বইয়ের বাইরে কলকাতা বইমেলা

৪৭ তম কলকাতা বইমেলার এবারের থিম কান্ট্রি ব্রিটেন। গিল্ডের হিসেব অনুযায়ী ২০২৩ সালে ২৬ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। আশা করা হচ্ছে এইবছর সেই অঙ্কও ছাড়িয়ে যাবে।

বইমেলায় ঢুকলেই বহু মানুষের হাতে চোখে পড়বে এই বিশাল কাগজে ছাপানো বইমেলার গাইডম্যাপ। বিনামূল্যে বিতরণ করা হয় বলে সংগ্রহ করেন প্রায় সকলেই, কিন্তু দেখা গেছে লোকের কাছে জিজ্ঞাসা করেই নির্দিষ্ট স্টলে পৌঁছাতে বেশি স্বচ্ছন্দ মানুষ।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুতেই বৈদ্যুতিন ছোঁয়া লেগেছে। মেলার প্রতিটি গেটে এবং মেলার ভেতরের নানান জায়গায় লাগানো হয়েছে এই কিউআর কোড। যা মোবাইলে স্ক্যান করলেই খুলে যাবে গাইডম্যাপের ই-ভার্সান।

মেলায় ঢুকতেই চোখে পড়ল দশভূজা নিজহস্তে কার্ড বিলি করছেন। কোনও সংস্থার বিজ্ঞাপনী কৌশল।

পটশিল্পী টাটকা টাটকা পটচিত্র এঁকে বিক্রি করছেন। বইমেলার একটা অংশ জুড়ে প্রতিবছরই এই ধরনের কারুশিল্পীরা বসেন।

রয়েছে পোর্ট্রেট আঁকানোর ব্যবস্থাও। নিজের চোখের সামনে নিজেকে ছবি হতে দেখা এক অনন্য অভিজ্ঞতা বটে। বইমেলায় এই চিত্রকরেরা ভীষণ স্বল্প পারিশ্রমিকে এঁকে দেন পোর্ট্রেট। খারাপ হয়ে যাওয়া ছবি দেখেও হুবহু এঁকে দেন তারা।

বহুবছর ধরেই এই মানুষটিকে বইমেলায় দেখা যায়। ‘সাহিত্যের ফেরিওয়ালা'।

উলের সুতো দিয়ে তৈরি এই রঙিন ছাতা নিয়ে ফিরি করেন এই মানুষটি। শহরতলি থেকে আসা এই মানুষটিকে সারাবছরই কোনও না কোনও মেলায় দেখা যায়।

বর্তমান সরকার আসার পর বইমেলায় বিনামূল্যে প্যাকেজড ড্রিঙ্কিং ওয়াটারের ব্যবস্থা চালু করে। নীল ড্রামে ভরা রয়েছে জলের প্যাকেট। চাইলেই যতখুশি নেওয়া যেতে পারে।

খাবারের স্টল যেমন রয়েছে, তার সঙ্গত করতে রয়েছে বেনারসী পানের স্টলও।

অর্গ্যানিক সবজির প্রদর্শনীও হচ্ছে বইমেলায়। তবে তা এখানে বিক্রি হচ্ছে না। কিনতে গেলে যেতে হবে নিউটাউনে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জৈব হাটে।

বিভিন্ন সংস্থা তাদের দ্রব্যের বিজ্ঞাপন করেন নানান কায়দায়। শেয়ার বাজারের ওঠানামা বোঝাতে যে দুইটি পশুর প্রতীক ব্যবহার করা হয় সেগুলি হল ষাঁড় এবং ভল্লুক। একটি সংস্থা তাদের স্টলের সামনে ষাঁড়ের সাজে বহুরূপী দাঁড় করিয়ে রেখেছেন উৎসাহী মানুষকে আকর্ষণ করতে।

খানা পিনা পানের পর গানও আছে। বইমেলার একটি প্যাভেলিয়নে দেখা গেল বাউল গানের আসর।

এবারের বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের থিম ছিল রিকশা। রঙিন সুসজ্জিত রিকশা বাংলাদেশের ঐতিহ্য, যা এবারের বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের সামনেই রাখা রয়েছে।

এই ভদ্রলোক বিভিন্ন মেলায় স্ট্যাচু সেজে দাঁড়িয়ে থাকেন। গান্ধী, ক্ষুদিরাম, সুভাষচন্দ্র বোস- এরকম নানা অবতারে তিনি দাঁড়িয়ে থাকেন। তাকেও দেখা গেল বইমেলায়।

দেখা গেল রবীন্দ্রনাথকেও। ইনি প্রায় অবিকল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মত দেখতে বলে বিখ্যাত হয়েছে। সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন। পয়সার বিনিময়ে ইনি মেলাপ্রাঙ্গনে সেলফি তুলতে দিচ্ছিলেন।