1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফের ভাঙন তৃণমূলে

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
১৬ আগস্ট ২০১৯

বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র, একদা মমতা ব্যানার্জির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ শোভন চ্যাটার্জি। ‘‌লাভ হবে বিজেপির'‌, বললেন শোভন–বন্ধু বৈশাখী ব্যানার্জি।

https://p.dw.com/p/3O1Kz
Sovan Chatterjee
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/S. Paul

বিজেপিতে যোগ দিলেন মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেসের একসময়ের বিশ্বস্ত সেনাপতি, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চ্যাটার্জি। মমতার আরেক বিশ্বস্ত নেতা মুকুল রায়ের পর শোভনেরও এই গেরুয়া শিবিরে চলে যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থান এবং তৃণমূল কংগ্রেসের খারাপ ফলের পর মমতা যখন ফের ঘর গুছানোর চেষ্টা করছেন। ১৪ আগস্ট দিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তরে, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার উপস্থিতিতে দল বদল করেন শোভন। তার পর পাশে বসা মুকুল রায়ের আত্মবিশ্বাসী ঘোষণা, পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে এবার নিশ্চিতভাবেই জিতছে বিজেপি। তাঁর মন্তব্যকে হালকাভাবে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। একজন অভিজ্ঞ নেতা দল বদলালে, বাস্তবের জমিতে রাজনৈতিক সমীকরণ কীভাবে বদলে যায়, মুকুল নিজেই প্রমাণ করে দিয়েছেন গত লোকসভা ভোটে।


শোভন চ্যাটার্জির সঙ্গেই বিজেপিতে গেলেন তাঁর বান্ধবী বৈশাখী ব্যানার্জি। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপিকা বৈশাখী আল আমিন কলেজের অস্থায়ী অধ্যক্ষ ছিলেন। তাঁকে নিয়েই শোভনের দাম্পত্যে জটিলতা আসে, যা প্রকাশ্যে এসে পড়ায় রুষ্ট হন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতার মেয়র পদ থেকে শোভনকে ইস্তফা দিতে কার্যত বাধ্য করা হয়। শাস্তি পান বৈশাখীও। রাজ্যে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের সংগঠন ‘‌ওয়েবকুপা'‌–র সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন তিনি। কমিটি ভেঙে দিয়ে তাঁকে পদহীন করে দেওয়া হয়। কিন্তু এবার তাঁর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক আচরণের অভিযোগ এনে তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করা হল। কাজের জায়গায় অসুবিধা ঘটিয়ে তাঁর ওপর চাপ তৈরির জন্য বৈশাখী অভিযোগ আনলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এবং খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। সেই সূত্রেই জানা গেল, শোভন চ্যাটার্জিকে দলে ফেরানোর একটা চেষ্টা সম্প্রতি করা হয়েছিল। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি গিয়েছিলেন শোভনের বাড়ি কথা বলতে। সেই আলোচনায় ফল হয়নি। তার পরেই বৈশাখীর ওপর পরোক্ষে চাপ এবং শোভনের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত।
কিন্তু বৈশাখী কেন বিজেপিতে গেলেন?‌ বিশেষত তাঁর বিরুদ্ধে যখন সাম্প্রদায়িক আচরণের অভিযোগ এবং বিজেপি একটি সাম্প্রদায়িক দল হিসেবেই পরিচিত?‌ ডয়চে ভেলে–কে বৈশাখী বললেন, বিজেপির দলীয় গঠনতন্ত্র সম্পর্কে না জেনেই লোকে এটা বলে। বরং লেখা আছে, বিজেপি সদস্যরা জাত বা ধর্মের বিভেদ করবেন না।
কিন্তু বিজেপির কর্মী সমর্থকদের সাম্প্রতিক কাজকর্ম তো সেকথা বলে না? বৈশাখীর যুক্তি, জয় শ্রী রাম না বলার জন্য মারধর করাটা যেমন সাম্প্রদায়িক, তেমনই ওই জয়ধ্বনি শুনে তেড়ে যাওয়াটাও তাই। দল তাঁকে দায়িত্ব দিলে, তিনি শিক্ষিত‌ বাঙালি সমাজকে সেটাই বোঝাবেন। ভুল ধারণাগুলো দূর করার চেষ্টা করবেন। আর শোভন চ্যাটার্জিকে যদি কাজে লাগাতে পারে বিজেপি, তা হলে দলেরই উপকার বলে মনে করেন বৈশাখী।
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষও বলেছেন, শোভন চ্যাটার্জির যোগদানে রাজ্যে সংগঠন শক্তিশালী হল। কিন্তু আগের দিনই শোভনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, দোষী প্রমাণিত হলে দল থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে শোভনকে। কিন্তু প্রথমে মুকুল রায়, তার পর শোভন চ্যাটার্জি— কলঙ্কিত এই তৃণমূল নেতাদের দলে জায়গা দিলে বিজেপির ভাবমূর্তির কী হবে?‌ ডয়চে ভেলের এই প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের অস্বস্তিই ধরা পড়ল। তিনি মানছেন, যে লোকে এই প্রশ্ন তুলছে, যার উত্তর দেওয়ার দায় তাঁদের দিল্লির নেতৃত্বের।

BaishakhiBanerjee - MP3-Stereo