান উদ্ধৃত করে বলেন, ‘‘আমরা শেষ পর্যন্ত বন্ধু থেকে যাবো৷''

ব্রিটেনে কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা যাতে রবিবার ইইউ নেতাদের কোনো মন্তব্যকে হাতিয়ার করতে না পারেন, সে বিষয়ে অত্যন্ত সজাগ ছিলেন তাঁরা৷ গুরুগম্ভীর ও সংযত মন্তব্যের মাধ্যমে তাঁরা এই আলোচনায় ইইউ-র অসাধারণ সাফল্যের উল্লেখ করেননি৷ ব্রিটেনে গণভোটের পর থেকে এই প্রশ্নে ইইউ-র বাকি সব সদস্য দেশের মধ্যে অটুট ঐক্য দেখা গেছে৷ ইইউ-র প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মিশেল বার্নিয়ে একা ব্রিটেনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছেন৷ ইইউ-র মৌলিক কাঠামোয় কোনোরকম ভাঙন মেনে নেননি তিনি৷ শেষ পর্যন্ত ব্রেক্সিট চুক্তির মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থানেরই সবচেয়ে বেশি প্রতিফলন ঘটেছে৷

ব্রিটেনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে এক রাজনৈতিক ঘোষণাপত্রেও স্বাক্ষর করেছেন ইইউ নেতারা৷ ২০১৯ সালের ২৯শে মার্চ ব্রিটেন বিদায় নেবার পর কমপক্ষে ২০২০ সাল পর্যন্ত এক অন্তর্বর্তীকালীন পর্যায়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে৷ তবে সেই প্রক্রিয়ার জন্য আরো সময় লাগবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ ব্রিটিশ সংসদ ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন না করলে অবশ্য গোটা প্রক্রিয়া অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে৷ ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিবাদের প্রভাব ইইউ-র পূর্বনির্ধারিত গতিপথের উপর আদৌ কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা, তা-ও স্পষ্ট নয়৷

এসবি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)