প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে আওয়ামী লীগ নেতার ঘুসি
২৫ মার্চ ২০১৯অধ্যাপক রহমান কমলগঞ্জ উপজেলার দুইবারের চেয়ারম্যান৷ স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে নিকটতম প্রার্থীর চেয়ে ৩০ হাজার ভোট বেশি পেয়ে তৃতীয়বারের মতো বিজয়ী হয়েছেন তিনি৷
এর আগে জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হন তিনি৷
নির্বাচনের দিন ভোট চলাকালে একটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে তাঁর মারধর ও হেনস্তা করার ভিডিও ডয়চে ভেলের কাছে আছে৷ ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন মারধরের শিকার হওয়া নির্বাচনি কর্মকর্তাও৷ তবে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বলছেন, তিনি মারধর করেননি, শুধু ফোন কেড়ে নিতে চেয়েছেন৷
কী আছে ভিডিওতে
ঘটনাটি কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের৷ মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা যায়, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. ইফজালুর রহমান চৌধুরী চেয়ারে বসে কাউকে মোবাইলে ফোন দেয়ার চেষ্টা করছেন৷ তাঁর সামনে তখন উত্তেজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যাপক রফিকুর রহমান৷ তাঁকে ফোনটি ছাড়ার জন্য বারবার নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি, সেই সঙ্গে জোর করে ফোন কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন৷ এক পর্যায়ে ইফজালুর রহমান চৌধুরীর মুখে সজোরে ঘুসি বসিয়ে দেন রফিকুর রহমান৷ শেষ পর্যন্ত ফোনটিও কেড়ে নেন তিনি৷ ইফজালুর রহমান চৌধুরীকে এসময় তাঁর চেয়ারে অসহায়ভাবে বসে থাকতে দেখা যায়৷
‘‘কেন ওনার মাথা গরম হয়েছে বুঝতে পারিনি''
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. ইফজালুর রহমান চৌধুরী৷ তবে তিনি এটিকে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে উল্লেখ করেছেন৷ এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি৷ ঘটনাটি সাড়ে এগারোটা থেকে পৌনে বারোটার মধ্যে ঘটেছে বলে জানান তিনি৷ ডয়চে ভেলেকে ইফজালুর রহমান বলেন, ‘‘সঠিক বুঝতে পারিনি কী নিয়ে ওনার মাথা গরম হয়েছে৷'' বিষয়টি পরে কাউকে জানাননি দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমাদের একটা মিউচ্যুয়াল হয়েছে৷ ভোটের সময় প্রার্থীদের মাথাতো একটু গরম থাকেই৷ এটা এক্সিডেন্টালি হয়েছে৷'' চাকুরির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টিকে আর আমি বাড়াতে চাচ্ছি না৷'' ইফজালুর রহমান চৌধুরী ফুলবাড়ি চা বাগানের সহ-ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন৷
‘‘কাড়াকাড়ি হয়েছে, মারধর করিনি''
নির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান বলছেন, তিনি প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে মারধর করেননি৷ সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘উনি (ইফজালুর রহমান চৌধুরী) দরজা বন্ধ করে রুমের ভিতরে বসেছিলেন৷ সাংবাদিকরা পুলিশ দিয়ে তারপর খুলছে৷ জিজ্ঞাসা করেছে আপনার এখানে ভোট কতটা কাস্ট হয়েছে৷ ভোট কাস্ট হয়েছে ৩৫২টা, কিন্তু উনি বলেছেন ৮৫২টা৷'' ইফজালুর রহমান চৌধুরীর কক্ষে যাওয়ার পর তিনি বিভিন্ন দিকে ফোন দিচ্ছিলেন বলে জানান রফিকুর রহমান৷ বলেন, ‘‘ওনারে বললাম ফোন বন্ধ করেন৷ উনি বন্ধ করে না৷ এই ওনার সাথে ফোন নিয়ে কাড়াকাড়ি হইছে, উনি ফোন দেয় না৷'' কিন্তু মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন রফিকুর রহমান৷ দাবি করেন, ‘‘মোবাইল কাড়াকাড়ি হইছে মারধর হয় নাই৷''
রফিকুর রহমান দাবি করেন, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ভোট কারচুপি করছিলেন৷ বিষয়টি অভিযোগ না করে কেন তার উপর চড়াও হলেন এ প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘যখন ফোন দেয়, তখন মাথা টাথা গরম তো, উত্তেজনার ব্যাপারতো৷ তখনই কাড়াকাড়ি হয়েছে এই আরকি?''