1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ে কসরৎ দেখান স্টেফানি

১৫ জুলাই ২০২১

সার্কাসের কলাকুশলীদের অ্যাক্রোব্যাটিক্স বা শারীরিক কসরৎ দর্শকদের মুগ্ধ করে৷ কিন্তু নিছক রোমাঞ্চ ও আনন্দের জন্য প্রবল ঝুঁকি নিয়ে প্রকৃতির কোলে এমন শ্বাসরুদ্ধকর কাণ্ডকারখানা চালিয়ে যাচ্ছেন অস্ট্রিয়ার এক নারী৷

https://p.dw.com/p/3wVE9
স্টেফানি মিলিঙার
স্টেফানি মিলিঙারছবি: DW

পাহাড়ের চূড়ায় অ্যাক্রোব্যাটিক্স? অস্ট্রিয়ার শিল্পী স্টেফানি মিলিঙার যতটা সম্ভব খাড়া গহ্বরে নেমে যেতে ভালোবাসেন৷ প্রকৃতির মঞ্চে তিনি নানা শারীরিক কসরৎ করতে পারেন৷ সেটা কি বুদ্ধিমত্তার পরিচয়, নাকি জীবনে অবসাদের কারণে তিনি এমন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন? স্টেফানি বলেন, ‘‘গোটা বিশ্বে হাতে গোনা কিছু লোক আছেন, যারা আমার এই অনুভূতি বুঝতে সক্ষম৷ আমি নিজেকে ‘ফ্রি সোলো আর্টিস্ট ফর লাইফ’ বলি৷ অর্থাৎ, উচ্চতা আমাকে আনন্দ দেয়৷’’

অস্ট্রিয়ায় ‘ড্রাগনের প্রাচীর’ নামের পাহাড় বেয়ে ১,০৬০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছানো যায়৷ সেখান থেকে মুন লেক নামের হ্রদের সুন্দর দৃশ্য চোখে পড়ে৷ সেখানেই শুটিং চলছে৷ অস্ট্রিয়ার উত্তরে লাইমস্টোন্স আল্পস পর্বতে ওঠার প্রচেষ্টা ছোটখাটো অ্যাডভেঞ্চারের মতো৷

পাহাড়ে ওঠার সময়েও স্টেফানি ঝুঁকি নিয়ে কিছু কসরত করার লোভ সামলাতে পারেন নি৷ স্টেফানি মনে করেন, ‘‘এই জায়গাগুলি যেন আমাকেই খুঁজে নেয়৷ বেশিরভাগ সময়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই সে সব জায়গায় পৌঁছে যাই৷ আমাদের কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকে না৷ শহরের মধ্য দিয়ে হাঁটার সময়েও আমি উপর দিকে তাকিয়ে কিছু করার কথা না ভেবে থাকতে পারি না৷’’

আজ স্টেফানি একটা ঝুলন্ত সেতুর উপর শ্বাসরুদ্ধকর কসরতের চেষ্টা করতে চান৷ তবে সবার আগে তাঁকে সেখানকার পরিস্থিতি ভালো করে বুঝতে হবে৷ এখনো সেখানে বেশ ঠান্ডা এবং ঝোড়ো বাতাস বইছে৷ ফলে একটু ওয়ার্ম আপ করে নিতে হবে৷ স্টেফানি মিলিঙার বলেন, শীত আমার সবচেয়ে বড় শত্রু৷ কারণ, আমার শরীর শীতল হয়ে গেলে সবকিছু অনেক কঠিন হয়ে পড়ে৷ দেখা যাক কী হয়৷ একবার ভালো করে বুঝে নেই৷ হয়তো নীচে ঝুলে পড়তে পারবো৷’’

প্রকৃতির কোলে মিলিঙারের শারীরিক কসরৎ

এখানে খাড়া পাহাড় ২০০ মিটার গভীর৷ অতএব সাবধানের মার নেই৷ স্টেফানির বন্ধু, ম্যানেজার ও ফটোগ্রাফার ফিলিপ রাইসিঙারকেও নিজের স্নায়ু শক্ত রাখতে হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘সে সত্যি পারে বটে৷ কিন্তু সেতুটির কাঁপুনি দেখলে ভয় লাগে বৈকি৷ ক্যামেরার লেন্সের মধ্য দিয়ে দেখাই ভালো, বেশি বাস্তব মনে হবে না৷ তাড়াতাড়ি শেষ হলে বাঁচি৷’’

ঝুঁকি নিয়ে সেতুর উপর শীর্ষাসনও করা চাই৷ এমন কঠিন, হাড়ভাঙা কসরত আয়ত্ত করতে স্টেফানি দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা অনুশীলন করে চলেছেন৷

স্টান্ট দেখানো শেষ হলে ২৮ বছর বয়সি এই নারী ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন৷ ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের মতো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে তিনি এমন কসরৎ দেখান৷ বাসায় তিনি সাপুড়ে সেজে মজার অ্যাক্রোব্যাটিক্স ভিডিও তৈরি করেন৷

ঘনঘন বিপদের ঝুঁকি নিয়ে তিনি যা করেন, অনেকেই তা পছন্দ করেন না৷ এমনই কিছু উদাহরণের উল্লেখ করে স্টেফানি বলেন, ‘‘মানুষের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাই৷ কেউ এমন প্রচেষ্টাকে বোকা কাজ মনে করে লেখেন ক্লিক ও লাইকের চক্করে তুমি প্রাণের ঝুঁকি নিচ্ছো৷ কিন্তু তারা জানে না যে আমি নিজের আনন্দের জন্যই এ সব করি৷ কারণ এটাই আমার সবচেয়ে বড় আবেগের জায়গা৷’’

ড্র্যাগনের গর্ত বলে পরিচিত পর্যটকদের আকর্ষণকেও প্রেক্ষাপট হিসেবে বেছে নিয়েছেন স্টেফানি৷ নিজের ক্ষমতা দেখাতে আইডিয়ার কোনো শেষ নেই৷ নতুন করে লাফ মারার সময় যেন জগতের কোনো কিছুকেই ভয় পান না স্টেফানি৷

ইয়ানা ওরটেল/এসবি