1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
রাজনীতিতুরস্ক

ফ্যাক্ট চেক: এর্দোয়ানের জারি করা ভিডিও জাল?

৯ মে ২০২৩

তুরস্কে ভোটের আগে তার প্রতিদ্বন্দ্বী কিলিচদারোলুর ভিডিও প্রকাশিত করেছেন এর্দোয়ান। সেই ভিডিওতে কারসাজি করা হয়েছে?

https://p.dw.com/p/4R4LE
এর্দোয়ান  ও তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কিরিচদারোলু।
এর্দোয়ান ও তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কিরিচদারোলু।ছবি: Murat Kula/Sercan Kucuksahin/AA/picture alliance

ডিডাব্লিউ-র ফ্যাক্ট চেক বলছে, ভিডিওর ফুটেজে কারসাজি করা হয়েছে।

আগামী ১৪ মে তুরস্কে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন। তার আগে গত রোববার প্রেসিডেন্ট পদে বিরোধী প্রার্থী কেমাল কিলিচদারোলুর একটি ভিডিও প্রকাশ করেন এর্দোয়ান। রাজনৈতিক সমাবেশে ভিডিওটি প্রকাশ করে এর্দোয়ান বলেন, ''আমার জাতীয় ও আঞ্চলিক ভোটদাতারা কি এদের ভোট দেবেন?''

এই কথা বলে এর্দোয়ান তার পিছনে বড় স্ক্রিনের দিকে দেখান। কয়েক সেকেন্ড পরে সেখানে বিরোধী প্রার্থীর ছবি আসে। তারপর সেনার পোশাক পরা একজনকে দেখা যায়। এই দ্বিতীয় ব্যক্তি হলেন মুরাত কারেইলান। তিনি কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে-র প্রতিষ্ঠাতা। পিকেকে-কে জঙ্গি সংগঠন বলেছে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র।

এর্দোয়ানের দেখানো এই ভিডিও কি ঠিক? পিকেকে নেতা কি বিরোধী প্রার্থীর সভায় এসে সমর্থন জানিয়েছিলেন?

ডিডাব্লিউর ফ্যাক্ট চেকের ফল বলছে, ভিডিওটি ঠিক নয়। ডিডাব্লিউর ফ্যাক্ট চেক টিম এবং ডিডাব্লিউর তুরস্কের টিম মিলে পরীক্ষা করে দেখেছে, দুটি আলাদা ভিডিওকে জোড়া দেয়া হয়েছে। দুটি ভিডিও আলাদা জায়গায় নেয়া, তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড আলাদা।

ডিডাব্লিউ তুরস্ক সার্ভিসের পেলিন কুর্তুলুস বলেছেন, বিশেষজ্ঞরা আগে থেকেই বারবার বলছিলেন, ''ভোটের আগে কারসাজি করা ভিডিওতে ছেয়ে গেছে সামাজিক মাধ্যম। টুইটার ও অন্য জায়গায় ফেক নিউজ প্রচার করা হচ্ছে।''

দুই ভিডিও এক করা হয়েছে

প্রথম ভিডিওটি কিলিচদারোলুর প্রচারের ভিডিও। তাঁর নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এই ভিডিওটি আছে। এটা রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন যেরকম হয়, সেরকমই। তিনি সেখানে মানুষকে ভোট দিতে বলছেন। কিন্তু এখানে পিকেকে নেতার কোনো ছবি নেই।

এর্দোয়ান যে ভিডিওটি দেখিয়েছেন, তা এডিট করা হয়েছে। মূল ভিডিওর ক্লোজ আপ নেয়া হয়েছে। বিরোধী নেতার আসল ভিডিওর ০০.৩৭ সেকেন্ড থেকে ফুটেজ নেয়া হয়েছে। সেখানে বিরোধী প্রার্থী মানুষকে বলছেন, ''আসুন, আমরা একসঙ্গে ভোট দিই।'' তার পিছনে যুবকেরা দাঁড়িয়ে আছেন। এরপরই আসল ভিডিওতে দেখা যায়, দুই নারী একটি বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন।

পুরনো ফুটেজ থেকে

দ্বিতীয় যে ভিডিওটি এখানে ব্যবহার করে হয়েছে, তা অনেক পুরনো। অনলাইনে সার্চ করলেই পিকেকে নেতার সামরিক পোশাক পরা ছবি পাওয়া যাবে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পিকেকে নেতা তিন দশক ধরে সশস্ত্র লড়াইয়ের কথা বলছেন। কুর্দদের সংস্থা ফিরাত নিউজ এজেন্সিতে এটা প্রথম প্রকাশিত হয়।

এর্দোয়ান যে ভিডিও দেখিয়েছেন, তাতে কারসাজি করে দুইটি ভিডিওকে মেশানো হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে, পিকেকে নেতা বিরোধী প্রার্থীকে সমর্থন করছেন।

এককথায়, এর্দোয়ান যে ভিডিও দেখিয়েছেন, তাতে দুইটি ভিডিওর ফুটেজ জোড়া হয়েছে। তারপর সেটা এডিট করে একটা ফিল্ম বানানো হয়েছে।

তুরস্কের কিছু বিশেষজ্ঞ বলেছেন, কৃত্রিম মেধা ব্যবহার করে এটা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেটা সত্যি বলে মনে হয় না।

রাজনৈতিক বিষয়

কুর্তুলুস জানিয়েছেন, ''রক্ষণশীল ও জাতীয়তাবাদীদের কাছ থেকে ভোট পাওয়ার জন্য এর্দোয়ান এই কারসাজি করা ভিডিও ব্যবহার করছেন।'' প্রেসিডেন্টের বার্তা বিভাগ এই ভিডিও নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

আগামী রোববার ভোট। এর্দোয়ান এবার জিতবেনই এমন কথা বলা যাচ্ছে না। ভোট সমীক্ষা বলছে, তিনি বিরোধী প্রার্থীর থেকে পিছিয়ে আছেন।

পেলিন উনকের/টমাস স্প্যারো/জিএইচ