ফিরে দেখা দেশভাগ
ভারতীয় রেলের প্রদর্শনীতে উঠে এসেছে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের ভয়াবহতার স্মৃতি।
বিভাজনের মুহূর্ত
১৯৪৭ সালের ১৭ অগাস্ট ব্রিটিশ প্রশাসন প্রকাশ করেছিল রাডক্লিফ লাইন। ১৯৪৭ সালের জুন মাসে ব্রিটিশ স্থপতি সিরিল রাডক্লিফকে ভারত বিভাজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ঘরে বসে এক কাল্পনিক রেখা তৈরি করেছিলেন তিনি। যার জেরে ভারতের পশ্চিমে পাঞ্জাব এবং পূর্বে বাংলা ভাগ হয়ে গেছিল।
ভয়াবহ স্মৃতি
প্রায় চার লাখ ৫০ হাজার বর্গ কিলোমিটার জমিকে ভাগ করেছিল ব্রিটিশ সরকার। তৈরি হয়েছিল দুই দেশ-- পাকিস্তান এবং ভারত। লাখ লাখ মানুষ রাতারাতি হয়ে পড়েছিল উদ্বাস্তু।
রক্তাক্ত পাঞ্জাব
দেশভাগ ঘোষণা হওয়ার পরেই পূর্ব এবং পশ্চিমে দাঙ্গা বেঁধে গেছিল। সবচেয়ে রক্তাক্ত হয়েছিল পাঞ্জাব প্রদেশ। ট্রেনভর্তি মৃতদেহের স্মৃতি এখনো ভুলতে পারেন না প্রথম প্রজন্মের ভিটেহাড়া মানুষ।
সবচেয়ে বেশি উদ্বাস্তু
প্রায় দুই কোটি মানুষ দেশ ছেড়ে, ভিটে ছেড়ে, সম্পত্তি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিল। বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে মাঝপথে। পশ্চিম এবং পূর্ব ভারতে স্বাধীনতার আনন্দের চেয়ে অনেক বেশি শোনা গেছিল আর্তনাদ আর হাহাকার।
মোদের কোনো দ্যাশ নাই
লাখ লাখ মানুষ স্টেশনে এসে থাকতে শুরু করেছিলেন। প্ল্যাটফর্মে মাথায় ইট রেখে দিনের পর দিন শুতে হয়েছে উদ্বাস্তুদের।
জমির লড়াই
শহরের প্রান্তে হোগলা বন কেটে জমি দখল করতে বাধ্য হয়েছেন লাখ লাখ উদ্বাস্তু। হোগলা পাতা, খড় দিয়ে ছাউনি বানিয়ে থাকতে হয়েছে তাদের।
একটু ফ্যানের জন্য
একমুঠো ভাত, একটু ফ্যানের জন্য দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে হয়েছে সর্বহারা মানুষকে। প্রতিদিন বেঁচে থাকাই ছিল এক জীবন সংগ্রাম।
সরকারি ক্যাম্প
সরকারের তরফে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উদ্বাস্তুদের জন্য ক্যাম্প তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। দণ্ডকারণ্যের রুক্ষ জমিতে ধান ফলাতে হয়েছে বাঙালি কৃষিজীবীকে। আন্দামানের নোনা জমিতে ঘর বাঁধতে হয়েছে গঙ্গা-পদ্মায় বেড়ে ওঠা মানুষকে।
আশায় বুক বেঁধে
এসরাজের মায়া কাটাতে পারেননি এই নারী। আশা, নতুন দেশে গানটুকু নিশ্চয় গাওয়া যাবে। ৭৫ বছরেও সে লড়াই থামেনি। পাঞ্জাব এবং বাংলার মানুষ তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন তাদের নিজস্ব পরিচয়। রিফিউজি পরিচয়।
বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মাঝখানে
দেশ ছেড়ে চলে আসা অনেকেই ভেবেছিলেন, এসবই সাময়িক। সব আবার আগের মতো হয়ে যাবে। ৭৫ বছরের ইতিহাস কথা রাখেনি। সে বিশ্বাস ক্রমশ পঞ্চভূতে বিলীন হয়েছে।
তৃতীয় প্রজন্মের উদ্বাস্তু
সময় বদলেছে। মাঝে কেটে গেছে ৭৫ বছর। দেশ ছেড়ে আসা উদ্বাস্তুদের অনেকেই এখন প্রতিষ্ঠিত। তৃতীয় প্রজন্ম চলে এসেছে। কিন্তু এখনো থেকে গেছে তাদের উদ্বাস্তু পরিচয়। রিফিউজির সন্তান হিসেবেই ইতিহাস তাদের মনে রাখবে।