ফটো ফেস্টিভেল: গ্রাম আর শহরের মাঝে আফ্রিকা
জনবিস্ফোরণ, শহরের বিস্তার, ডিজিটাল বিপ্লব – আফ্রিকার এসব পরিবর্তন নাইজেরিয়ার লাগোস ফটো ফেস্টিভেল ২০১৩-র থিম৷ ফেস্টিভেলের ছবিগুলোতে আফ্রিকার মেগাসিটির এই পরিবর্তনই চোখে পড়বে৷
শহরের বিশৃঙ্খলা নিয়ে চিত্রকলা
জনবিস্ফোরণ, শহরের বিস্তার, ডিজিটাল বিপ্লব – আফ্রিকার এসব পরিবর্তন সেখানকার শিল্প সত্তাতেও প্রভাব ফেলেছে৷ এ বছরের লাগোস ফটো ফেস্টিভেলে আফ্রিকার মেগাসিটির এই পরিবর্তনই চোখে পড়বে৷ নাইজেরিয়ান ফটোগ্রাফার কেলেচি আমাদি-ওবোর অনুকরণে মিউজিসিয়ান কিজিয়া জোনস তাই এই ভঙ্গিতে দাঁড়িয়েছেন৷
শহরের বিস্তার, শিল্পীদের শক্তি
আফ্রিকার নগর পরিবর্তনের বিষয় নিয়ে ৫০ জন চিত্রগ্রাহক তাঁদের ছবিগুলো প্রদর্শনীতে তুলে ধরছেন৷ এই প্রদর্শনী চলবে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত৷ লাগোস ফটো ফেস্টিভেল নাইজেরিয়ার একমাত্র আন্তর্জাতিক স্থিরচিত্র প্রদর্শনী, যা বিশ্বের সব শিল্পীদের একসাথে আনার চেষ্টা করে৷
বস্তির চিত্রগ্রাহকরা
আফোসো সুলাইমানের জীবনে লাগোস ফটো ফেস্টিভেলই প্রথম প্রদর্শনী৷ তিনি মাকোকো থেকে এসেছেন, যেটা লাগোসের সবচেয়ে বড় বস্তি৷ তাঁর বরাবরই স্বপ্ন ছিল বড় ফটোগ্রাফার হওয়ার৷ তাঁর ভাই এ কাজে উৎসাহ দেন৷ ভাইয়ের কথা মেনেই সুলাইমানসহ ৩০ জন ফটোগ্রাফির একটি ওয়ার্কশপে যোগ দেন৷ পরে তিনিসহ মাত্র দু’জন ছয় মাসের সেই কোর্স সম্পন্ন করেন৷
সব সময়ই বাঁচার জন্য যুদ্ধ
সুলাইমানের ফটোগ্রাফির থিম হলো মোকোকো বস্তির মানুষদের দৈনন্দিন জীবন৷ একটি ছোট এলাকায় লাখো মানুষের বসবাস, বেঁচে থাকার জন্য যুদ্ধ – এ সবই তাঁর ছবিতে উঠে এসেছে বলে জানালেন তিনি৷ এ মানুষগুলো ছাড়া তাঁর ছবি প্রাণ পেত না বলেও মন্তব্য করেন সুলাইমান৷
প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্ক
সুলাইমান তাঁর ছবিতে যাঁদের তুলে ধরেছেন তাঁরা বেশিরভাগই তাঁর প্রতিবেশী৷ তিনি তাঁদের বুঝিয়েছেন, এখানে তাঁরা কিভাবে জীবনযাপন করেন, বাইরের মানুষের কাছে সেটা তুলে ধরাটা অত্যন্ত জরুরি৷ বেশিরভাগ মানুষই তাঁর ছবি থেকে সেটা বুঝতে পারবেন৷
শান্তির ছবি, যুদ্ধের নয়
তবে সুলাইমানের ছবির সঙ্গে তুলনা করলে একেবারেই ভিন্ন পাত্রিক উইলকের ছবিগুলো৷ ফরাসি এই চিত্রগ্রাহক ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে কয়েক মাস থেকে এই ছবিগুলো তুলেছেন৷ তাঁর মতে, বিশ্ব জানে কঙ্গোর যুদ্ধ-বিগ্রহের কথা৷ কিন্তু সেখানকার প্রত্যন্ত এলাকায় যে শান্তিপূর্ণ জীবনও আছে, সেটার ছবিই তুলে ধরেছেন তিনি৷
প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশ্বায়ন
উইলকের ছোটবেলাটা কেটেছে কঙ্গোতে৷ তাঁর বিখ্যাত সব ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে কিভাবে প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতেও বিশ্বায়ন পৌঁছে গেছে৷ যেমন প্লাস্টিক চেয়ার, আগে যা ছিল না৷ তাঁর মতে, ঐতিহ্যবাহী কাঠের চেয়ার অনেক মজবুত আর আরামদায়ক হলেও এখন তার ব্যবহার প্রায় হয়ই না৷
সেনেগালের বর্নিল শহুরে জীবন
ফটোগ্রাফার মোহাম্মাদ মোস্তাফা সও অবশ্য নিজের ছবিতে তাঁর জন্মভূমি সেনেগালের প্রাত্যহিক জীবন তুলে ধরেছেন৷ সও আসলে একজন ডিজাইনার এবং অবসর সময়ে ছবি তোলাটা তাঁর জন্য নিছকই একটা শখ৷
টিভি স্ক্রিনের মাধ্যমে জীবনের ছবি
মোহাম্মাদ মোস্তাফা সও পশ্চিমা মিডিয়াকে দায়ী করে বলেছেন, আফ্রিকার বাস্তবতা তারা সঠিকভাবে তুলে ধরে না৷ মৌরিতানিয়ার একটি মরুভূমিতে পুরোনো একটি টেলিভিশন সেট দেখেই তাঁর সিরিজ ফটোগ্রাফির কথা মাথায় আসে৷ তিনি জানান যে, একটি টেলিভিশনের মধ্যে থেকে শহুরে জীবনের ছোট ছোট ক্ষেত্রগুলো তুলে ধরেছেন তিনি৷