1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজফ্রান্স

পার্লামেন্ট নির্বাচনে মাক্রোঁর সংখ্যাগরিষ্ঠতা হুমকিতে

১২ জুন ২০২২

ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে৷ পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার লক্ষ্য সদ্য পুনর্নিবাচিত হওয়া প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর৷

https://p.dw.com/p/4CaYo
প্রথম ধাপে কেবল তারাই নির্বাচিত হবেন, যাদের আসনে অন্তত ২৫ শতাংশ ভোট পড়বে
প্রথম ধাপে কেবল তারাই নির্বাচিত হবেন, যাদের আসনে অন্তত ২৫ শতাংশ ভোট পড়বে ছবি: Bob Edme/AP Photo/picture alliance

কিন্তু তার এই লক্ষ্যকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে কট্টর ডান নয়, বরং কট্টর বামপন্থিরা৷ রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় শুরু হওয়া এই ভোটে প্রায় চার কোটি ৮৭ লাখ ভোটার ভোট দেবেন৷

প্রথাগতভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরপরই পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালে মাক্রোঁ বেশ কিছু নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি পূরণে বাধার সম্মুখীন হতে পারেন৷ বিশেষ করে অর্থনৈতিক সংস্কারের নানা নীতিতে তাকে পার্লামেন্টের মুখোমুখি দাঁড়াতে হতে পারে৷

প্রথম ধাপে কেবল তারাই নির্বাচিত হবেন, যাদের আসনে অন্তত ২৫ শতাংশ ভোট পড়বে এবং সেই ভোটের ৫০ শতাংশ যারা পাবেন৷ফলে বেশিরভাগ আসনে বিজয়ীই মূলত নির্ধারণ হবেন আগামী রোববার, ১৯ জুন দ্বিতীয় দফার ভোটে৷ দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে প্রথম ধাপের শীর্ষ দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের লড়াই হবে৷

বিতর্ক সত্ত্বেও আণবিক শক্তির পথে ফ্রান্স

নতুন জোট

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাক্রোঁর মূল চ্যালেঞ্জ এসেছিল কট্টর ডানপন্থি মারিন ল্য পেনের তরফ থেকে, কিন্তু এবার মাক্রোঁর চ্যালেঞ্জ আসছে উলটো শিবির- কট্টর বামদের কাছ থেকে৷

ফ্রান্সের তারকা বামপন্থি নেতা জ্যঁ লুক মেলাঞ্চ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন৷ তখন একক লড়াইয়ে থাকলেও এবার পার্লামেন্ট নির্বাচনে মেলাঞ্চ ছোট কয়েকটি দলের সঙ্গে জোট গঠন করেছেন৷ মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেও এমন জোটের কথা চিন্তাও করতে পারছিলেন না অনেকে৷

মধ্য বামপন্থি পার্টি সোসিয়ালিস্টে ফ্রান্সের ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা ঐতিহ্যবাহী দলগুলোর একটি৷ কিন্তু মাক্রোঁর মধ্যপন্থি ধারা অনেক ভোটারকেই আকৃষ্ট করতে পেরেছে৷ ফলে সোশ্যালিস্টরা এখন মেলাঞ্চর তুলনামূলক পপুলিস্ট ব্যানারের নীচে একত্র হয়ে আবার ক্ষমতার লড়াইয়ে ফিরতে চাচ্ছে৷

সোশ্যালিস্টরা ছাড়াও ফ্রান্সের গ্রিন এবং কমিউনিস্ট পার্টিগুলোও যোগ দিয়েছে এই 'নুপেস' জোটে৷

জরিপে দেখা গেছে, নুপেস জোট পার্লামেন্ট নির্বাচনে ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে ফেলবে মাক্রোঁর মধ্যপন্থি এনসেম্বল জোটকে৷

অর্থনীতি সংস্কার নিয়ে লড়াই

মাক্রোঁর নানা অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে জনগণের বড় একটি অংশের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে৷আর এটিকে পুঁজি করেই নির্বাচনে মূল লড়াই চালাচ্ছে নুপেস জোট৷ ২০১৭ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসার সময়ই ফ্রান্সে অবসরের বয়সসীমা ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ করার কথা বলেছিলেন মাক্রোঁ৷ তিনি বলেছিলেন, সমশক্তির অর্থনীতির অন্য অনেক দেশেই অবসরের বয়স ৬৫৷ বর্তমান নানা ব্যবস্থা অদূর ভবিষ্যতের জন্য টেকসই হবে না বলেও মনে করেন তিনি৷

কিন্তু ব্যাপক আন্দোলন এবং ধর্মঘটের পর এই সিদ্ধান্ত থেকে পরে সরে আসতে হয় তাকে৷ কিন্তু দ্বিতীয়বারের নির্বাচনেও তিনি নিজের সংস্কারকাজ শেষ করার অঙ্গীকার করেই জয়ী হয়েছেন৷

নুপেস এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বরং উলটো অবসরের বয়স কমিয়ে ৬০ বছর করার অঙ্গীকার করেছে৷

প্রধানমন্ত্রী হতে চান ন্যাটো-ইইউ বিরোধী মেলাঞ্চোঁ

মেলাঞ্চোঁ এবং নুপেস জোটের লক্ষ্য পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ মাক্রোঁর হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়া, যাতে তিনি বামপন্থি শিবির থেকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করতে বাধ্য হন৷

 

এর আগে ১৯৯৭ থেকে ২০০২ পর্যন্ত তৎকালীন মধ্য ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জাঁক শিরাক সোশ্যালিস্ট লিওনেল জোসপিনকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে বাধ্য হয়েছিলেন৷

তুলনামূলক মধ্যপন্থি দলগুলো যোগ দেয়ায় নুপেস জোটে মেলাঞ্চোঁর সুর কিছুটা নরম হয়েছে৷ তবে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে তার অবস্থান জানিয়ে এসেছেন৷ নুপেসও ইইউ-এর কিছু আইন পরিবর্তন এবং ধীরে ধীরে একসময় ন্যাটো সামরিক জোট থেকে সরে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেছে৷

পশ্চিমা অনেক নেতাই রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে বারবার কথা বলা ও একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করায় মাক্রোঁর সমালোচনা করেছেন৷ কিন্তু কয়েক দশক ধরে পুটিনের কর্মকাণ্ডের সমালোচনার ক্ষেত্রে মেলাঞ্চোঁ আরো অনেক বেশি নরম অবস্থান দেখিয়ে এসেছেন৷

এডিকে/আরকেসি (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)