প্লাস্টিকের ব্যাগ কি শুধুই ব্যাগ?
বাজার করার জন্য একবার ব্যবহার করা যায়, এমন প্লাস্টিকের ব্যাগ হামেশাই দেখা যায় যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর৷ ‘ওয়ান-টাইম’ প্লাস্টিক ব্যাগের জায়গায় সুতি, চট বা কাগজের ব্যাগও হতে পারে৷ ছবিঘরে কিছু ব্যাগের নমুনা দেখুন!
সব সময় শুধু প্লাস্টিক নয়
সুপারমার্কেটগুলিতে ফল বা সবজি কেনার সময়, এই যেমন ধরুন কলা, আপেল বা গাজর কেনার সময়, হাতের কাছেই রাখা থাকে প্লাস্টিকের ব্যাগ৷ সেই ব্যাগে পছন্দের ফল বা সবজিগুলি ভরে ওজন করে নিয়ে যেতে হয় কাউন্টারে৷ এভাবেই মাথা পিছু বছরে প্রায় ৭১টি প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করেন জার্মানরা৷
দূরে থাকুন
সাধারণ প্লাস্টিকের ব্যাগগুলির শতকরা ১০০ ভাগই কৃত্রিম পলিথিনের, যা জীবাশ্মের অপরিশোধিত তেল থেকে তৈরি৷ এই ব্যাগগুলো মোটেই পরিবেশবান্ধব নয় এবং এগুলো পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে অন্তত ৪০০ থেকে ৫০০ বছর সময় লাগে৷ এ কারণেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিবেশ বিষয়ক কমিশন প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানায়৷
‘অর্গানিক’ যে সব সময় ভালো, তা নয়
জৈবিক উপায়ে ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়, এমন প্লাস্টিক ব্যাগও পাওয়া যায় আজকাল৷ তবে সেই সব প্লাস্টিকের ব্যাগ সাধারণত শতকরা ৭০ ভাগ অপরিশোধিত তেল এবং ৩০ ভাগ নবায়ণযোগ্য কাঁচামাল থেকে তৈরি৷ শুনতে ভালো লাগলেও, এ ধরণের প্লাস্টিকের ব্যাগ ‘রিসাইক্লিং’ করার ক্ষেত্রেও কিন্তু সীমাবদ্ধতা আছে৷
রিসাইক্লিং-এর ভাগ বেশি থাকাও যথেষ্ট নয়
একবার ব্যবহার করা যায়, এমন প্লাস্টিকের ব্যাগে রয়েছে শতকরা ৭০ ভাগ রিসাইক্লিং পলিথিন৷ এগুলি সাধারণ প্লাস্টিক ব্যাগের তুলনায় কিছুটা যে পরিবেশবান্ধব – তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ কিন্তু জার্মানিতে বেশিরভাগ প্লাস্টিক ব্যাগই আবর্জনায় ফেলে দেওয়া হয়, তাই উপায় থাকলেও রিসাইক্লিং করা হয় না বা যায় না৷
ভালোর চেয়ে মন্দই বেশি
অন্যদিকে কাগজের ব্যাগ যে সব সময়ই পরিবেশবান্ধব, অর্থাৎ কৃত্রিম ব্যাগের তুলনায় ভালো – তাও কিন্তু নয়৷ কারণ, এ সব ব্যাগ তৈরিতে অনেক বেশি সময় এবং ব্লিচিং করার জন্য শক্তিশালী রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়, যা পরবর্তীতে আবারো রাসায়নিক উপায়ে প্রক্রিয়াজাত করতে হয়৷ এতে কিছুটা হলেও দূষণ ঘটে৷
কাপড়ের ব্যাগের অন্য দিক
কাপড়ের ব্যাগ যদি সুতির হয়, তাহলে সেগুলি বেশ মজবুত হয় এবং পরিবেশ রক্ষাতেও ভূমিকা রাখে৷ কিন্তু এ ধরণের ব্যাগ তৈরির জন্য একদিকে যেমন বেশি মাত্রায় কাঁচামাল প্রয়োজন হয়, তেমনই প্রয়োজন হয় বেশি পরিমাণে জ্বালানি৷ বলা বাহুল্য, এর একটা প্রভাবও পড়ে পরিবেশের ওপর৷
আছে মজবুত প্লাস্টিকের ব্যাগও
কাপড়ের ব্যাগের তুলনায় কৃত্রিম বা পলিয়েস্টারের ব্যাগ কিন্তু কম মজবুত নয়৷ ‘ওয়ান টাইম ইউজ’ বা ‘ইউজ অ্যান্ড থ্রো’ – এমন ব্যাগ ছাড়াও বাজারে কয়েকবার ব্যবহারযোগ্য কৃত্রিম প্লাস্টিকের ব্যাগও পাওয়া যায়৷ এই যেমন ছবির ব্যাগটি৷ তবে এগুলো কতটা পরিবেশবান্ধব – সেটা বলা কঠিন৷
বিজয়ী হচ্ছে...
তাই সত্যিকার অর্থে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ হচ্ছে পলিয়েস্টারের তৈরি এই হাল্কা ব্যাগগুলি৷ এগুলির ওজন মাত্র ৩০ গ্রাম এবং ভাঁজ করলে এগুলো একেবারে হাতের মুঠোয় রাখা সম্ভব৷ এই ব্যাগ দেখতে ছোট এবং ওজনে কম হলেও প্রায় ১০ কেজি ওজনের জিনিস বহন করতে পারে৷