1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‌বইমেলা হবে, বদলাতে পারে দিন

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২১ আগস্ট ২০২০

কোভিড সংক্রমণ ভীতির কারণে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা ২০২১ সালে না-ও হতে পারে- স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের এই খবর ভ্রান্ত, বলছে পশ্চিমবঙ্গের পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড৷

https://p.dw.com/p/3hIEM
ফাইল ছবিছবি: DW/S. Payel

আন্তর্জাতিক বইমেলার ক্যালেন্ডার মেনে প্রতি বছর জানুয়ারির শেষ বুধবার থেকে শুরু হয় কলকাতা বইমেলা৷ চলে ১০ দিন৷ কিন্তু এই মুহূর্তে কোভিড সংক্রমণ পরিস্থিতি যা, তাতে বইমেলা পরের বছর হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে৷ যদিও কোভিডের টিকা হয়ত ওই জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি নাগাদই বাজারে চলে আসবে বলে আপাতত খবর৷ অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষণাজাত ‘‌কোভিশিল্ড’ দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ও চূড়ান্ত দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ এই সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছে ভারতের ১৭টি জায়গায়৷ সেই পরীক্ষা সফল হলে মহারাষ্ট্রের পুনের একটি সংস্থা কোভিডের ওই টিকা তৈরি শুরু করবে৷ কাজেই একবার টিকা হাতে এসে গেলে বইমেলার মতো জমায়েতও হয়ত এখনকার মতো অসম্ভব মনে হবে না, যেখানে প্রতিদিন এক লাখেরও বেশি মানুষ মেলায় আসেন৷
স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যম সদ্য জানালো, ২০২১ সালের কলকাতা বইমেলা হচ্ছে না৷ কারণ, অত বড় জনসমাগম সংক্রমণ এড়িয়ে করার উপায় নেই৷ সেই পরিকাঠামো নেই কলকাতা বইমেলার৷ কাজেই বাতিল হচ্ছে মেলা৷ সেই খবরে অনেক প্রকাশক, বই বিক্রেতা হতাশ হয়েছিলেন, আবার অনেকেই বিকল্প রাস্তা ভাবতে শুরু করেছিলেন৷ যেমন শোনা যাচ্ছিল, শহরের বইপাড়া কলেজ স্ট্রিটের কাছেই মহম্মদ আলি স্কোয়্যারের মাঠে একটি ছোট মাপের বইমেলা হবে৷ ভারতের ইংরাজি ভাষার বই প্রকাশকরা আলাদা করে আরেকটি ছোট মেলা করবেন, এমনই খবর ছিল৷

প্রয়োজনে দিন বদলাতে পারে, কিন্তু মেলা হবেই: ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়

কিন্তু কলকাতা বইমেলার উদ্যোক্তা, রাজ্যের পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ড–এর সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় মেলা না হওয়ার খবরের সত্যতা পুরোপুরি অস্বীকার করলেন৷ বরং তিনি জোর দিয়ে দাবি করলেন, মেলা এ বছরও হবে যথারীতি৷ হয়ত আকারে ছোট হবে, বা দিনও বদলে যেতে পারে৷ কোভিড পরিস্থিতির কারণে অনেক উদ্যোক্তাই যেমন দিনক্ষণ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি৷ জার্মানির বিখ্যাত ফ্রাঙ্কফুর্ট বুখমেসে যেমন এখনও জানায়নি যে তাদের এবারের মেলা কখন হবে, তেমনি কলকাতা বইমেলাও এবার প্রয়োজনে দিন বদলাতে পারে৷ কিন্তু মেলা হবেই৷ ত্রিদিববাবু ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‌‘‌আমরা শুধু একটা কথাই বলছি যে, পরিস্থিতি অনুযায়ী, ছোট করে হবে, ছোট করে মানে বড় জায়গা নিয়ে হবে হয়তো, (‌কিন্তু) ‌বেশি স্পেস মধ্যিখানে ছাড়া হলো, হয়ত লোকের কিছু রেস্ট্রিকশন রাখা হলো, স্বাস্থ্যবিধি মানা হলো— সেটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে৷ কিন্তু আমরা এখনও যেটা বুঝতে পারছি যে, আমরা স্বাভাবিকভাবেই (‌মেলা) ‌করতে পারব৷ মোটামুটি স্বাভাবিকভাবেই করতে পারবো, হয়ত এক–আধ মাস এদিক ওদিক হতে পারে৷ কিন্তু বইমেলা হবে৷’’
২০২১ বইমেলার থিম গত বছর থেকেই নির্দিষ্ট হয়ে আছে৷ বাংলাদেশ৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ পূর্তি এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর উদযাপনের সূচনা রয়েছে সেই মূলগত ভাবনার কেন্দ্রে৷ ত্রিদিববাবু জানাচ্ছেন, ‘‌‘‌মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা নেমন্তন্ন করে এসেছি৷ ২১ ফেব্রুয়ারির মেলার সময় গিয়ে তাঁকে নিজে আমরা নেমন্তন্ন করে এসেছি৷ এবং ফর্মাল নেমন্তন্ন রাজ্য সরকার এবং বিদেশ দপ্তরের মাধ্যমে যাওয়ার কথা৷ তার পরে তো কোভিড হলো৷ কিন্তু এটা একদম সিদ্ধান্ত যে, এটা হচ্ছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০০ বছর৷ সেই উদযাপন আমাদের এখান থেকে হবে৷’’
আমেরিকা, রাশিয়া এবং ব্রিটেন ইতোমধ্যেই নিশ্চিত করেছে, যে কলকাতা বইমেলা হলে ওরা অংশ গ্রহণ করবে৷ এছাড়া লাটিন আমেরিকার দেশগুলো রয়েছে, জাপান এবং চীন রয়েছে, যারা নিয়মিত অংশ নেয়৷ কাজেই বইমেলা না হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই, জানাচ্ছে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড৷ 

গতবছরের ফেব্রুয়ারির ছবিঘরটি দেখুন...