প্রেমের সম্পর্ক গড়ার অভিযোগে চাকরি হারালেন জার্মান সম্পাদক
১৯ অক্টোবর ২০২১বিল্ড পত্রিকার মালিক জার্মানির অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রকাশনা সংস্থা ‘আক্সেল স্প্রিঙ্গা' সোমবার এক বিবৃতিতে রাইশেল্টকে সরিয়ে দেয়ার খবর জানায়৷ বিবৃতিতে বলা হয়, রাইশেল্ট ‘‘স্পষ্টতই তার ব্যক্তিগত ও কর্মক্ষেত্রের জীবন আলাদা রাখেননি এবং এই বিষয়ে বোর্ডকে সত্যটা জানাননি৷''
‘সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমের তদন্তে' এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আক্সেল স্প্রিঙ্গা৷
রোববার নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রবন্ধের পরদিন রাইশেল্টকে সরানো হলো৷ রাইশেল্টকে নিয়ে আক্সেল স্প্রিঙ্গার করা তদন্তের ভিত্তিতে প্রবন্ধটি লেখা হয়৷
রাইশেল্ট কীভাবে তার সঙ্গে সখ্য থাকা ইন্টার্নদের পদোন্নতি দিয়েছেন এবং একসময় তাদের সরিয়ে দিয়েছেন, সেসব নিয়ে তদন্ত করেছিল আক্সেল স্প্রিঙ্গা৷ তদন্ত চলাকালীন রাইশেল্টকে দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে সরিয়ে রাখা হয়েছিল৷ তদন্ত শেষ হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে প্রধান সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার মতো অভিযাগ পাওয়া না যাওয়ায় আবারও রাইশেল্টকে দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল৷ ফলে নতুন কোনো অভিযোগের কারণে তাকে সরানো হলো কিনা তা স্পষ্ট করেনি আক্সেল স্প্রিঙ্গা৷
এর আগে জার্মানির প্রভাবশালী ম্যাগাজিন ‘ডেয়ার স্পিগেল'-এও রাইশেল্টকে নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল৷ সেখানে রাইশেল্টের বিরুদ্ধে নারী ট্রেইনি ও ইন্টার্ন নিয়োগ, দ্রুত পদোন্নতি প্রদান ও এরপর দ্রুত চাকরিচ্যুতির অভিযোগ আনা হয়েছিল৷
ওই প্রতিবেদনের জন্য স্পিগেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ৪১ বছর বয়সি রাইশেল্ট৷ ২০১৮ সালে তিনি বিল্ডের প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন৷
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রবন্ধে আক্সেল স্প্রিঙ্গার বিরুদ্ধে রাইশেল্টকে নিয়ে করা তাদের তদন্তের ফলাফল জার্মান গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে না দেয়ারও অভিযোগ আনা হয়েছে৷ এতে বলা হয়, জার্মানির আরেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ইপেন মিডিয়া গ্রুপ রাইশেল্টের বিরুদ্ধে তদন্ত করেছিল৷ কিন্তু সেই রিপোর্ট প্রকাশ করতে দেয়া হয়নি৷
কিন্তু ইপেন মিডিয়া জানিয়েছে, তারা কোনো চাপের মুখে রিপোর্ট প্রকাশ থেকে বিরত থাকেনি৷ বরং তাদের মনে হয়েছে যে, রিপোর্ট প্রকাশ হলে মনে হতে পারে যে ‘আমরা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এমন করেছি'৷
আইনি পদক্ষেপ
এদিকে, রাইশেল্টকে সরানোর পাশাপাশি সোমবার ‘তৃতীয় পক্ষের' বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপেরও ঘোষণা দিয়েছে আক্সেল স্প্রিঙ্গা৷ তাদের বিরুদ্ধে কোম্পানির ক্ষতিসাধন ও রাইশেল্টকে সরানোর লক্ষ্যে গোপন ব্যবসায়িক তথ্য ও ব্যক্তিগত যোগাযোগের তথ্য প্রকাশের অভিযোগ আনা হয়েছে৷
রাইশেল্টের পদে আক্সেল স্প্রিঙ্গার মালিকানায় থাকা আরেক সাপ্তাহিক ব্রডশিট ‘ভেল্ট আম জনটাগ'-এর প্রধান সম্পাদক ইয়োহানেস বয়েকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে৷
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘পলিটিকো' কিনে নেয় আক্সেল স্প্রিঙ্গা৷
জেডএইচ/কেএম (রয়টার্স, এপি, এএফপি)