1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বন শহরের বেটোফেন ভবন

রায়হানা বেগম১০ সেপ্টেম্বর ২০০৮

বিশ্বখ্যাত সংগীতস্রষ্টা বেটোফেনের নাম প্রায় সবারই জানা৷ কিন্তু বন শহরে যে বাড়িতে তাঁর জন্ম, মানুষের কাছে তা খুব একটা পরিচিত নয়৷

https://p.dw.com/p/FFMh
এই বাড়ীতে জন্মেছিলেন বেটোফেনছবি: dpa

বেটোফেনের ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী এবং তাঁর সংগীত জীবনের নানা জিনিস সাজিয়ে একটি মিউজিয়ামে রূপান্তরিত করা হয়েছে ভবনটিকে ৷ নাম দেয়া হয়েছে বেটোফেন হাউস৷ বনগাসে নামে সুপরিচিত একটি রাস্তার ধারে এই মিউজিয়ামটি শুধু দেশবিদেশের বেটোফেন অনুরাগীদেরই নয় সাধারণ মানুষেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করে৷

Musik Ludwig van Beethoven komponiert
শিল্পীর তুলিতে বেটোফেন-এর জীবনযাপনছবি: picture-alliance / akg-images

প্রথম দৃষ্টিতে লুডভিগ ফান বেটোফেনের জন্মস্থান এই বাড়ীটি অতি সাধারণ বলেই মনে হবে৷ কিন্তু দালানটির সামনে সবসময় মানুষের সমাগম দেখে বোঝা যায় যে এর একটি বিশেষত্ব আছে৷ জার্মানিতে অষ্টাদশ শতাব্দীর যে কটি বাড়ী আজো টিকে আছে তারই অন্যতম এটি৷ বাড়ির সামনের দিকটি বারোক আঙ্গিকে পাথর দিয়ে তৈরি৷ বাড়ির সবচেয়ে ওপরের তলায় একটি ক্ষুদ্র কক্ষে ১৭৭০ সালে জন্ম গ্রহণ করেন লুডভিগ ফান বেটোফেন৷ বলেন মিউজিয়ামের পরিচালক মিশাইল লাডেনবুরগার৷

তিনি দর্শকদের একটি পিয়ানো দেখিয়ে বলেন: বেটোফেন সবশেষে যে পিয়ানোটি বাজিয়েছিলেন আমরা তার সামনে দাঁড়িয়ে আছি৷ ভিয়েনার কনরাড গ্রাফ নামে একজন পিয়ানো নির্মাতার কাছ থেকে মৃত্যুর দেড় বছর আগে পেয়েছিলেন তিনি এই পিয়ানো৷ ১৮৮৯ সাল থেকেই বেটোফেন হাউসে সযত্নে রক্ষিত আছে এই ঐতিহাসিক বাদ্যযন্ত্র৷

সেই সময় বন শহর বেটোফেনের স্মৃতিধন্য এই ভবন কেনার ব্যাপারে তেমন কোনো আগ্রহ দেখায়নি৷ তাই ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই বাড়ি কিনে তাঁর স্মৃতি রক্ষার ব্যবস্থা করা হয়৷ ১৮৮৯ সালে গড়ে তোলা হয় বেটোফেন হাউস সংরক্ষণ সংস্থা ৷ প্রোথিত হয় আজকের বেটোফেন হাউস মিউজিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর৷ যা আজ সারা বিশ্বের মানুষকেই আকৃষ্ট করছে৷

ভবনটির একটা বড় অংশই অষ্টাদশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধের অবস্থায় রয়েছে এখনও৷ মিউজিয়াম স্থাপিত হবার সময় কক্ষগুলিকে কিছুটা প্রশস্ত করার প্রয়োজন পড়ে, তাই বাড়ির সামনের দিকে কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে৷

১৮৯৩ সালের ১০ মে একটি সংগীত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বেটোফেন হাউসের উদ্বোধন করা হয়৷ সেই আমলের অনেক কিছু এখনও টিকে আছে এই বাড়িতে৷ যেমন কাঠের মেঝে এবং কারুকার্যখচিত সুন্দর কড়িকাঠ৷

মিউজিয়াম দেখতে এসে একজন দর্শক বলেন, কড়িকাঠের নকশাটি কোনো ফুল কিনা বুঝতে পারছিনা৷ এই মিউজিয়ামে আসার আগে বেটোফেন সম্পর্কে কি জানতেন, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন: বেটোফেন যে নামী সংগীতকার ছিলেন তা অবশ্যই জানতাম৷ তাঁর নবম সিম্ফনি তো খুবই বিখ্যাত৷ আমার মায়ের কাছে বেটোফেনের সংগীতের একটি রেকর্ডও রয়েছে৷

Beethovenhaus Bonn
বন শহরের বেটোফেন ভবনছবি: DW/Max Marenbach

মিউজিয়ামে প্রদর্শিত জিনিসের মধ্যে বেটোফেনের হাতের লেখা, বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্র, ছবি, স্মৃতিচিহ্ন এইসব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য৷ ১৮৮৯ সালে বোটোফেন হাউস সংরক্ষণ সংস্থা গঠিত হবার সময় থেকেই কিছু মূল্যবান সামগ্রী, যেমন বেটোফেনের ব্যবহার করা সর্বশেষ পিয়ানো এবং বেটোফেনের নিজ হাতে লেখা মুনশাইনসোনাটা ও পাস্তোরাল সিম্ফনির স্বরলিপি সংগ্রহ করা গেছে৷ আজ এই মিউজিয়াম সারা বিশ্বে বেটোফেনের সবচেয়ে বড় এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ সংগ্রহশালা বলে খ্যাত৷ এখানে রয়েছে বেটোফেনের চিঠিপত্র, ছবি, মুদ্রা, মেডেল,বাদ্যযন্ত্র, আসবাবপত্র এবং বেটোফেনের দৈনন্দিন ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী৷

মিউজিয়ামের পরিচালক মিশাইল লাডেনবুর্গার বলেনঃ আমরাই একমাত্র সংগ্রহশালা যা খুব সুশৃংখল৷ সুষ্ঠুভাবে সংরক্ষণ এবং প্রদর্শন করতে পারলেই তো কোনো সংগ্রহ অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠে৷ আমরা ব্যক্তিগত সংগ্রাহকদের মত নই৷ আমরা আমাদের সংগ্রহকে জনসমক্ষে উপস্থাপন করতে চাই৷ ব্যক্তিগত মালিকানা থেকে বেটোফেনের হাতের লেখা এবং অন্যান্য নিদর্শন কেনার জন্য ইদানীং আমরা অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছি৷

মিউজিয়ামে এলে এখানকার দোকানটির কথা ভুলে গেলে চলবেনা৷ বেটোফেনপ্রেমীরা প্রিয় সংগীতকারের ওপর প্রায় সব ধরনের জিনিসই পাবেন এখানে৷ ক্রেতাদের সবচেয়ে পছন্দের জিনিস কি তা জানতে চাইলে দোকানের বিক্রেতা বললেনঃ কলম, পোস্টকার্ড, পোস্টার, টিশার্ট এবং অবশ্যই আমাদের সুন্দর সুন্দর সিডি কেনেন দর্শকরা৷