ফের কিয়েভে দুইটি বিস্ফোরণ
২৯ এপ্রিল ২০২২পর পর বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কিয়েভ। বুধবার মস্কো থেকে সেখানে পৌঁছেছেন জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস। ইউক্রেনের প্রশাসন জানিয়েছে, যে সময় গুতেরেস এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সাংবাদিক বৈঠক করছিলেন, প্রায় সেই সময়েই বিস্ফোরণ দুইটি ঘটানো হয়। রাশিয়াই এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে ইউক্রেনের দাবি। রাশিয়া অবশ্য এবিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি।
চলতি সপ্তাহের গোড়ায় মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে বৈঠক করেন গুতেরেস। বুধবার তিনি ট্রেনে কিয়েভে পৌঁছেছেন। বৃহস্পতিবার জেলেনস্কির সঙ্গে তার দীর্ঘ বৈঠক হয়। মারিউপলে আটকে থাকা বেসামরিক মানুষদের উদ্ধারের জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে কথা হয়। জেলেনস্কির জানিয়েছেন, এর আগে একাধিকবার উদ্ধারকাজের প্রশ্ন সামনে আসলেও রাশিয়া তা করতে দেয়নি।
বৈঠকের পর গুতেরেস এবং জেলেনস্কি সাংবাদিক বৈঠক করেন। ওই বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই পর পর দুইটি বিস্ফোরণ হয় কিয়েভে। বৈঠকস্থল থেকে খানিক দূরে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এর থেকেই প্রমাণ হয়, রাশিয়া কী চায়। একই কথা বলেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পুটিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ
বৃহস্পতিবার পুটিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাশিয়ার ডুমার সাবেক সদস্য ইলিয়া পোনোমারেভ। ২০১৬ সালে তিনি রাশিয়া ছেড়ে ইউক্রেনে এসে বসবাস করতে শুরু করেছেন। বর্তমানে ইউক্রেনের বাহিনীর অন্যতম সদস্য তিনি। রাস্তায় নেমে যুদ্ধ করছেন। তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়া বা দেশের মানুষ নয়, তার লড়াই পুটিনের বিরুদ্ধে। কারণ পুটিন একজন 'মবস্টার'। ইউক্রেন সেনার প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, যারা লড়াই করছে, তারা যথেষ্ট সুসজ্জিত। দেশকে বাঁচানোর লড়াইয়ে তারা বদ্ধপরিকর। বস্তুত, পোনোমারেভও তাদেরই একজন।
গুতেরেসের বক্তব্য
জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর এদিন গুতেরেস জানিয়েছেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যুদ্ধ আটকাতে সম্পূর্ণ বাধ্য হয়েছে। দায় জাতিসংঘের কাঁধে নিয়ে তিনি বলেছেন, এমন যে হতে পারে, তা তিনি কল্পনা করতে পারেননি। নিরাপত্তা পরিষদকে এর থেকে শিক্ষা নিতে হবে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং মারিউপল থেকে বেসামরিক মানুষদের উদ্ধার করতে সমস্ত পদক্ষেপ নেবে জাতিসংঘ।
মার্কিন সাহায্য
ইউক্রেনের জন্য ঐতিহাসিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার তিনি ৪৪ বিলিয়ন ডলারের সাহায্য ঘোষণা করেছেন। বৃহস্তবারই তা মার্কিন কংগ্রেসে পাশ হয়ে গেছে। এর আগে দুইবার ৮০০ মিলিয়ন ডলার করে ইউক্রেনের জন্য বরাদ্দ করেছিল অ্যামেরিকা। এবার তা ৪৪ বিলিয়নে পৌঁছালো। এর সাহায্যে ইউক্রেন আরো অস্ত্র কিনতে পারবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জেলেনস্কির বক্তব্য
অ্যামেরিকারঘোষণার পর বাইডেনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। একইসঙ্গে জানিয়েছেন, যুদ্ধের জন্য এবং ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া শহরগুলিকে নতুন করে তৈরি করার জন্য ইউক্রেনের যা খরচ হচ্ছে, তাতে কোনো সাহায্যই যথেষ্ট নয়। সকলকেই ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন জেলেনস্কি।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)